মুরগির বাচ্চা খাওয়ায় অপরাধে পিটিয়ে মারা হলো ২ কুকুরছানা
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর মৎস্য বন্দর সংলগ্ন মম্বিপাড়া এলাকায় এক নিষ্ঠুর প্রাণিহত্যার ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে, মুরগির বাচ্চা খাওয়ার জেরে সোনিয়া নামে এক নারী লাঠি দিয়ে পিটিয়ে কয়েকটি কুকুরছানাকে হত্যা করেছেন।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে লতাচাপলি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাধুর ব্রিজ আশ্রয়ণ প্রকল্পে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত সোনিয়া ওই এলাকার বাসিন্দা আলমগীরের মেয়ে। ঘটনার দিন সকালে একটি কুকুরের বাচ্চা তার বাড়ির মুরগির ছানা খেয়ে ফেলায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। রাগের মাথায় তিনি লাঠি দিয়ে কুকুরছানাগুলোকে নির্মমভাবে আঘাত করেন, যার ফলে ঘটনাস্থলেই সেগুলোর মৃত্যু হয়।
অভিযুক্ত সোনিয়া নিজের দোষ স্বীকার করে গণমাধ্যমকে জানান, ইতিপূর্বেও তার বেশ কিছু মুরগির বাচ্চা কুকুরে খেয়েছে। ক্ষোভের বশবর্তী হয়েই তিনি এই কাজ করেছেন বলে দাবি করেন।
নিরীহ প্রাণির ওপর এই বর্বরোচিত হামলা নিয়ে এলাকায় তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ফাতেমা ও সত্তার হাওলাদারসহ অনেকে এই অমানবিক কাজের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
অ্যানিমেল লাভার্স অব পটুয়াখালী সংগঠনের সদস্য কেএম বাচ্চু বলেন, ‘প্রাণির ওপর এই ধরনের বর্বরতা সমাজের জন্য অশনিসংকেত।’ সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রাণী অধিকার কর্মী বায়জিদ মুন্সী ইতোমধ্যে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন দ্রুত তৎপরতা শুরু করেছে। মহিপুর থানা পুলিশ ও স্থানীয় প্রাণি অধিকার কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে মৃত কুকুরছানাগুলো উদ্ধার করেন। মৃতদেহগুলোর ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাওসার হামিদ ঘটনাটিকে ‘হৃদয়বিদারক’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি জানান, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে এবং তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহব্বত খান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট ও ময়নাতদন্তের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।