গুগল, মেটার বিরুদ্ধে নিউইয়র্ক টাইমসের সাংবাদিকের মামলা
মেধাস্বত্ব চুরি করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রশিক্ষণের অভিযোগে গুগল, ওপেনএআই, মেটা, এক্সএআই, অ্যানথ্রোপিক ও পারপ্লেক্সিটির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা অনুসন্ধানী সাংবাদিক ও লেখক জন ক্যারিরু। সোমবার ক্যালিফোর্নিয়ার ফেডারেল আদালতে এই মামলাটি দায়ের করা হয়।
মামলায় জন ক্যারিরুসহ আরও পাঁচজন লেখক অভিযোগ করেছেন যে, তাদের কপিরাইট করা বইগুলো কোনো অনুমতি ছাড়াই ‘পাইরেটেড’ উৎস থেকে সংগ্রহ করেছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো। এসব বই ব্যবহার করে তারা তাদের লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল (এলএলএম) প্রশিক্ষণ দিয়েছে, যা পরবর্তীতে জনপ্রিয় সব চ্যাটবট পরিচালনায় ব্যবহৃত হচ্ছে।
এই মামলাটি কয়েকটি কারণে আন্তর্জাতিক মহলে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে।
ইলনের এক্সএআই প্রথমবার অভিযুক্ত: এই প্রথম ইলন মাস্কের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রতিষ্ঠান ‘এক্সএআই’ কপিরাইট সংক্রান্ত কোনো মামলায় আসামি হলো।
সাধারণত এ ধরনের ক্ষেত্রে ‘ক্লাস অ্যাকশন’ বা গণ-মামলা করা হয়, যেখানে কোম্পানিগুলো বড় অংকের টাকার বিনিময়ে সবার সঙ্গে একবারে সমঝোতা করে নেয়। কিন্তু ক্যারিরু ও অন্য লেখকরা ব্যক্তিগতভাবে মামলা করেছেন যাতে কোম্পানিগুলো অল্প ক্ষতিপূরণ দিয়ে পার না পেতে পারে।
এর আগে আগস্টে অ্যানথ্রোপিক ১৫০ কোটি ডলারের একটি সমঝোতা করলেও, ক্যারিরু একে ‘যথেষ্ট নয়’ বলে দাবি করেছেন। তাঁর মতে, লেখকদের বই চুরি করা ছিল এই কোম্পানিগুলোর ‘মূল পাপ’।
মামলাটি লড়ছে ‘ফ্রিডম্যান নরম্যান ফ্রিডল্যান্ড’ নামক একটি ল ফার্ম, যার নেতৃত্বে রয়েছেন আইনজীবী কাইল রোচে। মজার ব্যাপার হলো, ২০২৩ সালে নিউ ইয়র্ক টাইমসে এই কাইল রোচেকে নিয়েই একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লিখেছিলেন জন ক্যারিরু। তবে বর্তমান মামলার বিষয়ে রোচে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
মামলা দায়েরের পর গুগল, মেটা বা ওপেনএআই-এর মতো কোনো প্রতিষ্ঠানই এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই মামলার রায় এআই প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ গতিপথ এবং লেখকদের সৃজনশীল শ্রমের অধিকার রক্ষায় বিশ্বজুড়ে এক বড় মাইলফলক হয়ে থাকবে।