‘আগে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, বাকি সব পরে’
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা ওসামা হামদান জোর দিয়ে বলেছেন, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আগে প্রতিরোধের অস্ত্র সংরক্ষণের অধিকার নিয়ে আলোচনা একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক।
তিনি বলেন, সংগঠনের রাজনৈতিক লক্ষ্য হচ্ছে নিজেদের ভূখণ্ড মুক্ত করা, বায়তুল মুকাদ্দাসকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা এবং শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তনের অধিকার নিশ্চিত করা, বাকি সব পরে।
ফার্স নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা ওসামা হামদান এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন- স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের আগে সংগঠনের অস্ত্র নিয়ে কোনো সমঝোতা সম্ভব নয়।
তিনি গাজা যুদ্ধবিরতিকে ইসরাইলি আগ্রাসনের সমাপ্তির পাশাপাশি ফিলিস্তিনের রাজনৈতিক ও জাতীয় পদক্ষেপের সূচনা হিসেবেও দেখছেন।
হামদানের মতে, এই চুক্তি পূর্ববর্তী চুক্তিগুলোর থেকে ভিন্ন। কারণ এতে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে এবং এতে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারেও কিছু ইঙ্গিত রয়েছে।
হামাসের এই নেতা আরও জানান, প্রাথমিক আলোচনা কেন্দ্রীভূত ছিল যুদ্ধবিরতি, বন্দি বিনিময়, মানবিক সাহায্য প্রবেশ এবং গাজা থেকে দখলদার বাহিনীর সৈন্য প্রত্যাহারের ওপর।
এছাড়া, শারম আল-শেখে হামাসের প্রতিনিধিদল শত্রুর আগ্রাসন বন্ধের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে এবং বৃহত্তর রাজনৈতিক আলোচনাকে ফিলিস্তিনিদের জাতীয় ঐক্যের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে উল্লেখ করেছে।
ওসামা হামদান বলেন, এই চুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হামাস নেতৃত্বের মধ্যে ব্যাপক পর্যালোচনা ও আপেক্ষিক ঐকমত্যের মাধ্যমে গৃহীত হয়েছে। যুদ্ধ-পরবর্তী গাজা ব্যবস্থাপনা নিয়েও একটি অন্তর্বর্তী কমিটি গঠনের প্রাথমিক সমঝোতা হয়েছে। যদিও এর বিস্তারিত এখনো ফিলিস্তিনি দলগুলোর মধ্যে আলোচনাধীন।
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠনটির এই নেতা আবারও জোর দিয়ে বলেন, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠিত হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রতিরোধের অধিকার একটি বৈধ ও অবিচল অধিকার। যা থেকে সরে আসা সম্ভব নয়।
হামদানের মতে, স্বাধীনতাকামী সংগঠনের অস্ত্র নিয়ে কোনো আলোচনা কেবল স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরই হতে পারে। কারণ অতীত অভিজ্ঞতা প্রমাণ করেছে, অস্ত্র ত্যাগ বা জাতীয় অধিকারের দাবি থেকে পিছু হটার সব প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে।
ইহুদিবাদী ইসরাইল তাদের যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হওয়ার পর গত অক্টোবরে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষর করে। তবে এই চুক্তির পরও দখলদার বাহিনী গাজার জনগণের বিরুদ্ধে সহিংসতা অব্যাহত রেখেছে।
গাজার স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে অব্যাহত ইসরাইলি হামলায় এ পর্যন্ত ৬৯ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
