মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগীকে টুকরো করে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা
২০১৩ সালের মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগী সুইজারল্যান্ডের সুন্দরী ৩৮ বছর বয়সি ক্রিস্টিনা জোকসিমোভিচকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর তার দেহ টুকরো টুকরো করে ফেলেন তার স্বামী। বুধবার এমনই লোমহর্ষক তথ্য জানিয়েছে সুইস কর্তৃপক্ষ।
সুইজারল্যান্ডের গোপনীয়তা আইনের কারণে ৪৩ বছর বয়সি অভিযুক্ত স্বামীর নাম ‘থমাস’ হিসেবে প্রকাশ করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে, তাদের বিউনিঞ্জেনের বাসায়।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং আদালতের নথি অনুযায়ী, পেশায় মডেল ও ক্যাটওয়াক প্রশিক্ষক ক্রিস্টিনার দেহ জিগসো নাইফ ও গার্ডেন শিয়ারের সাহায্যে কেটে ফেলা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদ ও রিপোর্টের বরাতে তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানান, থমাস তার স্ত্রীর জরায়ু তার শরীর থেকে বের করে ফেলেন। এরপর শিল্প-মানের ব্লেন্ডারে দেহের কিছু অংশ ব্লেন্ড করে ফেলেন।
কর্মকর্তারা বলেন, দেহের কিছু অংশ ‘পুড়িয়ে’ ফেলা হয় এবং রাসায়নিক দ্রবণে গলিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হয়।
দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে- পুলিশ পরে সেই ব্লেন্ডারসহ দেহের টুকরো, মাংসের টুকরো এবং হাড়ের টুকরো উদ্ধার করে।
আদালতের নথিতে বলা হয়, থমাস তার স্ত্রীকে টুকরো করার সময় মোবাইলে ইউটিউব ভিডিও দেখছিলেন।
ময়নাতদন্তের রিপোর্টে আরও জানা যায়, থমাস নাকি তার স্ত্রীর হিপ-জোড় ভেঙে দেন, একাধিক অঙ্গ বিচ্ছিন্ন করেন, মেরুদণ্ড কেটে ফেলেন এবং শেষ পর্যন্ত মাথা বিচ্ছিন্ন করেন।
নিউ ইয়র্ক পোস্টকে দেওয়া নিহতের এক বন্ধুর বিবৃতি অনুযায়ী, মডেলের দেহাবশেষ প্রথম খুঁজে পান তার বাবা। তিনি লন্ড্রি রুমে রাখা একটি কালো ব্যাগ থেকে বের হয়ে থাকা স্বর্ণকেশী চুল দেখে প্রথমে সন্দেহ করেন।
থমাস প্রথমে দাবি করেছিলেন, তিনিই তার স্ত্রীকে মৃত অবস্থায় পেয়েছেন। কিন্তু পরে তিনি স্বীকার করেন যে, তিনিই হত্যা করেছেন। যদিও তিনি দাবি করে বলেন, তিনি নাকি আত্মরক্ষার্থে এমনটা করেন। কারণ তার স্ত্রী তাকে ছুরি নিয়ে আক্রমণ করেছিলেন।
তবে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা তার এই দাবি খারিজ করে দেন। তাদের মতে, মৃত্যুর কারণ ছিল শ্বাসরোধ।
আদালতের নথিতে পুলিশ লিখেছে, স্ত্রীকে হত্যার পর থমাস ‘অসাধারণ মাত্রার অপরাধমূলক শক্তি, সহমর্মিতার ঘাটতি এবং ঠাণ্ডা মাথায় নিষ্ঠুরতা’ দেখিয়েছেন।
কর্তৃপক্ষ জানায়, এই দম্পতির দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে এবং অভিযুক্ত থমাসকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।
বাজেল-ল্যান্ডশ্যাফট পাবলিক প্রসিকিউটরস অফিস জানিয়েছে, থমাসের বিরুদ্ধে এখন আনুষ্ঠানিকভাবে হত্যা এবং শান্তিভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে বিচার শুরু হওয়ার তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি।
ক্রিস্টিনা জোকসিমোভিচ ২০০৭ সালে মিস নর্থওয়েস্ট সুইজারল্যান্ডের মুকুট জিতেছিলেন এবং মিস সুইজারল্যান্ড প্রতিযোগিতার ফাইনালিস্ট ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি ক্যাটওয়াক প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করেন এবং ২০১৩ সালের মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার আগ পর্যন্ত ডমিনিক রিন্ডারকনেখ্টসহ বহু মডেলকে প্রশিক্ষণ দেন।
