৩০০ ফিটে বিএনপি নেতাকর্মীদের ঢল, উৎসবের আমেজে
দীর্ঘ ১৭ বছর পর আগামীকাল ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে স্মরণীয় করে রাখতে রাজকীয় সংবর্ধনা দিতে রাজধানীর ৩০০ ফিট (পূর্বাচল) এলাকায় তৈরি করা হয়েছে এক সুবিশাল মঞ্চ।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই মঞ্চ তৈরির শেষ মুহূর্তের কাজ এবং সজ্জার প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন হয়েছে।
এদিকে, তারেক রহমানের আগমন উপলক্ষ্যে রাজধানীসহ তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সংবর্ধনা মঞ্চের নির্মাণকাজ শেষ। ব্যানার, পতাকা, তোরণ আর আলোকসজ্জায় সাজানো সমাবেশস্থল। সকাল থেকেই কিশোরগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রংপুর, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতাকর্মীরা মঞ্চ এলাকা পরিদর্শনে আসছেন। অনেকেই সমাবেশের আগের রাত থেকেই মাঠে অবস্থানের প্রস্তুতি নিয়ে এসেছেন। স্লোগান, প্ল্যাকার্ড আর উচ্ছ্বাসে পুরো সমাবেশস্থল যেন ‘উৎসবের আমেজে’ পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
অন্যদিকে, মঞ্চের সামনে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও টহল দিতে দেখা যায়। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনীর একাধিক টিম গাড়িতে করে দফায় দফায় পুরো সমাবেশ এলাকা পরিদর্শন করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ঝুঁকিমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে সমন্বিতভাবে কাজ চলছে।
কুমিল্লা থেকে আসা বিএনপি কর্মী আব্দুল গফুর বলেন, ‘ঈদের মত আনন্দ লাগছে। চার দিন হয়ে গেছে এখানে এসেছি। আরাফাত রহমান কোকোর জানাজাতে আসতে পারিনি। ১৭ বছর পর তারেক রহমান দেশে আসছেন। ইনশাআল্লাহ তিনি আগামী দিনে সরকার গঠন করবেন।’
বগুড়া থেকে আসা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, নেতাকে স্বাগত জানাতে মানুষ যেভাবে আসছে, তাতে মনে হচ্ছে এটা জাতীয় উৎসব। আমরা সবাই প্রস্তুত আছি, যেন পুরো আয়োজন সুন্দরভাবে শেষ হয়। আমাদের কাছে এটা সম্মানের দিন।
চট্টগ্রাম থেকে আসা যুবদলের কর্মী ইলিয়াস হোসেন বলেন, আগামীকাল ঢাকা শহরে এত বড় জমায়েত হবে, যা মানুষ দেখেনি। আমরা শুধু নেতাকে বরণ করতে আসিনি, আমরা প্রমাণ করতে এসেছি—এই নেতৃত্বের পেছনে জনগণ আছে। এত বছর পরেও তার নামেই মানুষ পথে নেমে আসে, এটা সাধারণ ব্যাপার না। এটাই রাজনীতির আসল শক্তি।
জানা গেছে, বিমানবন্দর থেকে বনানী ও কাকলী হয়ে সরাসরি সংবর্ধনা মঞ্চে উঠবেন তারেক রহমান। এই প্রত্যাবর্তনকে স্মরণীয় করতে ৩০০ ফিট এলাকা সংলগ্ন মহাসড়কে নির্মাণ করা হয় বিশাল সংবর্ধনা মঞ্চ। দিন-রাত কঠোর পরিশ্রমে ব্যস্ত শ্রমিকরা। গত রোববার দুপুর থেকেই মঞ্চ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। মঞ্চ বানানো হয়েছে ৪৮-৩৬ ফিট। সংবর্ধনা কমিটির সদস্যরা দিন-রাত তদারকি করে আয়োজনকে পূর্ণতা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আজকে মধ্যে পুরো কাজ শেষ হবে। দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতারা প্রতিদিন খোঁজখবর রাখছেন। সমাবেশ ঘিরে মঞ্চ প্রস্তুতের পাশাপাশি নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুরো এলাকাজুড়ে মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে নিরাপত্তা চৌকি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ৫০ লাখ মানুষের সমাগম হবে বলে আশাবাদ জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও অভ্যর্থনা কমিটির সদস্য সচিব রুহুল কবির রিজভী। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ৩০০ ফিট এলাকায় নির্মিত অভ্যর্থনা মঞ্চ পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন। রিজভী বলেন, ২৫ ডিসেম্বর তারেক রহমান আসবেন। আজকেই আমরা দেখতে পাচ্ছি, বিভিন্ন জেলা থেকে লোক আসা শুরু হয়েছে। সুতরাং ২৫ ডিসেম্বর এখানে মানুষের মহামিলন ও মহামেলায় পরিণত হবে। এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত।