ক্যালিফোর্নিয়ার পাহাড়ে আবারও 'স্বর্ণ জ্বর'

Bangla Post Desk
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত:২৭ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৫৭ পিএম
ক্যালিফোর্নিয়ার পাহাড়ে আবারও 'স্বর্ণ জ্বর'
ছবি: সংগৃহীত

স্বর্ণের রেকর্ড-ভাঙা মূল্যবৃদ্ধি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় পুরোনো ‘গোল্ড রাশ’-এর স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে। সিয়েরা নেভাডা পর্বতমালার পাদদেশে পর্যটক, অবসরপ্রাপ্ত মানুষ এবং ভাগ্য অন্বেষণকারীদের এখন উপচে পড়া ভিড়। প্রতি আউন্স সোনার দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছানোয় অনেকেই নতুন করে পাহাড়ে খনন কাজে নামছেন।

বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম প্রায় ৪ হাজার ৩৮০ ডলার। এই দাম গত এক বছরের তুলনায় প্রায় ৫৫ শতাংশ বেশি। বাজার বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, আগামী বছর সোনার দাম প্রতি আউন্সে পাঁচ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। এই উচ্চমূল্যের কারণে, ব্যক্তিগতভাবে স্বর্ণ খুঁজে বের করার উন্মাদনা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার ‘টেমেকুলা ভ্যালি প্রসপেক্টরস ক্লাব’-এর সভাপতি মার্টি পলসেন জানিয়েছেন, তাদের খনন ক্লাবগুলোর প্রতিটি বৈঠকেই নতুন সদস্যদের আগমন ঘটছে, যা এই আগ্রহের তীব্রতা প্রমাণ করে।

এই উন্মাদনা বৃদ্ধির পেছনে শুধু উচ্চমূল্যই নয়, কিছু প্রাকৃতিক কারণও কাজ করেছে। গত কয়েক বছরের তীব্র শীতকালীন ঝড়গুলো পর্বতের গভীরে জমে থাকা স্বর্ণের স্তরগুলোকে আলগা করে দিয়েছে। বসন্তে বরফ গলে যাওয়া ও বৃষ্টির পানির স্রোতে সেই স্বর্ণখণ্ডগুলো নদীর খাত ও নালা দিয়ে গড়িয়ে এসেছে। ফলে ভাগ্যবান অনুসন্ধানের মাধ্যমে এখন তুলনামূলকভাবে সহজেই স্বর্ণ সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে।

জেমসটাউনে, দ্বিতীয় প্রজন্মের স্বর্ণ অনুসন্ধানকারী নিক প্রেবালিক নতুনদের স্বর্ণের কণা খুঁজে বের করার সহজ কৌশল শেখাচ্ছেন। তার দেখানো প্যানিং পদ্ধতির মাধ্যমে ধোয়ার পর প্রায় ২০ ডলার মূল্যের এক টুকরো স্বর্ণ খুঁজে পাওয়া সম্ভব হচ্ছে।

এই উন্মাদনা আরও উস্কে দিয়েছে ডিসকভারি চ্যানেলের জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘গোল্ড রাশ', যা এখন ভরা মৌসুমে চলছে। এই আগ্রহের কারণে ক্যালিফোর্নিয়ার পুরোনো খনি-শহরগুলো আবার প্রাণ ফিরে পেয়েছে।

কলম্বিয়ার মতো ঐতিহাসিক শহরগুলোতে এখন বিভিন্ন ধরণের নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেখা যাচ্ছে, যেমন— ‘মাদার লোড সেপটিক সার্ভিসেস’, ‘মাদার লোড ড্যান্স একাডেমি’, এমনকি ‘চার্চ অব দ্য ফোর্টিনাইনার্স—হোয়্যার গড ইজ দ্য গোল্ড’ এর মতো প্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠেছে।

যদিও স্বর্ণ পাওয়া সৌভাগ্যের বিষয়, তবে অনুসন্ধানকারীরা সতর্ক করে বলছেন যে এতে ঝুঁকিও রয়েছে। নিক প্রেবালিক, যিনি একদিনে ১২৭ আউন্স স্বর্ণ খুঁজে পাওয়ার অভিজ্ঞতা রাখেন, তিনি মন্তব্য করেছেন, ‘সোনার চেয়েও লোভ (উন্মাদনা) নিশ্চিত লাভজনক ব্যবসা।’ অর্থাৎ, ব্যক্তিগতভাবে স্বর্ণ খুঁজে পাওয়ার চেয়ে বরং খননের সরঞ্জাম বিক্রি বা এই উন্মাদনা ঘিরে তৈরি হওয়া অন্যান্য ব্যবসায় এখন বেশি লাভ দেখা যাচ্ছে।