সভ্যতার সংকট-শান্তির পথে অগ্রযাত্রা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার বিখ্যাত প্রবন্ধ "সভ্যতার সংকট" এ যেভাবে সমাজের নৈতিক অবক্ষয়, মানবিকতার অভাব এবং মানুষে মানুষে বৈষম্যের কথা তুলে ধরেছিলেন, তা আজকের তথাকথিত নতুন বাংলাদেশেও গভীরভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে। আমাদের চারপাশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, আমরা যেন এক অগোছালো, দিশাহীন সমাজের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। নৈতিকতা এবং মানবিকতা যেখানে প্রতিদিন ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে। আমরা প্রায় সকলেই কোন না কোন ভাবে এই অবক্ষয়ের শিকার হচ্ছি সমাজের প্রতিটি স্তরে। ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে নীতি এবং আদর্শের যে ভাঙন ঘটছে, তা দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, এবং সামাজিক ক্ষেত্রে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে সভ্যতার প্রকৃত মূল্যবোধ নিয়ে আলোচনা করা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু এই আলোচনার কোন সুস্থ পরিস্থিতি আছে কি? কিংবা আলোচনাটা করার সত্যিকারের সুস্থ বুদ্ধি দীপ্ত স্বার্থহীন নান্দনিক চিন্তক সমাজে এখনো আছে কি? থাকলেও হয়তো ওদেরকে দিনের দিব্য জ্যোতিতে দেখা যায় না। যেখানে সামাজিক ও উগ্র ধর্মীয় দূর্বৃত্যায়নে ছেয়ে গেছে পুরো দেশ। সামাজিক, রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থায় যে দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহার প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে, তা দেশের সার্বিক নৈতিক সংকটেরই বহিঃপ্রকাশ। একদিকে ধনী এবং প্রভাবশালীদের মধ্যে ক্ষমতার লোভ ও আগ্রাসন বৃদ্ধি পাচ্ছে, অন্যদিকে উন্মাদ ধর্মীয় মৌলবাদী এবং মুক্তিযুদ্ধের শত্রুরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। হুংকার ছাড়ছে সমাজের যত্র তত্র। পদদলিত করছে সাধারণ মানুষের স্বপ্ন, আকাঙা এবং কণ্ঠস্বরকে। সংখ্যালঘুদের উপরে চলছে প্রকাশ্যে নির্যাতন, হুমকি-ধামকী। সরকার ও নীতি নির্ধারকদের চোখের সামনে রাস্তায় রাস্তায় চলছে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে মিটিং মিছিল। সাধারণ মানুষ সহ সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার ক্রমশ বেড়েই চলেছে। এক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা নিয়ে সাধারন জনগন উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠিত।
বর্তমান অবস্থাকে বুঝতে হলে আমাদের অবশ্যই প্রাচাত্য ও প্রাচ্যীয় চিন্তাবিদদের দৃষ্টিভঙ্গি ও শিক্ষার দিকে একটু দৃষ্টিপাত করা প্রয়োজন। পশ্চিমা দার্শনিকদের একজন হলেন প্লেটো। তার সামাজিক, রাজনৈতিক এবং দার্শনিক চিন্তাগুলো সারা বিশ্বকে নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে এবং সমাজ পরিবর্তনের দিক নির্দেশনা দিয়েছে যুগে যুগে। তার "বিখ্যাত দ্য রিপাবলিক" গ্রন্থে তিনি ন্যায়, নীতি এবং রাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে অনেক গুরু গম্ভীর ও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছেন। তার মতে, নৈতিক সমাজ গড়ে তোলার জন্য শাসকদের অবশ্যই নৈতিক শিক্ষা থাকা উচিত, এবং শাসনব্যবস্থার মধ্যে আদর্শিক দিকগুলোকে প্রাধান্য দিতে হবে। প্লেটোর এই দৃষ্টিভঙ্গির সাথে