ফিলিস্তিনি বন্দিদের জন্য ‘কুমির-ঘেরা কারাগার’ তৈরির প্রস্তাব ইসরায়েলি মন্ত্রীর
ফিলিস্তিনি মুসলমানদের প্রতি ইসরায়েলি নেতৃত্বের বিদ্বেষমূলক মনোভাবের আরেকটি ভয়াবহ নজির সামনে এসেছে। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ও চরম ডানপন্থি নেতা ইতামার বেন-গভির ফিলিস্তিনি বন্দিদের জন্য ‘কুমির-ঘেরা আটক কেন্দ্র’ তৈরির প্রস্তাব দিয়েছেন।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) ইসরায়েলের স্থানীয় গণমাধ্যম চ্যানেল ১৩ এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বেন-গভিরের এই ‘অস্বাভাবিক ও চরমপন্থি প্রস্তাব’ ইতোমধ্যে খতিয়ে দেখছে ইসরায়েল প্রিজন সার্ভিস (আইপিএস)। প্রস্তাব অনুযায়ী, বন্দিদের পালানোর সুযোগ বন্ধ করতে কারাগারের চারপাশে কুমির রাখা হবে।
চরম ডানপন্থি জিউইশ পাওয়ার পার্টির নেতা বেন-গভির গত সপ্তাহে ইসরায়েল প্রিজন সার্ভিসের প্রধান কমিশনার কোবি ইয়াকোবির সঙ্গে এক বৈঠকে এই পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। প্রস্তাবিত কারাগারটির অবস্থান নির্ধারণ করা হয়েছে উত্তর ইসরায়েলের হামাত গাদার এলাকায়, যা দখলকৃত সিরীয় গোলান মালভূমি ও জর্ডান সীমান্তসংলগ্ন। ওই এলাকায় বর্তমানে একটি কুমির খামার ও চিড়িয়াখানা রয়েছে।
এদিকে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই ইসরায়েলি সংসদ নেসেটে বেন-গভিরের আরেকটি বিতর্কিত বিলের ওপর ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ওই বিলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা বা অংশগ্রহণের অভিযোগে অভিযুক্ত ফিলিস্তিনি বন্দিদের জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গত ১১ নভেম্বর বিলটি নেসেটে প্রথম দফায় অনুমোদন পায়। আইন হিসেবে কার্যকর হতে হলে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় পাস প্রয়োজন।
বর্তমানে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে ৯ হাজার ৩০০’র বেশি ফিলিস্তিনি বন্দি রয়েছে, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তথ্যমতে, এসব বন্দির ওপর নিয়মিত নির্যাতন, অনাহার এবং চিকিৎসা অবহেলার কারণে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
গাজায় চলমান গণহত্যামূলক আগ্রাসনের প্রেক্ষাপটে ফিলিস্তিনি বন্দিদের ওপর এই নিপীড়ন আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন ৭০ হাজার ৯০০’র বেশি মানুষ। আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৭১ হাজার ২০০ জন। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে উপত্যকার প্রায় পুরো অবকাঠামো—যেখানে নিহতদের বড় একটি অংশই নারী ও শিশু।
বিপি/আইএইচ