ঢাবির হত্যাকাণ্ড: নৈতিকতা ও শিক্ষার অবক্ষয়

Bangla Post Desk
ড. পল্টু দত্ত
প্রকাশিত:২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩২ পিএম
ঢাবির হত্যাকাণ্ড: নৈতিকতা ও  শিক্ষার অবক্ষয়

দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক নির্মমহত্যাকাণ্ডটি মানবতার সমস্ত বোধকে ভেঙে চুরমার করে দিয়েছেপুরো জাতিটাকেশোকেক্ষোভে বিমূঢ় করে দিয়েছে আমাদের সমাজের নৈতিক অবক্ষয় শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য নিয়ে গভীর প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে সাধারণ সভ্য মানুষেরমাঝে হ্যাঁ আমি সুস্থ সভ্য সমাজের সভ্য মানুষদের কথাই বলছি যারা অসভ্যবর্বর, অমানুষ এবং হিংস্র, তাদের উন্মাদ হিংস্রতায় কিছু যায় আসে না তারাসত্যিকার অর্থে যে কোন সমাজের কলঙ্ক, ঘৃণিত এবং লজ্জাস্কর যে ঘটনাটা ঘটেগেছে কোন সুস্থ সভ্য সমাজে তা ঘটতে পারে না বিশেষ করে সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠেরশিক্ষার্থীরা যখন অসভ্য হিংস্র হয়ে নারকীয় হত্যাকাণ্ডে লিপ্ত হয় তখন মহানসৃষ্টিকর্তাও শিউরে উঠেন এরা পুরো শিক্ষা সমাজের লজ্জা এরা সত্যিই কিশিক্ষার্থী নাকি অসভ্য দানব! সারা বিশ্ব আজ অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে আছে।একজন মানসিকভাবে অসুস্থ মানুষ, তোফাজ্জল হোসেন, ছাত্রদের হাতে চোরসন্দেহে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেন এই ঘটনা শুধু একটিহত্যাকাণ্ড নয় এটি আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার নৈতিক সংকটের প্রতীক জ্ঞানঅর্জনের বদলে এই সব শিক্ষার্থীরা হিংস্র জানোয়ারের মতো আচরণ করছে যখনশিক্ষার মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত মানবিকতা, নৈতিকতা এবং ন্যায়বোধ শেখানো, তখন এমন একটি ঘটনার পর আমাদের ভাবতে হয়শিক্ষা কীভাবে নৈতিকচরিত্র গঠনে ব্যর্থ হচ্ছে? সমাজের সবচেয়ে শিক্ষিত শ্রেণি, যাদের দায়িত্ব সমাজকেউন্নতির দিকে নিয়ে যাওয়া তারাই যখন হিংস্র পশুর মতো আচরণ করে এবংআইন নিজের হাতে তুলে নেয়, তখন এটি সমগ্র দেশের জন্য অশনিসংকেত বয়েআনে এই মানুষ-তুল্য বর্বর শিক্ষার্থীরা চোর সন্দেহে তোফাজ্জলকে প্রথমেনির্যাতন করে, তারপর তাকে খাবার খাওয়ায় তারপরের ঘটনা মর্মান্তিক উন্মাদউল্লাসে একের পর এক কয়েকজন দানব শিক্ষার্থী পিটিয়ে মেরে ফেলেতোফাজ্জলকে যা একটি বিকৃত মানসিকতার পরিচয় ভিডিও ফুটেজেতোফাজ্জলকে মারধরের দৃশ্য, রক্তে মাখামাখি অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকা, এবংছাত্রদের নির্মম আচরণ দেখে সাধারণ মানুষের মনে নৈতিকতার সংকট নিয়ে প্রশ্নউঠেছে ভাবতে হয়কোনদিকে এগুচ্ছে বাংলাদেশ?”

এই শিক্ষার্থীদের আচরণকে পৈশাচিক নিষ্ঠুরতার উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করাযেতে পারে, যা অমানবিকতা বিকৃত মনের প্রতিফলন তাদের নির্মম হৃদয়হীনকার্যকলাপ মানুষের মনে নৈতিক অবক্ষয়ের স্পষ্ট চিত্র তুলে ধরেছে ধরনের"হিংস্র উল্লাস" এবং "পাশবিক আচরণ" সমাজের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হয়েদাঁড়িয়েছে শিক্ষার্থীরা যখন নিজেদের জ্ঞান, যুক্তি এবং মনুষ্যত্বের বদলে উন্মত্তদানবের মতো আচরণ করে, তখন সমাজের অগ্রগতি থমকে যায় জাতীর মাথালজ্জায় অবনত হয়ে যায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভয়ে, লজ্জায়, ঘৃণায় ভূলুণ্ঠিতহয় শিক্ষার্থী হল ভবিষ্যতের কর্ণধার তাদের মধ্যে নৈতিকতা মানবিকগুণাবলী থাকাটা অপরিহার্য কিন্তু যখন শিক্ষার আলো তাঁদের মধ্যে সামান্যতমসহমর্মিতা বা ন্যায়বোধও জাগাতে ব্যর্থ হয়, তখন সেই সমাজে কেবল হিংস্রতাএবং অবক্ষয় জন্ম নেয়  শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য কেবলমাত্র পুস্তক-জ্ঞান অর্জন নয়, বরং একজন শিক্ষার্থীর চরিত্র গঠনে সাহায্য করা। যদি শিক্ষা ব্যবস্থা শিক্ষার্থীদেরনৈতিকতা, সহানুভূতি এবং মানবিক গুণাবলীর দিকে মনোযোগ না দেয়, তাহলেসেই শিক্ষা সমাজের কোনও উপকারে আসে না তোফাজ্জল হোসেনের উপরশিক্ষার্থীদের এই নির্দয়তা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার একটি গভীর ত্রুটিরপ্রতিফলন আমাদের সমাজ আজ কোথায় গিয়ে ঠেকেছে তা যদি আমাদেরবোধগম্য না হয় তাহলে একদিন ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের এই দেশটিতেমহাসর্বনাশে মাতম শুরু হবে তাতে সন্দেহ নেই সেইদিন পরিত্রাণের কোন উপায়থাকবে না

 

তাই আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও মানবিক, নৈতিক এবং বাস্তবমুখী হতে হবেশিক্ষার্থীদের শুধু একাডেমিক সফলতা অর্জনের পিছনে দৌড়ানো নয়, বরং তাদেরমধ্যে মানবিক গুণাবলী নৈতিক চরিত্র গঠন করার গুরুত্ব দিতে হবেশিক্ষার্থীদেরকে মানবিক মূল্যবোধ শেখানো না হলে, তারা জ্ঞান অর্জনের পরওপ্রকৃত মানুষ হয়ে উঠতে পারে না শিক্ষার সঙ্গে মূল্যবোধের সমন্বয় ঘটাতে হবেএবং নৈতিক শিক্ষার গুরুত্ব প্রতিটি স্তরে জোর দিয়ে শেখাতে হবে পরীক্ষা নির্ভরশিক্ষা ব্যবস্থায় আনতে হবে আমূল পরিবর্তন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায়আনতে হবে বৈচিত্র্য ন্যায্যতা দেশের বিভিন্ন শিক্ষা ব্যবস্থার পার্থক্যের কারণেশুধুমাত্র পূর্বের ফলাফলের ওপর নির্ভর না করে, শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা দক্ষতাযাচাইয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে এর জন্য ভর্তির ক্ষেত্রে মৌখিক পরীক্ষা বাভারতীয় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা পদ্ধতির মতো একটি পরীক্ষা-নির্ভর এবংসক্ষমতা ভিত্তিক মূল্যায়ন ব্যবস্থা গড়ে তোলা উচিত এতে শিক্ষার্থীরা তাদেরবাস্তব জ্ঞান এবং সমস্যার সমাধান করার ক্ষমতা প্রদর্শনের সুযোগ পাবে, যাপ্রকৃতপক্ষে তাদের মেধা যাচাই করতে সাহায্য করবে জাতীয় ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনা করতে হবে যদি আমরা একটিপ্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে না পারি, তাহলে দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় গুরুতর সমস্যা দেখা দেবে বিভিন্নবিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়ায় বৈষম্য সৃষ্টি হবে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যেওপ্রতিযোগিতার পরিবর্তে বিভক্তি দেখা দেবে ধরনের অগোছালো শিক্ষা ব্যবস্থায়বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সহিংসতা, দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহার বৃদ্ধি পাবে, যাশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মূল আদর্শের পরিপন্থী একীভূত পরীক্ষা পদ্ধতি না থাকলেবিশ্ববিদ্যালয়গুলো শুধুমাত্র ক্ষমতার প্রদর্শনী এবং নৃশংসতার কেন্দ্রে পরিণতহওয়ার ঝুঁকিতে থাকবে, যেখানে প্রকৃত মেধার চেয়ে রাজনৈতিক এবং অন্যান্যঅনৈতিক বিষয় বেশি প্রাধান্য পাবে শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে এবংশিক্ষার্থীদের ন্যায্য মূল্যায়নের স্বার্থে একটি মানসম্পন্ন ভর্তি পরীক্ষা ব্যবস্থাঅপরিহার্য