বর্তমান বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রেক্ষাপট মিলিয়ে দেখলে আমরা সকলেই কি দেখতে পাই। এ ব্যাপারে হয়তো কেউই দ্বিমত পোষণ করবেন না যে পুরো দেশ জুড়ে দৃশ্যত: হচ্ছে নৈতিকতার চরম অভাব এবং ক্ষমতার অপব্যবহার। মানুষে মানুষে বিভেদ এবং বৈষম্যের কারণে ন্যায়বিচার এবং মানবিক মূল্যবোধ ধ্বংসের মুখে পড়েছে। প্লেটোর মতে, সমাজে আদর্শিক পরিবর্তন না আনলে এই পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে যাবে। আরেক পশ্চিমা দার্শনিক জিন-জ্যাক রুশো তার "সোশ্যাল কন্ট্রাক্ট" এ উল্লেখ করেছিলেন যে, মানুষ প্রকৃতিতে স্বাধীন এবং সমান ভাবেই জন্মায়। কিন্তু সমাজের বিভিন্ন নিয়ম-নীতির মাধ্যমে তাদের স্বাধীনতা এবং সমানাধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ করা হয়। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের অধিকারের ওপর যে হস্তক্ষেপ এবং সংখ্যালঘুদের প্রতি যে বৈষম্যমূলক আচরণ হচ্ছে, তা রুশোর ধারণার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এখানে ক্ষমতাধররা নিজেদের স্বার্থে দুর্নীতি এবং বৈষম্যের শাসন কায়েম করে রেখেছে, যা সমাজে অনৈতিকতার জন্ম দিচ্ছে। অথচ মাত্র দুমাস আগে বৈষম্য বিরোধী চরম আন্দোলনের বিস্ফোরণে পতন ঘটে গত সরকারের। নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার সাথে সাথেই শুরু হয়ে গেলো নতুন বৈষম্যের।
চৈনিক দার্শনিক কনফুসিয়াস নৈতিকতা এবং শাসকের দায়িত্ব সম্পর্কে তার চিন্তাধারায় উল্লেখ করেছেন। তার মতে একটি সমাজের শান্তি এবং স্থিতিশীলতা তখনই বজায় থাকে যখন শাসকরা ন্যায়পরায়ণ হন এবং তাদের শাসন নৈতিকতার উপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়। কনফুসিয়াসের এই মতবাদও বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির সাথে প্রাসঙ্গিক। আমাদের দেশের রাজনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রে ন্যায়ের চর্চা ক্রমশ কমে যাচ্ছে, যার ফলে সমাজে অন্যায়, দুর্নীতি, এবং হিংসা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শাসকশ্রেণী যদি নৈতিকতার মূল্যবোধ অনুসরণ না করে, তবে সমাজে শান্তি এবং ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হবে না। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার প্রবন্ধে লিখেছিলেন যে সভ্যতার সংকট শুরু হয় তখন, যখন মানুষ নিজেদের নৈতিকতা-বোধ এবং মানবিক মূল্যবোধ হারিয়ে ফেলে। আজকের বাংলাদেশে এই সংকট আরও গভীরভাবে দৃশ্যমান। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচার, ধর্মীয় ও জাতিগত বিরোধ, এবং সহিংসতার ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি দখল, মন্দির ভাঙচুর, এবং ধর্মীয় নিপীড়নের ঘটনা সমাজের নৈতিক অবক্ষয়কে আরও স্পষ্ট করেছে। এসব ঘটনা আমাদের মানবিক মূল্যবোধকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে এবং আমাদেরকে একটি অমানবিক সমাজের দিকে ধাবিত করছে। এই অবক্ষয়ের মূল কারণ হলো নৈতিক শিক্ষার অভাব। আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় মানবিকতা এবং নৈতিকতা নিয়ে শিক্ষাদানের অভাব রয়েছে। পরিবার, স্কুল, এবং সমাজের অন্যান্য ক্ষেত্র যেখানে নৈতিকতা শেখানো উচিত ছিল, সেখানে অর্থনৈতিক উন্নতি এবং প্রতিযোগিতার চাপ আমাদের নৈতিক শিক্ষার দিকে নজর দেওয়া থেকে সরিয়ে দিয়েছে। সমাজে মানবিকতা এবং সহানুভূতির চর্চা ক্রমশ কমে যাচ্ছে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে নৈতিক সংকটের সৃষ্টি করছে।
পূর্বীয় দার্শনিকদের মধ্যে বৌদ্ধ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম বুদ্ধ নৈতিকতা এবং মানবিকতার গুরুত্ব অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছিলেন, "মনুষ্যত্বের শ্রেষ্ঠ ধর্ম হলো দয়া, সহানুভূতি এবং ন্যায়বিচার।" আমাদের বর্তমান সমাজে, বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো দেশে, গৌতম বুদ্ধের শিক্ষা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। সমাজের প্রতিটি স্তরে যদি দয়া, সহানুভূতি, এবং ন্যায়বিচারের চর্চা না হয়, তবে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না এবং মানুষে মানুষে বৈষম্য দূর হবে না। আমাদের দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক, এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যে দুর্নীতি, বৈষম্য, এবং হিংসার চিত্র আমরা দেখছি, তা সভ্যতার প্রকৃত সংকটেরই প্রতিফলন। এই সংকট থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় হলো আমাদের মানবিক মূল্যবোধ এবং নৈতিক শিক্ষাকে পুনঃ-প্রতিষ্ঠিত করা। ক্ষমতাসীনদের উচিত নৈতিক শিক্ষার মাপকাঠিতে নিজেদের পরিচালিত করা এবং সাধারণ মানুষের প্রতি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা। পশ্চিমা এবং পূর্বীয় দার্শনিকদের নৈতিক শিক্ষা ও মানবিক মূল্যবোধগুলো বর্তমান বাংলাদেশের সমাজকে পুনর্গঠন করতে সহায়ক হতে পারে। সমাজের প্রতিটি স্তরে নৈতিকতা এবং মানবিকতার চর্চা করতে হবে, তাহলেই আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ এক ন্যায়বিচারমূলক এবং মানবিক সমাজের দিকে ধাবিত হবে।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়ন ও বৈষম্যের যে ঘটনা ঘটছে, তা শুধুমাত্র মানবিকতা ও নৈতিকতার পরিপন্থী নয়, ইসলামের মৌলিক শিক্ষারও বিরোধী। ইসলাম ধর্মের মূল শিক্ষাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি হলো ইনসাফ, বা ন্যায়বিচার। ইসলাম প্রতিটি মানুষের মর্যাদা ও অধিকারের সমান গুরুত্ব দেয়, এবং অন্যায়ভাবে কারও প্রতি হিংসা বা অবিচার করাকে কঠোরভাবে দমন করে। হযরত মুহাম্মদ (স.) তার বিদায় হজ্জের ভাষণে বারবার উল্লেখ করেছেন যে, আরবের উপর অযথা অনারবের কোনও শ্রেষ্ঠত্ব নেই, অনারবের উপর আরবেরও কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই, শ্বেতাঙ্গের উপর কৃষ্ণাঙ্গের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই এবং কৃষ্ণাঙ্গের উপর শ্বেতাঙ্গেরও কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই, প্রত্যেকেই আল্লাহর সামনে সমান। ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে এই ভাষণে হযরত মুহাম্মদ (স.) সমতা, মানবাধিকার এবং সামাজিক ন্যায়বিচার নিয়ে কথা বলেছেন। এই বার্তা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, ইসলামে জাতি, ধর্ম বা গোত্র-ভিত্তিক বৈষম্য বা অত্যাচার কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। ইসলামে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা ও অধিকারের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, "ধর্মের বিষয়ে কোনও জবরদস্তি নেই" (সূরা আল-বাকারা, আয়াত ২৫৬)। অর্থাৎ, কারও ধর্মবিশ্বাস বা অধিকারকে জোর করে বদলানোর চেষ্টা করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ইসলামের প্রথম যুগ থেকেই অমুসলিম সংখ্যালঘুদের (যেমন: ইহুদি ও খ্রিস্টান) প্রতি সম্মান এবং তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষার উদাহরণ রয়েছে। খলিফা ওমর (রা:) যখন জেরুজালেম জয় করেন, তখন তিনি অমুসলিমদের সম্পদ এবং ধর্মীয় স্থাপনাগুলোর প্রতি সম্মান দেখানোর জন্য একটি চুক্তি করেন, যা ইসলামের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের মডেল হিসেবে গণ্য করা হয়। বাংলাদেশের কিছু ইসলামী মৌলবাদী গোষ্ঠী সংখ্যালঘুদের উপর যে অত্যাচার করছে, তা ইসলামের এই সহিষ্ণুতা এবং ন্যায়বিচারের মূল আদর্শের সম্পূর্ণ বিপরীত।
এই অবস্থায় সকল ধর্মপ্রান মানুষেরা উচিত স্বধর্মের প্রকৃত শিক্ষা অনুসরণ করা, যেখানে সংখ্যালঘুদের প্রতি সহানুভূতি, সম্মান এবং ন্যায়বিচার প্রাধান্য পায়। একটি সমাজের শান্তি এবং স্থিতিশীলতা তখনই বজায় থাকে যখন সমাজের প্রতিটি ব্যক্তি, তাদের ধর্ম, জাতি বা সম্প্রদায় যাই হোক না কেন, পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল ও সম্মানজনক আচরণ করে। রবীন্দ্রনাথের "সভ্যতার সংকট" আমাদের শেখায় যে মানবিক মূল্যবোধ এবং নৈতিকতা ছাড়া সভ্যতা টিকে থাকতে পারে না। আর ইসলামিক শিক্ষাও এই একই বার্তা দেয়—ন্যায়বিচার, সহানুভূতি এবং পরমতসহিষ্ণুতা সমাজের ভিত্তি হওয়া উচিত। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটি আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। সংখ্যালঘুদের প্রতি অবিচার এবং ধর্মীয় হিংসা শুধুমাত্র মানবিকতার অবক্ষয়কে প্রতিফলিত করে না, বরং এটি ইসলামের আদর্শেরও পরিপন্থী। একটি জাতি তখনই উন্নতির পথে এগিয়ে যেতে পারে, যখন প্রতিটি মানুষ তার নিজ ধর্মের প্রতি দায়িত্ব পালন করতে পারে এবং একই সঙ্গে অন্যের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়। ইসলামের শিক্ষা, প্লেটোর ন্যায়বিচারের ধারণা, এবং রবীন্দ্রনাথের মানবিকতা-বোধ সবই এই সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করে যে, সকল ধর্মের মানুষ যদি একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল এবং ন্যায়পরায়ণ হয়, তবেই সমাজে শান্তি এবং সমৃদ্ধি আসতে পারে। একমাত্র ঐক্য, নৈতিকতা এবং মানবিকতাই আমাদের সমাজকে একটি ন্যায়পরায়ণ, সমৃদ্ধ এবং শান্তিপূর্ণ জাতিতে পরিণত করতে পারে, যেখানে প্রতিটি ব্যক্তি তার অধিকার এবং মর্যাদা নিয়ে বাঁচতে পারে।
বাংলাদেশের মাটি যুগে যুগে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সব ধর্মের মানুষের মিলিত জীবনধারায় সমৃদ্ধ হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, মুজতবা আলী, অদ্বৈত মল্লবর্মণ, আবুল হোসেন, কবি জসীম উদ্দিন, শেখ ফজলল করিম, শামসুর রহমান—এঁদের মতো মহান সাহিত্যিকরা প্রমাণ করে দিয়েছেন যে সৃজনশীলতা ও মানবিকতা কোনও ধর্মের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ নয়। তাঁদের রচনায় সব ধর্ম, সব মানুষের জন্য সাম্য, ভালোবাসা ও মানবিকতার বার্তা বারবার উঠে এসেছে। যখন বাংলাদেশের মানুষ এই ঐক্যের চেতনাকে বুকে ধারণ করবে, তখনই দেশটি হবে সত্যিকার অর্থে সমৃদ্ধ, গর্বিত এবং শান্তিপূর্ণ। একসঙ্গে, এক-সূত্রে গাঁথা থেকে, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে একে অপরকে সম্মান ও ভালোবাসা দিয়ে আমরা একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে পারব।