কালিয়াকৈরে অবহেলায় মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য
গাজীপুরের কালিয়াকৈরের হাইটেক সিটির মূল প্রবেশদ্বারের পাশে, ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়কের ধারে দাঁড়িয়ে আছে মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহ নির্যাতনের প্রতীক—চোখ বাঁধা তিন মুক্তিযোদ্ধার ভাস্কর্য।
নির্মাণের উদ্দেশ্য ছিল ১৯৭১ সালের পাক হানাদার বাহিনীর বর্বরতার স্মৃতি নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই গুরুত্বপূর্ণ শিল্পকর্মটি যেন ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে লোকচক্ষুর আড়ালে।
২০১৬ সালে তৎকালীন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ভাস্কর্যটির উদ্বোধন করেছিলেন। চারপাশে গোলাকার বেদি আর তিন পাশজুড়ে তিনটি মুখাবয়ব—পুরো স্থাপনাটিই একসময় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণের শক্তিশালী প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে আজ এর চারপাশ ধুলাবালিতে ঢেকে গেছে, পর্যাপ্ত আলোকসজ্জাও নেই।
এলাকাবাসীর অনেকে জানান, প্রতিদিন হাজারো মানুষ সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করলেও খুব কম মানুষই জানেন ভাস্কর্যটির উদ্দেশ্য ও ইতিহাস।
স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুল জানান, ‘এটা আমাদের গর্বের নিদর্শন, কিন্তু পরিচর্যার অভাবে গুরুত্ব হারাচ্ছে। নতুন প্রজন্মকে জানাতে হলে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি।’
আরেক বাসিন্দা জানান, ‘১৬ ডিসেম্বরের আগে অন্তত ভাস্কর্যের চারপাশ পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন করার ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’

এ বিষয়ে কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ. এইচ. এম. ফখরুল হোসাইন বলেন, ‘উপজেলার সব স্মৃতিস্তম্ভ ও ভাস্কর্য রক্ষণাবেক্ষণের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বরের আগেই পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন করা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সংশ্লিষ্টদের মতে, শুধু পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা নয়—তথ্যফলক স্থাপন, আলোকসজ্জা ও নিয়মিত সচেতনতামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে এই ভাস্কর্যটি নতুন প্রজন্মের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।
বিপি/ এএস
