প্রাণীখাদ্যের দাম কমানো নিয়ে ‘সুখবর’ দিলেন উপদেষ্টা

Bangla Post Desk
নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশিত:২৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:৫২ পিএম
প্রাণীখাদ্যের দাম কমানো নিয়ে ‘সুখবর’ দিলেন উপদেষ্টা
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। ছবি: বাংলাপোস্ট

প্রাণী খাদ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে একটি নীতিমালা করা হবে জানিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, প্রাণিখাদ্যের দাম কমাতে এ খাতের ব্যবহৃত বিদ্যুতের দাম কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ উপলক্ষে সোমবার (২৪ নভেম্বর) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

পশুখাদ্যের দাম কমানোর বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, 'খামারীদের ৭০ শতাংশ খরচ হয় প্রাণীখাদ্যের পেছনে। এর ওপরে আছে বিদ্যুৎ এবং অন্যান্য বিষয়। আমরা বিদ্যুতের দাম কমানোর জন্য উদ্যোগ নিয়েছি। সেটা অনেকখানি এগিয়ে গেছে। আমরা আশা করি এটা কমাতে পারবো। খরচ কমে গেলে অটোমেটিকলি মূল দাম কমে যাবে। খাবারের দাম কমানোর জন্য আমরা চেষ্টা করছি।'

ভুট্টার দাম কমার পরেও পোল্ট্রি ফিডের দাম এক পয়সাও কমানো হয়নি- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রাণী সম্পদ উপদেষ্টা বলেন, 'ফিড ইন্ডাস্ট্রির লোকজন অনেক সময় নিজেদের মতো করে দাম রাখে। এ বিষয়ে সরকারিভাবে নীতিমালা তৈরি করে দিতে হবে। দাম কোন পর্যন্ত তারা রাখতে পারবে, সেগুলো থাকবে। আমরা মনে করি এটাকে একটা রেগুলেশনের মধ্যে আনতেই হবে।'

বর্তমান সরকার এ খাতে অনেক কাজ এগিয়ে নিয়েছে দাবি করে উপদেষ্টা বলেন, আগামী সরকার এটা করবে এবং সেই সরকারের প্রথমদিকেই সেগুলো মানুষ দেখতে পাবে। কোন সরকারেরই এগুলো একদিনে করতে পারার কাজ নয়।

প্রাণিসম্পদ খাতের অবদান তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, প্রাণিসম্পদ খাত দেশের অর্থনীতিতে সুনির্দিষ্ট স্থান ধরে রেখেছে। স্থির মূল্যে জিডিপিতে খাতটির অবদান ১ দশমিক ৮১ শতাংশ, জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ, কৃষিজ জিডিপিতে এ খাতের অবদান ১৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ অবদান রাখছে। অর্থমূল্যে প্রাণিসম্পদ জিডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৩৬ কোটি টাকা, যা গ্রামীণ অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখার পাশাপাশি জাতীয় প্রবৃদ্ধিতেও সরাসরি অবদান রাখছে। সব মিলিয়ে, অর্থনীতি, কর্মসংস্থান ও পুষ্টি নিরাপত্তায় প্রাণিসম্পদ খাত এক অনন্য ও ক্রমবর্ধমান শক্তি।

তিনি বলেন, 'প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর মূলত দেশের জনগণের ডিম, দুধ ও মাংসের নিরাপদ যোগান নিশ্চিতকরণে কাজ করে থাকে। তাই মূলত পোল্ট্রি, ডেইরি এবং মাংস উৎপাদনশীল বিভিন্ন গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির উন্নয়ন এ খাতের প্রধান লক্ষ্য। গার্মেন্টস শিল্পের পর দেশে দ্বিতীয় বৃহত্তম কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী খাত হিসেবে পোল্ট্রি শিল্প ইতোমধ্যে স্থান দখল করে নিয়েছে।'

এ খাতে বর্তমানে বেসরকারি বিনিয়োগের পরিমাণ বর্তমানে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে জানিয়ে ফরিদা আখতার বলেন, দেশে নিবন্ধিত ৮৫ হাজার ২২৭টি বাণিজ্যিক এবং প্রান্তিক পর্যায়ে প্রায় এক লাখ ৯১ হাজারটি পোল্ট্রি খামার তৈরির মাধ্যমে এ খাতে বিগত দশকে বিপুল সংখ্যক উদ্যোক্তা তৈরির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। দেশে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৬ কোটি ৬৮ লক্ষ ডিম উৎপাদিত হয়-যা নিঃসন্দেহ প্রশংসার দাবি রাখে।

তিনি বলেন, 'সম্প্রতি উদ্ভুত গবাদিপশুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে প্রায় ১৭ লাখ মাত্রা টিকা মাঠ পর্যায়ে প্রদানের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া, গবাদিপশুর অন্যতম ক্ষুরা রোগ (এফএমডি) নির্মূলে মুক্ত অঞ্চল (জোনিং)-এর অংশ হিসেবে সিরাজগঞ্জ, পাবনা, মানিকগঞ্জ ও ভোলা টিকাদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ছাগলের মারাত্মক সংক্রামক রোগ পিপিআর নির্মূলে প্রায় ৬ কোটি ডোজ টিকা সাম্প্রতিক সময়ে মাঠ পর্যায়ে প্রয়োগ করা হয়েছে।'

মাংস রপ্তানির জন্য সৌদি আরব একটি বড় বাজার জানিয়ে তিনি বলেন, এলএসডি থাকলে সৌদি আরব মাংস নেয় না। মাংসের রপ্তানি বানানোর জন্য আমরা আমাদের ভ্যাকসিন কার্যক্রমটাকে আরও জোরদার করতে চাই।