জাহানারার অভিযোগের ‘শক্ত’ প্রমাণ পাচ্ছে না বিসিবির তদন্ত কমিটি
বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সাবেক নির্বাচক ও ম্যানেজার মঞ্জুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে জাতীয় দলের ক্রিকেটার জাহানারা আলমের আনা যৌন হয়রানির অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত পাঁচ সদস্যের স্বাধীন তদন্ত কমিটি আগামী ২০ ডিসেম্বর তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে চলেছে। জাহানারা আলম গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছে লিখিতভাবে এই অভিযোগ দায়ের করেন।
বিসিবির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র ইঙ্গিত দিয়েছে যে, ক্রিকেটার জাহানারা আলমের উত্থাপিত অভিযোগগুলোর সপক্ষে তদন্ত কমিটি শক্ত প্রমাণ খুঁজে পেতে হিমশিম খাচ্ছে। অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত—উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে কমিটি তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করছে।
উল্লেখ্য, জাহানারা একজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের ফেসবুক লাইভে প্রথমবার যৌন হয়রানির অভিযোগটি প্রকাশ্যে আনেন। এরপর আরও কয়েকজন নারী ক্রিকেটার একই ধরনের অভিযোগ করলেও, এর আগে কেউ লিখিতভাবে বিসিবিকে কিছু জানাননি। তদন্ত কমিটি বর্তমানে সকলের সঙ্গেই আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। জানা গেছে, অভিযোগ প্রমাণের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যের দৃঢ় প্রমাণ কমিটি খুঁজে পাচ্ছে না।
সূত্রটি আরও জানায়, জাহানারা বিসিবিকে যে ১৩ পৃষ্ঠার লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন, সেখানেও যৌন হয়রানির বিষয়ে সরাসরি কোনো ইঙ্গিত নেই। অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে তদন্ত কমিটি সেই সময়ের মাঠের ভিডিও ফুটেজ, ফোন কল রেকর্ড এবং চ্যাটিংয়ের তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করছে। এছাড়া, জাহানারার ঘনিষ্ঠ খেলোয়াড়দের সঙ্গেও কমিটি কথা বলছে।
এই স্পর্শকাতর সমস্যাটির দ্রুত সমাধান করতে চায় বিসিবি। শুরু দিকে তিন সদস্যের কমিটি গঠিত হলেও, পরে আরও দুজনকে যুক্ত করে এটিকে পাঁচ সদস্যের করা হয়।
গত ৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি তারিক উল হাকিমকে কমিটির আহ্বায়ক করা হয়।
কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন বিসিবির একমাত্র নারী পরিচালক রুবাবা দৌলা এবং সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বাংলাদেশ উইমেন্স স্পোর্টস ফেডারেশনের সভানেত্রী ব্যারিস্টার সারওয়াত সিরাজ শুক্লা।
১২ নভেম্বর কমিটিতে যুক্ত হন বিশিষ্ট আইনজীবী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নাইমা হক এবং বর্তমান বাংলাদেশ আইন কমিশনের সদস্য ব্যারিস্টার মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান খান।
তদন্ত কর্মকর্তারা মনে করছেন, যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তাঁরা ও তাঁদের পরিবার সামাজিকভাবে ব্যাপক চাপের মধ্যে রয়েছেন এবং সম্মানহানির শিকার হচ্ছেন।
