ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা-ভূমিধসে প্রাণহানি বেড়ে ১৭৪
প্রচণ্ড ঝড় ও মৌসুমি বৃষ্টির প্রভাবে পুরো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। এর প্রভাবে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপে বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৭৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এখনো বহু মানুষ নিখোঁজ, হাজারো পরিবার গৃহহীন এবং উদ্ধারকাজ কঠিন হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা (বিএনপিবি)-এর প্রধান সুআরিয়ানতো জানান, উত্তর সুমাত্রা প্রদেশে এখন পর্যন্ত ১১৬ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে এবং ৪২ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছে। এছাড়াও আচেহ প্রদেশে ৩৫ জন এবং পশ্চিম সুমাত্রায় ২৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া মোট ৭৯ জন এখনো নিখোঁজ এবং হাজারো মানুষ বাস্তুচ্যুত।
সুমাত্রার পদাং পারিয়ামান অঞ্চলে পানির উচ্চতা ছিল এক মিটারেরও বেশি। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) পর্যন্ত উদ্ধারকারী দল সেখানে পৌঁছাতেও পারেনি।
উত্তর সুমাত্রার বাটাং তোরু শহরে অজ্ঞাতনামা সাতজনের মৃতদেহ গণকবরে দাফন করা হয়। ট্রাকে করে এনে কালো প্লাস্টিকে মোড়ানো পচে যাওয়া লাশগুলো মাটিতে নামানো হলে আশপাশের মানুষ নাকে রুমাল ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন।
দুর্গত অনেক এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। রাস্তা থেকে ভূমিধসের মাটির ধস সরানোর কাজ চলছে। সরকারি কর্মকর্তারা জানান, আকাশপথে ত্রাণ ও উদ্ধারকারী দল পাঠানো অব্যাহত রয়েছে।
অন্যদিকে, পশ্চিম সুমাত্রায় ৫৩ বছর বয়সি মিসনিয়াতি জানান, ভোরে নামাজ পড়ে ফেরার সময় রাস্তায় পানি দেখে তিনি দ্রুত বাড়ির দিকে ছুটে যান। বাড়িতে গিয়ে দেখেন পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে চলমান বন্যা, ঝড় ও ভূমিধস জলবায়ুজনিত দুর্যোগের ভয়াবহতাকে আবারও স্পষ্ট করেছে। ইন্দোনেশিয়া থেকে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া থেকে শ্রীলঙ্কা—প্রতিটি দেশই মানবিক সংকট মোকাবিলায় লড়াই করছে। নিখোঁজদের সন্ধান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পুনর্বাসন এবং জরুরি সহায়তা এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
