বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ


টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে গর্ভবতী এক গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে। ঘটনার পর ভুক্তভোগীর পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
জানা গেছে, উপজেলার কুঠিবয়ড়া গ্রামে গত শুক্রবার (২ মে) বিকেলে ওই গৃহবধূ বাড়িতে একা রান্না করছিলেন। এই সুযোগে পার্শ্ববর্তী বাড়ির বাসিন্দা বিএনপি নেতা তোতা মোল্ল্যা বাড়িতে প্রবেশ করে। পরে কথা বলার এক পর্যায়ে তাকে জড়িয়ে ধরে প্রথমে শ্লীতাহানি ও পরে ধর্ষণের চেষ্টা করে। তার হাত থেকে বাঁচার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে ডাক-চিৎকার করেন। পরে লোকজনের উপস্থিতি পেয়ে পালিয়ে যান বিএনপির ওই নেতা। এই ঘটনায় শনিবার (৩ মে) অভিযুক্ত তোতা মোল্ল্যার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে গৃহবধূর বাবা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, থানায় অভিযোগ দায়ের পরই থেকেই মেয়ের বাবা ও তার শ্বশুরবাড়ি লোকজনকে হামলা এবং মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে যাচ্ছে তোতা ও তার লোকজন। ঘটনার বিষয়ে এখনও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ভুক্তভোগী পরিবার।
এদিকে থানায় অভিযোগ করায় মেয়ের বাবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে বিএনপির ওই নেতা। ফলে গেল ৫ দিন ধরে তিনি নিরাপত্তাহীনতার কারণে বাড়িতেই থাকছেন। তবে প্রভাবশালীদের ভয়ে এই বিষয়ে স্থানীয়রাও কথা বলতে রাজি হননি।
বুধবার (৭ মে) ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ বলেন, ‘স্বামী ঢাকায় কাজ করেন। বাড়িতে শাশুড়ি আর আমিই থাকি। ঘটনার দিন শাশুড়ি তোতা মোল্ল্যার বাড়িতে গিয়েছিল কাজে। সেই সুযোগে তোতা মামা বাড়িতে প্রবেশ করে কথা বলার এক পর্যায়ে ঝাপটে ধরে শ্লীলতাহানি করে। এরপর ধর্ষণের চেষ্টা করে। পরে ডাক-চিৎকার করলে আশপাশের মানুষের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়। তার উপযুক্ত শাস্তি চাই।’
ভুক্তভোগী গৃহবধূর শাশুড়ি বলেন, ‘বাড়িতে পুরুষ মানুষ না থাকায় একা পেয়ে ছেলের বউয়ের সাথে খারাপ আচরণ করেছে আমার চাচাতো ভাই। ভাগিনার স্ত্রীর সঙ্গে কীভাবে মামা এমন আচরণ করতে পারে। ঘটনার পরও আজ সকালে বাড়িতে হামলা করেছে তারা। প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ এগিয়ে আসতে সাহস পায় না। অপরাধীর কঠোর বিচার চাই।’
গৃহবধূর বাবা ও মা জানান, আপস না করায় কুঠিবয়ড়া বাজারের আমার চা দোকান বন্ধ করে দিয়েছে। বাইরে গেলেই মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। তারা বিএনপির বড় নেতা এলাকায় অনেক প্রভাব তাদের। তারপরও ঘটনাটি মীমাংসার জন্য বলা হলেও তারা বসেনি। মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত চা দোকান বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), একেএম রেজাউল করিম বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তারা মীমাংসা করবে এমনটি বলা হয়েছিল। কিন্তু পরে আর মীমাংসা করতে পারেনি, তাদের থানায় আসতে বলা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলু বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি যদি অভিযুক্ত দোষী প্রমাণিত হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’