ট্রাম্পের ‘রাজনৈতিক নেতৃত্বের সমাপ্তি’র হুঁশিয়ারি মাদুরোর
যুক্তরাষ্ট্র সামরিক হস্তক্ষেপ করলে তা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য ‘রাজনৈতিক নেতৃত্বের করুণ সমাপ্তি’ ডেকে আনবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে মাদুরো দাবি করেন, ট্রাম্পকে ঘিরে থাকা কিছু শক্তিশালী মহল ইচ্ছাকৃতভাবে ভেনিজুয়েলাকে অজুহাত বানিয়ে তাকে সামরিক সংঘাতে ঠেলে দিচ্ছে।
তার মতে, এটি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সাজানো একটি ‘উত্তেজনা সৃষ্টি পরিকল্পনা’, যা ট্রাম্পকে ‘রাজনৈতিকভাবে খাদের কিনারায়’ নিয়ে যাবে। খবর বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।
নিকোলাস মাদুরো বলেন, শক্তিশালী মার্কিন মহল ট্রাম্পকে ধ্বংস করতে চাইছে। তারা চান ট্রাম্প তার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুলটি করুক—ভেনিজুয়েলার বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিক। সেটিই হবে তার নেতৃত্বের শেষ।
তিনি বলেন, এই উসকানি শুধু ট্রাম্পের প্রকাশ্য প্রতিপক্ষদের কাছ থেকে নয়, বরং তার আশেপাশে থাকা কিছু লোকের কাছ থেকেও আসছে, যারা ‘ট্রাম্প-পরবর্তী সময়ের হিসাব–নিকাশ’ করছে। মাদুরো স্বীকার করেন যে তিনি জানলেও এসব ব্যক্তির নাম প্রকাশ করতেন না।
মাদুরো জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘সরাসরি সংলাপ’ করতে ভেনিজুয়েলা প্রস্তুত। তার মতে, কূটনীতি ও আলোচনা তাদের সরকারের স্থায়ী অবস্থান।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত ১৬ সপ্তাহ ধরে ওয়াশিংটন ভেনিজুয়েলার বিরুদ্ধে হুমকি, মনস্তাত্ত্বিক চাপ ও নজরদারি চালাচ্ছে। এতে ভেনিজুয়েলার সশস্ত্র বাহিনী আরও সতর্ক ও ঐক্যবদ্ধ হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
এর আগে ট্রাম্প জানিয়েছেন, মাদুরোর সঙ্গে আলোচনা হতে পারে। যদিও পরে তিনি ভেনেজুয়েলার বিষয়ে নেওয়া সিদ্ধান্তের বিস্তারিত জানাননি।
এছাড়া মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ঘোষণা করেছে, ২৪ নভেম্বর থেকে ‘কার্টেল দে লস সোলেস’ নামের একটি গোষ্ঠীকে তারা বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করবে— যা মাদুরোর সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি করে ওয়াশিংটন। তবে ভেনেজুয়েলা এই অভিযোগকে ‘সম্পূর্ণ মনগড়া’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
মূলত, গত আগস্টে ট্রাম্প ক্যারিবীয় সাগরে সামরিক মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়ার পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, তারা মাদক পাচার দমনে এ অভিযান চালাচ্ছে, কিন্তু কারাকাস বলছে— এটি মূলত সরকার পরিবর্তনের চেষ্টা।
এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সমুদ্রে মাদকবাহী বলে দাবি করা ভেনেজুয়েলার জাহাজে ২১ বার হামলা চালিয়েছে। এতে কমপক্ষে ৮৩ জন নিহত হয়েছে। ট্রাম্প বলেছেন, প্রয়োজনে ভেনেজুয়েলার ভেতরেও হামলা চালানো হতে পারে।