 

এই হত্যাকাণ্ড আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে, যখন শিক্ষার্থীরা নিজেদেরনৈতিকতার পথ হারিয়ে ফেলে এবং ভিড়ের প্রভাবে হিংস্র হয়ে ওঠে, তখন সেইজাতির অগ্রগতি সম্ভব নয় তাই আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে সব কিছুর আগেগ্রাধিকার দিয়ে বিনির্মাণ করতে হবে পুরোপুরি ঢেলে সাজাতে হবে জাতীরশিক্ষা কাঠামোকে শিক্ষার মাধ্যমে মানবিক নৈতিক শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে, যেন শিক্ষার্থীরা জ্ঞান চরিত্রের সমন্বয়ে সুশিক্ষিত নাগরিক হয়ে উঠতে পারেবন্যতার খোলস ভেঙ্গে সভ্য মনুষ্যত্বে পরিণত হতে পারে বিশ্ববিদ্যালয় একটাসর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ এখানে থাকবে শুধু শিক্ষার্থী অসভ্য বর্বরতার কোন স্থাননেই বিদ্যাপীঠকে দস্যুদের অভয়ারণ্যে পরিণত করা যাবে না সারা জাতী এখনইউদ্ধত মুষ্টিতে বজ্র কণ্ঠে জাগ্রত হতে হবে ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা নিতেহবে। নৈতিকতার প্রশ্নে প্রাচীন দর্শন থেকে সঠিক িক্ষা নিতে হবেপ্রাচীন দর্শনেশিক্ষার মূল লক্ষ্য ছিল নৈতিক মানবিক গুণাবলী অর্জন করা। গ্রিক দার্শনিকসক্রেটিসের মতে, প্রকৃত শিক্ষা কেবলমাত্র জ্ঞানার্জন নয়, এটি একটি আত্মিক নৈতিক উন্নতির প্রক্রিয়া তিনি বিশ্বাস করতেন যে, মানুষের আত্মা বিশুদ্ধ হলেতার চিন্তা কাজ সঠিক পথে পরিচালিত হয় কিন্তু যখন সমাজে নৈতিক শিক্ষাএবং আত্মিক উন্নতির অভাব ঘটে, তখন মানুষ সহজেই সহিংসতার দিকে ঝুঁকেপড়ে এবং ভিড়ের প্রভাবে নিজেদের মানবতা হারিয়ে ফেলে প্রাচীন চীনা দার্শনিককনফুসিয়াস শিক্ষা এবং নৈতিকতা নিয়ে গভীর চিন্তা করেছেন তাঁর মতে, আদর্শশিক্ষা হলো এমন এক প্রক্রিয়া, যা ব্যক্তির চরিত্র গঠনে সহায়ক হয় এবং তাকেসমাজের একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। কনফুসিয়াসেরশিক্ষা দর্শনে নৈতিকতা, শ্রদ্ধা, সামাজিক দায়িত্বের প্রতি মনোযোগ দেওয়াহয়েছে। কিন্তু যখন শিক্ষার্থীরা ধরনের মূল্যবোধ থেকে বিচ্যুত হয়, তখন তারামানবিক গুণাবলী হারিয়ে ফেলে ভারতীয় দার্শনিক শিক্ষক চাণক্যও শিক্ষাকেনৈতিকতার সঙ্গে সম্পর্কিত করেছেন তাঁর মতে, যদি একজন ব্যক্তি শুধুমাত্রএকাডেমিক জ্ঞান অর্জন করে কিন্তু নৈতিক শিক্ষা না পায়, তবে সে সমাজের জন্যক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে চাণক্যের মতে, একজন শিক্ষিত ব্যক্তি তখনই সমাজেপ্রভাবশালী হয়ে উঠতে পারে, যখন সে ন্যায়বিচার, মানবতা সততার সঙ্গে কাজকরে।

 

এখন সময় এসেছে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে পুনর্বিবেচনা করার শিক্ষার্থীদেরশুধুমাত্র একাডেমিক সফলতা নয়, তাদের মধ্যে নৈতিকতা, সহানুভূতি, সামাজিক দায়িত্ববোধ তৈরি করার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে শিক্ষা হতে হবে মানবিকমূল্যবোধের ভিত্তিতেশিক্ষার্থীরা শুধু জ্ঞান অর্জন করেই থেমে না যায়, বরংনৈতিক মানবিক গুণাবলীর মাধ্যমে একজন সত্যিকার মানুষ হয়ে উঠতে পারেআমাদের সমাজে এমন শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যেখানে ভিড়ের ন্যায়বিচারনয়, বরং নৈতিকতা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে মানবিক মূল্যবোধ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ছাড়া কোনও সমাজ বা দেশ এগোতে পারে না ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়ের মতো দেশের সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন ঘটনা সংঘটিত হওয়াখুবই উদ্বেগজনক সাবেক সরকারের পতনের পর থেকে সারা দেশেই এক ধরনেরআইনশৃঙ্খলার অভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে এই ধরনের ঘটনার পর যদি দোষীদেরউপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত না করা হয়, তাহলে সমাজে বিচারহীনতার সংস্কৃতি আরওগভীর হবে এবং সাধারণ মানুষ সরকারের উপর থেকে আস্থা হারাবেঅন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এখনই দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে এবং দোষীদেরআইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে  যাতে ভবিষ্যতেএমন নির্মম ঘটনা আর না ঘটে এবং মানুষ আইন সরকারের প্রতি আস্থারাখতে পারে

 

এই মর্মান্তিক ঘটনা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার প্রকৃত উদ্দেশ্য এবং শিক্ষার্থীদেরনৈতিকতা মানবিক গুণাবলীর ঘাটতি সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তা করতে বাধ্যকরে। শুধুমাত্র একাডেমিক সফলতা বা পরীক্ষার ফলাফলে সীমাবদ্ধ না থেকেশিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য হওয়া উচিত একজন ব্যক্তির চরিত্র গঠন এবং ন্যায়, মানবিকতা সহানুভূতির মূল্যবোধ তৈরি করা। যদি শিক্ষার সঙ্গে নৈতিকতা মানবিক গুণাবলী শেখানো না হয়, তাহলে সমাজের অগ্রগতি থমকে দাঁড়াবে এবংমানুষের মধ্যে ক্রমবর্ধমানভাবে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা তৈরিহবে তাই সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উচিত শিক্ষাব্যবস্থায় নৈতিক মানবিকশিক্ষার উপর আরও জোর দিয়ে এক বাস্তব সন্মত, সময়োপোগী উন্নতমানেরশিক্ষা ব্যবস্থ প্রনয়ন করা, যাতে ভবিষ্যতে এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা আর নাঘটে

লেখক: ড. পল্টু দত্ত

শিক্ষক, গবেষক এবং কলামিষ্ট