বেনজিরের ৭৯২ ধরণের অবৈধ সম্পদের ঠিকানা প্রধান উপদেষ্টার তহবিল
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী ও সন্তানদের নামে রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত চারটি ফ্ল্যাট থেকে জব্দকৃত মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে জমা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আদালতের আদেশের প্রেক্ষিতে এসব সৌখিন ও ব্যবহার্য সামগ্রী সরকারি ব্যবস্থাপনায় নেওয়া হয়েছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, হস্তান্তরিত সামগ্রীর তালিকায় রয়েছে ৭৯২ ধরনের মালামাল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ১৯টি অত্যাধুনিক ফ্রিজ, প্রায় ১০০ টন সমপরিমাণের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি), দামী আসবাবপত্র ও আধুনিক ইলেকট্রনিক গ্যাজেট, বিপুল পরিমাণ শার্ট-প্যান্ট, জুতা এবং ব্যক্তিগত ব্যবহার্য সামগ্রী, রান্নাঘরের তৈজসপত্র ও অন্যান্য গৃহস্থালি মালামাল।
দুদক জানিয়েছে, জব্দকৃত মালামালের কিছু নমুনা সংরক্ষণ করে অবশিষ্ট ব্যবহৃত ও অব্যবহৃত সকল পণ্য আদালতের নির্দেশানুযায়ী ত্রাণভাণ্ডারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর চারটি মামলা দায়ের করে দুদক। এসব মামলায় তাদের বিরুদ্ধে ৭৪ কোটি ১৩ লাখ টাকারও বেশি মূল্যের অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়।
অনুসন্ধানে দুদক বেনজীর পরিবারের নামে ৬৯৭ বিঘা জমি, ঢাকায় ১২টি ফ্ল্যাট, ১৯টি কোম্পানির শেয়ার, ৩৩টি ব্যাংক হিসাব ও ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র খুঁজে পায়। পরবর্তীতে আদালতের রায়ে এসব স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোক ও অবরুদ্ধ করা হয়। চলতি বছরের মে মাসে আদালত গুলশানের ৪টি ফ্ল্যাট ও ১১৯টি জমির দলিল জব্দের চূড়ান্ত আদেশ দিয়েছিলেন।
২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা বেনজীর আহমেদ এর আগে ডিএমপি কমিশনার ও র্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন। ২০২১ সালে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় তার নাম আসায় দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি বিরোধী অভিযান আরও জোরদার হয়।