শহীদ ওসমান হাদির নামে নলছিটি লঞ্চ ঘাট
জুলাই গণঅভ্যুত্থান–পরবর্তী রাজনীতিতে প্রতিবাদী কণ্ঠের প্রতীক হিসেবে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী শহীদ শরীফ ওসমান হাদির স্মরণে ঝালকাঠির নলছিটির ঐতিহ্যবাহী লঞ্চ ঘাটের নতুন নামকরণ করা হচ্ছে।
নলছিটি লঞ্চ ঘাটের নতুন নাম হবে “শহীদ শরীফ ওসমান হাদি লঞ্চ ঘাট”। বর্তমানে ঘাটটির সংস্কার ও রং করার কাজ চলমান রয়েছে। সব কার্যক্রম সম্পন্ন হলে আগামী ২৭ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে লঞ্চ ঘাটটির উদ্বোধন করবেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ম পরিচালক আব্দুল্লাহিল বাকী।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নলছিটি অঞ্চলের নৌযাত্রীদের নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল যাতায়াত নিশ্চিত করতে লঞ্চ ঘাটটি আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। একই সঙ্গে জাতীয় পর্যায়ে আলোচিত একটি ঘটনার প্রেক্ষাপটে ঘাটটির নামকরণ করা হয়েছে, যাতে এটি শুধু একটি অবকাঠামো নয়, বরং ন্যায় ও প্রতিবাদের চেতনার স্মারক হিসেবেও বিবেচিত হয়।’
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর জুমার নামাজের পর ঢাকার বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন শরীফ ওসমান হাদি। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেও অবস্থার অবনতি হলে তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর রাত ৯টা ৩০ মিনিটে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
নলছিটি পৌর এলাকার বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা জানান, এই নামকরণ নলছিটির ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। এর মাধ্যমে এলাকার মানুষ, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম ন্যায়বোধ, প্রতিবাদ ও নাগরিক অধিকার সম্পর্কে আরও সচেতন হবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
শহীদ শরীফ ওসমান হাদি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার হাড়ীখালী গ্রামের মুন্সি বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তার সক্রিয় ভূমিকা তাকে জাতীয় পর্যায়ে আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে তিনি ইনকিলাব মঞ্চ প্রতিষ্ঠা করে সংগঠনটির মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বক্তব্যে ছিলেন সোচ্চার।
তার শাহাদাতের পর জন্মভূমিতে তার নামে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নামকরণকে নলছিটির মানুষ দেখছেন প্রতিবাদী রাজনীতির প্রতি সম্মান ও ইতিহাসের স্মারক হিসেবে।