আবারও স্বর্ণের দামে বড় পতন
মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের কঠোর অবস্থানের ইঙ্গিত মিলতেই বিশ্ববাজারে নেমে আসে তীব্র ঝড়। শেয়ারবাজার থেকে পণ্যবাজার সবখানেই বিক্রির চাপ ছড়িয়ে পড়ে। যার প্রভাব পড়েছে স্বর্ণবাজারেও। শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) স্বর্ণের দামে বড় পতন হয়েছে। এতে ডিসেম্বর মাসে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনাও উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্বল হয়েছে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার স্পট গোল্ড ১.৯ শতাংশ কমে প্রতি আউন্স ৪০৯২.৭২ ডলারে নেমে আসে—যা সেশনের শুরুতে ৩ শতাংশের বেশি কমে গিয়েছিল। যদিও পুরো সপ্তাহ বিবেচনায় এখনো স্বর্ণের দাম ২.৩ শতাংশ বৃদ্ধি রয়েছে।
এদিকে ডিসেম্বর ডেলিভারির জন্য মার্কিন স্বর্ণের ফিউচার দামেও বড় ধস নেমেছে। দিনশেষে এটি ২.৪ শতাংশ কমে প্রতি আউন্স ৪০৯৪.২০ ডলারে স্থির হয়েছে।
হাই রিজ ফিউচারসের মেটাল ট্রেডিং প্রধান ডেভিড মেগার বলেন, ‘ডিসেম্বরে ফেড সুদ কমাবে—এই প্রত্যাশা কমে গেছে। আর এ কারণেই স্বর্ণ ও রুপার বাজারে চাপ বেড়েছে।’
বিশ্ববাজারে ফেডের সংকেত ছড়িয়ে পড়তেই শেয়ারবাজারগুলোও বড় ধসের মুখে পড়ে।
এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দীর্ঘতম সরকারি শাটডাউন বাজারে বড় ধরনের তথ্য ঘাটতি তৈরি করেছে। ফলে আগামী মাসের নীতিনির্ধারণী বৈঠকের আগে ফেড ও ট্রেডাররা কার্যত ‘ব্লাইন্ড’ অবস্থায় রয়েছে।
বিনিয়োগকারীরা আশা করছিলেন নতুন অর্থনৈতিক তথ্য দুর্বলতা দেখাবে, আর তাতে ফেডের সুদ কমানোর সুযোগ তৈরি হবে—যা স্বর্ণের জন্য সহায়ক। কিন্তু সাম্প্রতিক মন্তব্যে আরও বেশি ফেড কর্মকর্তাকে সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে।
সিএমই ফেডওয়াচ টুল অনুযায়ী, ডিসেম্বরের বৈঠকে ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমানোর সম্ভাবনা সপ্তাহের শুরুতে যেখানে ছিল ৫০ শতাংশ, তা নেমে এখন ৪৬ শতাংশ হয়েছে।
বাজার বিশ্লেষক ফাওয়াদ রাজাকজাদা বলেন, মার্জিন কল ও লিকুইডেশনের সময় ট্রেডাররা মার্জিন বাঁচাতে সব ধরনের পজিশন বন্ধ করে দেয়। এজন্যই ঝুঁকিহীন সম্পদ হিসেবে বিবেচিত স্বর্ণও এখন কমছে।
এদিকে এশিয়ার বড় বড় বাজারে শারীরিক স্বর্ণের চাহিদা এই সপ্তাহেও দুর্বল ছিল।
স্পট সিলভার ২.৮ শতাংশ কমে ৫০.৮৪ ডলার হয়েছে, তবে সাপ্তাহিক হিসেবে এখনও ৫.২ শতাংশ উপরে রয়েছে। প্লাটিনাম ২.১ শতাংশ কমে ১৫৪৭.৩০ ডলার, প্যালাডিয়াম ২.৮ শতাংশ কমে ১৩৮৭.২৫ ডলার হয়েছে। দুই ধাতুই সাপ্তাহিক হিসেবে এখনও ঊর্ধ্বমুখী।
