একের পর এক ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ ইরানের
ইরানের ইসলামিক বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) নৌবাহিনী দেশটির অভ্যন্তরীণ অঞ্চল থেকে একের পর এক ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। যা অত্যন্ত নিখুঁতভাবে ওমান সাগরে নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত ‘ইক্তেদার’ (ক্ষমতা) কোড নামে তাদের বৃহৎ মহড়ার দ্বিতীয় ধাপে এসব ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়।
দেশটির গভীর অঞ্চল থেকে একাধিক স্থানে একইসঙ্গে কাদির–১১০, কাদির–৩৮০, কাদিরসহ বিভিন্ন ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ৩০৩ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়।
সবগুলোই নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে আঘাত হেনেছে।
একই সময়ে অংশ নেওয়া ড্রোন ইউনিটগুলো শত্রু ঘাঁটির সিমুলেশন লক্ষ্য করে সফল হামলা পরিচালনা করে এবং নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করে।
মহড়ার অন্য অংশে আইআরজিসি নৌবহরের জাহাজে মোতায়েন করা আকাশ–প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তীব্র অনুশীলন চালায় শত্রু বিমানের বিরুদ্ধে—যেসব বিমান, মহড়া–চিত্রনাট্য অনুযায়ী, ইরানের দ্রুতগতির নৌকা ও উপকূলীয় অঞ্চলকে লক্ষ্য করে আক্রমণের চেষ্টা করছিল।
এই বৃহৎ মহড়ার মূল লক্ষ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে—যুদ্ধ–ব্যবস্থার সহনশীলতা যাচাই ও শত্রুর ইলেকট্রনিক যুদ্ধ সক্ষমতা মোকাবিলার প্রস্তুতি মূল্যায়ন।
মহড়া বৃহস্পতিবার শুরু হয়। প্রথম দিনেই নৌ ইউনিটগুলো অঞ্চলে উপস্থিত আমেরিকান জাহাজগুলোকে সতর্কবার্তা দিয়ে তাদের কঠোর বার্তা পৌঁছে দেয়।
মহড়াটির কোডনেম শহীদ মোহাম্মদ নাজেরি। এটি পারস্য উপসাগর, নাজেআত সামুদ্রিক অঞ্চল—আবু মুসা, গ্রেটার টুন্ব, লেসার টুন্ব ও সিরি দ্বীপপুঞ্জ—হরমুজ প্রণালি ও ওমান সাগরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার প্রথম দিনে নাওয়াব, মাজিদ ও মিসাগহসহ উন্নত আকাশ–প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইলেকট্রনিক যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মোতায়েন করা হয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)–এর সহায়তায় এসব সিস্টেম খুব কম সময়ে আকাশ ও নৌ লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে সক্ষম হয়।
নাজেরি আইআরজিসি নৌবাহিনীর এলিট কমান্ডো ইউনিটের কমান্ডার ছিলেন। তিনি ২০১৬ সালের ১২ জানুয়ারি ইরানের জলসীমায় ঢুকে পড়া ১০ জন মার্কিন নাবিক—নয় পুরুষ, এক নারী—গ্রেপ্তারের ঘটনায় সরাসরি ভূমিকার জন্য ইরানে ব্যাপক পরিচিত।
এই মহড়া দ্বিমুখী বার্তা বহন করে—প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য শান্তি ও বন্ধুত্বের বার্তা, আর শত্রুদের জন্য কঠোর সতর্কবার্তা যে, কোনো ভুল হিসাব করলে তার জবাব হবে দৃঢ় ও কঠোর।
ইরানি নৌবাহিনী নিয়মিতভাবে পারস্য উপসাগর ও ওমান সাগরে বৃহৎ মহড়া চালায়, যা তাদের সামরিক সক্ষমতা প্রদর্শন ও বিদেশি শক্তিকে প্রতিরোধের সংকেত হিসেবে বিবেচিত। সূত্র: প্রেস টিভি
