‘ফ্যাসিস্টরা দেশজুড়ে ককটেল-আগুন দিয়ে নাশকতা চালাচ্ছে’
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, দিল্লির ষড়যন্ত্রে আগামী ১৩ তারিখ লকডাউনের নামে আওয়ামী লীগ নতুন নাশকতার পরিকল্পনা করছে।
তার মতে, এই নভেম্বরে যখন কিছু অপরাধীর রায়ের সম্ভাবনা রয়েছে, ঠিক তখনই ফ্যাসিস্টরা দেশজুড়ে ককটেল, গাড়িতে আগুন দিয়ে নাশকতা চালাচ্ছে।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) বিকালে পাঁচ দফা দাবিতে সমমনা ৮টি রাজনৈতিক দলের সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
গোলাম পরওয়ার বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর ঐতিহাসিক পল্টন মোড়ের এ বিশাল মহাসমাবেশ আগামী দিনের রাজনীতির জন্য একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য জাতি আজ অপেক্ষারত।
তিনি বলেন, সরকার গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রায় ৯ মাস চেষ্টা করে সাংবিধানিক, রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও বিচার বিভাগীয় নানা সংস্কারে প্রায় একমত হয়েছিলেন। কিন্তু ২৬ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের ঘোষণার পর থেকে বিভিন্ন মহল থেকে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।
জামায়াত সেক্রেটারি বলেন, যারা দাবি করছেন একদিনে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন হবে– আমার প্রশ্ন, কীভাবে হবে? বাংলাদেশের সব সংবিধান বিশেষজ্ঞ একমত, জুলাই জাতীয় সনদে ৪৮টি বিষয়ে সংবিধানের অনেক সংস্কার হয়েছে- যেমন দলের প্রধান ও সরকারের প্রধান এক থাকবে না, সাংবিধানিক পদগুলোতে পৃথক নিয়োগ কর্তৃপক্ষ হবে, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট প্রভৃতিসহ যা যা সংশোধন হয়েছে– গণভোট যদি আইনি ভিত্তি না হয়, তাহলে কীসের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন হবে?
তিনি বলেন, এ সরকারকে হাইকোর্টের আর্টিকেল ১০৬-এর মধ্য দিয়ে রেফারেন্স সহকারে সরকারের বৈধতার কথা অনেকে বলেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের সংবিধান বিশেষজ্ঞরাও ১০৬ সম্পর্কে আইনের বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন। ফলে একমাত্র গণভোটের মধ্য দিয়েই জাতির আকাঙ্ক্ষা পূরণের যত সংস্কার হয়েছে, তার আইনি ভিত্তি দেওয়া সম্ভব। তা না হলে জাতীয় নির্বাচনের বৈধতা ও এই সংস্কার কখনো পূরণ হবে না।
মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে গোলাম পরওয়ার বলেন, আমাদের পাঁচ দফায় মানবতাবিরোধী অপরাধী খুনিদের বিচারের দাবি করেছিলাম। আমরা ধন্যবাদ জানাচ্ছি, ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে যাচ্ছে। যখন এই নভেম্বরে কিছু অপরাধীর রায়ের সম্ভাবনা, তখন ফ্যাসিস্টরা বাংলাদেশজুড়ে ককটেল, গাড়িতে আগুন দিয়ে নাশকতার ষড়যন্ত্র করছে।
সরকার ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমরা জানতে পারছি, ঢাকার হোটেলে হোটেলে সন্ত্রাসীরা অবস্থান নিয়েছে। আপনারা অভিযান চালিয়ে ফ্যাসিস্টদের গ্রেফতার করুন এবং অবিলম্বে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি তৈরি করুন। তারপর ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করুন। জাতি সরকারকে সহযোগিতা করবে।
ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ রেজাউল করিমের (পীরসাহেব চরমোনাই) সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
