1. হোম
  2. আন্তর্জাতিক

সৌদি আরব থেকে ৫৬ হাজার পাকিস্তানি ভিক্ষুক বহিষ্কার

Bangla Post Desk
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৪৯ পিএম
সৌদি আরব থেকে ৫৬ হাজার পাকিস্তানি ভিক্ষুক বহিষ্কার
ছবি: সংগৃহীত

সংগঠিত ভিক্ষাবৃত্তি ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়ানোর অভিযোগে ৫৬ হাজার পাকিস্তানি ভিক্ষুককে (নাগরিক) বহিষ্কার করেছে সৌদি আরব। একই সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) অধিকাংশ পাকিস্তানি নাগরিকের জন্য ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।

এসব ঘটনায় পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করছেন দেশটির কর্তৃপক্ষ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি আরব অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যাপকভাবে পাকিস্তানিদের ফেরত পাঠিয়েছে।

ইউএই কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেশটিতে প্রবেশের পর কিছু পাকিস্তানি নাগরিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছেন—এমন উদ্বেগ থেকেই ভিসা কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।

পাকিস্তানের ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এফআইএ)-এর তথ্য অনুযায়ী, সংগঠিত ভিক্ষাবৃত্তির চক্র ভেঙে ফেলা ও অবৈধ অভিবাসন ঠেকানোর অংশ হিসেবে ২০২৫ সালে বিমানবন্দরগুলোতে ৬৬,১৫৪ যাত্রীকে অফলোড করা হয়েছে।

এসব নেটওয়ার্ক পাকিস্তানের সুনাম মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন করছে উল্লেখ করে এফআইএ মহাপরিচালক রিফাত মুখতার জানান, সমস্যা শুধু উপসাগরীয় অঞ্চলে সীমাবদ্ধ নয়; আফ্রিকা ও ইউরোপগামী ভ্রমণেও অনুরূপ ঘটনা ধরা পড়েছে। পাশাপাশি কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডে পর্যটন ভিসার অপব্যবহারও শনাক্ত হয়েছে।

মুখতারের ভাষ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে সৌদি আরব ২৪ হাজার, দুবাই প্রায় ৬ হাজার এবং আজারবাইজান আনুমানিক ২,৫০০ পাকিস্তানি ভিক্ষুককে বহিষ্কার করেছে।

এ বিষয়টি আগেই সৌদি কর্তৃপক্ষের কড়া নজরে আসে। ২০২৪ সালে রিয়াদ পাকিস্তানকে আনুষ্ঠানিকভাবে সতর্ক করে—উমরাহ ভিসা ব্যবহার করে মক্কা ও মদিনায় ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধ না করলে পাকিস্তানি উমরাহ ও হজযাত্রীদের জন্য বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। সে সময় সৌদি আরবের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে সতর্কবার্তাও দেয়।

পাকিস্তানের আইন বিশেষজ্ঞরাও বিষয়টি বিশ্লেষণ করেছেন। গত বছর ডন পত্রিকায় এক লেখায় আইনজীবী রাফিয়া জাকারিয়া ভিক্ষাবৃত্তিকে দারিদ্র্যের ফল নয়, বরং সুসংগঠিত একটি শিল্প হিসেবে বর্ণনা করেন।

তিনি লেখেন, এই শিল্প এতটাই সংগঠিত যে তা এখন বিদেশে ‘রপ্তানি’ ও বিস্তৃত হচ্ছে। হজের সময় মক্কা ও মদিনার পবিত্র স্থানের বাইরে এসব ভিক্ষুকের উপস্থিতির কথাও তিনি উল্লেখ করেন।

সরকারি কর্মকর্তারাও একই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ২০২৪ সালে প্রবাসী পাকিস্তানি সচিব জিশান খানজাদা বলেন, পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলোতে আটক ভিক্ষুকদের প্রায় ৯০ শতাংশই পাকিস্তানি নাগরিক।

বিশ্লেষকদের মতে, সংগঠিত ভিক্ষাবৃত্তি দমন ও ভিসা অপব্যবহার বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে পাকিস্তানিদের বিদেশযাত্রা ও প্রবাসী কর্মসংস্থানের ওপর আরও কড়াকড়ি আসতে পারে। সূত্র: এনডিটিভি

বিপি/এনএস