সাংবাদিককে হাতুড়িপেটা করলেন পুলিশ কনস্টেবল

Staff Reporter
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৫১ এএম
সাংবাদিককে হাতুড়িপেটা করলেন পুলিশ কনস্টেবল

বরিশালে ফ্ল্যাটে ঢুকে সাংবাদিককে হাতুড়ি দিয়ে বেধরক পিটিয়ে জখম করেছে এক পুলিশ সদস্য। সোমবার (০৮ ডিসেম্বর) রাতে নগরীর গোড়াচাঁদ দাশ রোডে আল জামিয়া মাদ্রাসা দ্বিতীয় তলায় ভাড়া বাসায় এই ঘটনা ঘটে।

গুরুতর আহত সাংবাদিক ফিরোজ মোস্তফা একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের বরিশাল ব্যুরো চীফ হিসেবে কর্মরত। ঘটনার পর ৯৯৯ এ কল দিলে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে নগরীর শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

জানা যায়, পুলিশ সদস্য নাবিদ আনজুম সাংবাদিক ফিরোজ মোস্তফার পূর্ব পরিচিত। সেই সুবাধে ফিরোজের বাসায় আসা যাওয়া ছিল নাবিদের। পুলিশে চাকরি করলেও সে মাদক সেবন এবং অনলাইন ক্যাসিনো চক্রের সাথে জড়িত ছিলো। হঠাৎ করে নাবিদের ই-মেইল আইডি হ্যাক হয়ে যায়। সেই দায় চাপানো হয় ফিরোজ মোস্তফার ওপর। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে শত্রুতার শুরু।

ফিরোজের দাবি তার স্ত্রীর স্পর্শকাতর ছবি চুরি করে সেটি দিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা করে নাবিদ। এর আগেও একবার তাকে শারীরিক নির্যাতন করেছিল নাবিদ এমনটাও দাবি করেন ফিরোজ।

ফিরোজ বলেন, ‘নাবিদ গোপনে আমার মোবাইল ফোন থেকে আমার এবং স্ত্রীর বিশেষ মুহূর্তের কিছু ছবি চুরি করে। সেই ছবি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আমাকে ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা করে। সবশেষ গত ২৫ অক্টোবর রাতে নাবিদ লোকজন নিয়ে ফ্ল্যাটে এসে আমাকে অকথ্যভাবে নির্যাতন করে। ওইদিন থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত আমার এবং আমার স্ত্রীর ছবি ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে আটকে রেখে আমাকে উলঙ্গ করে নির্যাতন এবং ভিডিও ধারণ করে। পরবর্তীতে গত ২ নভেম্বর লোকলজ্জা ভেঙে ৯৯৯-এ কল দিয়ে সহযোগিতা চাই। পরে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে।’

ফিরোজ আরও বলেন, ‘উদ্ধারের পর থানায় গেলেও পুলিশ হওয়ায় নাবিদের বিরুদ্ধে মামলা নেয়নি থানার ওসি। এ কারণে ৩ নভেম্বর বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেই। গত ১৩ নভেম্বর অভিযোগ তদন্ত করার জন্য পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে ডাকেন উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) আবুল কালাম আজাদ। কিন্তু সেখানে বসে পুনরায় হুমকি দেয় কনস্টেবল নাবিদ।’

এ সময় পুলিশের প্রতি অভিযোগের তীর ছুড়ে ফিরোজ বলেন, ‘থানা পুলিশ মামলা না নিলেও কোতয়ালী মডেল থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সাঈদ পক্ষ নেয় নাবিদের। তিনি তদন্তের নামে ফিরোজকে থানায় ডেকে নিয়ে ল্যাপটপ নিয়ে যান। এমনকি টানা দুইবার থানার সাবেক ওসি মিজানুর রহমান মিমাংশার কথা বলে ফিরোজকে ঘুরাতে থাকে। পরে কমিশনার বরাবর অভিযোগ দিলে তারা আরও ক্ষুব্ধ হয়।’

ধারণা করা হচ্ছে সেই ঘটনার ধারাবাহিকতায় সোমবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে কনস্টেবল নাবিদ গোড়াচাঁদ দাশ রোডের বাসায় ঢুকে ফিরোজ মোস্তফাকে হাতুড়ি দিয়ে এলোপাথারি পিটিয়ে রক্তাক্ত করে।

অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল নাবিদ আনজুম বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের আমানতগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত।