দিপু দাসকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা: কী হয়েছিল সেদিন
ময়মনসিংহের ভালুকায় পোশাক শ্রমিক দিপু চন্দ্র দাস (২৭) কে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা গেছে, তাকে পোশাক কারখানার পকেট গেট থেকে বের করে মূল সড়কের দিকে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছে কারখানার ম্যানেজার, ফ্লোর ইনচার্জ, কোয়ালিটি ইনচার্জ, শ্রমিক, স্থানীয় মসজিদের ইমাম ও একজন শিক্ষক। তাদের ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।
পরিবার, স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দিপুর বিরুদ্ধে ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগের কোনও সত্যতা পাওয়া যায়নি। তবে কারখানায় সহকর্মীদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে তাকে হত্যা করা হতে পারে বলে পরিবার ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
নিহত দিপুর ভাই অপু রবি দাস বলেন, ‘দিপু ফ্লোর ম্যানেজার থেকে সুপারভাইজার পদে নিয়োগ পরীক্ষার সময় কারখানায় সহকর্মীদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। ওই দিন তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ ব্যবহার করে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে।’
স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার তোফাজ্জেল হোসেনও জানিয়েছেন, ‘হত্যার পিছনে ধর্মীয় অভিযোগ নয়, বরং উৎপাদন, কাজের পরিবেশ ও পদোন্নতি নিয়ে দ্বন্দ্ব মূল কারণ।’
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ধর্ম নিয়ে কটূক্তির যে অভিযোগ এসেছে তা যাচাই করে দেখা হচ্ছে। মব সৃষ্টি করে হত্যার কোনো অধিকার কারও নেই। ভিডিও ফুটেজের ভিত্তিতে ইতোমধ্যেই ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকিদের খুঁজে বের করার অভিযান চলছে।’
ময়মনসিংহের ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলামও বলেন, ‘দিপুকে অন্য কারণে হত্যা করা হয়েছে। ধর্ম নিয়ে কটূক্তির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’
প্রসঙ্গত, এই ঘটনা ১৮ ডিসেম্বর রাতে ঘটেছে। নিহত দিপু পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস (বিডি) লিমিটেডের শ্রমিক ছিলেন। তার ভাই বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ১৫০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।
বিপি/ এএস