তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরানোর ঐতিহাসিক রাত আজ
সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে করা রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদন ও এ সংক্রান্ত আপিলের চূড়ান্ত রায় আজ বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) ঘোষণা করা হবে। ২০১১ সালে আপিল বিভাগের যে রায়ের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছিল, আজকের রায়ের মাধ্যমে জানা যাবে সেই ব্যবস্থা পুনরায় সংবিধানে ফিরে আসবে কি না।
আজ প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করবেন। সুপ্রিম কোর্টের আজকের কার্যতালিকার এক নম্বরেই রাখা হয়েছে মামলাটি।
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত এই বেঞ্চের অন্য ছয় সদস্য হলেন: বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি এস এম ইমদাদুল হক, বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান, বিচারপতি ফারাহ মাহবুব
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সম্বলিত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে ২০১১ সালের ১০ মে রায় দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ। দীর্ঘ ১৪ বছর পর, গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে এই রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়।
রিভিউ আবেদনটি করেন সুজন-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন বিশিষ্ট নাগরিক। পরবর্তীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও পৃথক রিভিউ আবেদন করেন।
গত ২১ আগস্ট থেকে শুরু হয়ে মোট ১০ কার্যদিবস ধরে এই রিভিউ আবেদনের শুনানি চলে। শুনানি শেষে গত ১১ নভেম্বর আদালত রায়ের জন্য ২০ নভেম্বর তারিখ নির্ধারণ করেন।
আদালতে আইনজীবীদের অবস্থান শুনানিতে রিটকারীদের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন ড. শরীফ ভূঁইয়া। বিএনপির পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও রুহুল কুদ্দুস কাজল এবং জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে ছিলেন শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।
আইনি ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে যুক্ত করা হয়। ২০০৪ সালে হাইকোর্ট একে বৈধ ঘোষণা করলেও ২০১১ সালে আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে তা বাতিল করেন। এর পরপরই তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চূড়ান্তভাবে বিলুপ্ত করে।
