দিপুকে হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অনুরোধ ধর্ম উপদেষ্টার
ধর্ম নিয়ে কটুক্তির অভিযোগে ময়মনসিংহে একজন হিন্দু তরুণ দিপু চন্দ্র দাসকে হত্যার পর পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এ কথা জানান।
ধর্ম নিয়ে কটুক্তির অভিযোগে ময়মনসিংহে একজন হিন্দু তরুণ দিপু চন্দ্র দাসকে পিটিয়ে হত্যা করে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, 'আমি ধর্ম উপদেষ্টা হিসেবে এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি এবং এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় গর্হিত কাজ। আমরা কোনো ক্রমে আইন হাতে নিতে দেব না। আইন হাতে নেওয়াটা একটা রাষ্ট্রের সুষ্ঠু পরিচালনার ক্ষেত্রে বড় বাধা এবং আমি আজ সকালেই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে একটা মেসেজ পাঠিয়েছি এবং অ্যাডভাইজার গ্রুপেও কপি দিয়েছি যে আমরা মব জাস্টিস অ্যালাও করবো না। যে বা যারা এই মানুষটাকে পিটিয়ে মেরেছে এবং আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে তাদেরকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য আমি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মহোদয়কে অনুরোধ করেছি।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, 'আইনশৃঙ্খলা এখন সম্পূর্ণ আমাদের নিয়ন্ত্রণে। কিছু ঘটনা যে ঘটছে না এমন নয়, তবে আমরা যতটুকু এই পর্যন্ত এসেছি আমরা আশাবাদী নির্বাচন যথাসময়ে হবে সুষ্ঠু, অবাধ, ইনক্লুসিভ এবংস্বতঃস্ফূর্ততার মাধ্যমে আমরা নির্বাচন করতে পারবো। এই পরিবেশ এখনো বহাল আছে।'
দুই পত্রিকায় আগুন দেওয়ায় জড়িত কয়েকজনের পরিচয় সনাক্ত
দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে আগুন দেওয়া হলো। এখনো মব জাস্টিস বন্ধ হয়নি- বিষয় দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপদেষ্টা বলেন, আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। কথা হচ্ছে যে সব স্থাপনায় আগেভাগে পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করা, এটা তো একটা কঠিন কাজ। কখন কোন দিকে হামলা হয় এটা অনেক সময় আমরা জানতে পারি না। এজন্য আমরা সবসময় এটাকে নিরুৎসাহিত করি।
তিনি বলেন, প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারে যারা আগুন দিয়েছে আমি গোয়েন্দা রিপোর্ট থেকে জানতে পেরেছি তাদের কিছু ছবি, তাদের কিছু পরিচয় আমরা ইতিমধ্যে সনাক্ত করেছি। তাদেরকেও গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য আমরা ব্যবস্থা করেছি।
ছায়ানটে হামলা হয়েছে। শিবিরের কেউ কেউ বলেছে যে এই ধরনের প্রতিষ্ঠান থাকা উচিত না- এ বিষয়ে খালিদ হোসেন বলেন, 'না, কে কি বলল সেটা তো আমাদের এখতিয়ার নয়।
তবে কথা হচ্ছে যে আমরা যেহেতু সরকারে আছি, সরকার অনুমোদিত কোনো প্রতিষ্ঠানে কেউ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিবে অথবা মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করবে, এটা কোনদিন আমাদের কাছে কাম্য নয়। আমরা এটাকে অন্যায় গর্হিত কাজ বলে বিবেচনা করি এবং এদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য আমরা বদ্ধপরিকর।'
প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, ছায়ানটসহ সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে একই রাতে হামলা।
এখানে কি গোয়েন্দা ব্যর্থতা ছিল কিনা-এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'এটা গোয়েন্দা ব্যর্থতা, সরাসরি এভাবে আমার বলাটা উচিত নয়।'
যেহেতু আপনি উপদেষ্টা পরিষদে আছেন এবং জিনিসগুলো আলোচনা করছেন- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, এটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যাপার। তাছাড়া একসাথে কোন প্রতিষ্ঠানে হামলা হবে, এটা আগেভাগে তো জানা মুশকিল। যেমন কালকে আমার কাছে একটা রিপোর্ট আসলো গোয়েন্দা থেকে কাজী নজরুল ইসলামের মাজারের পাশে যখন হাদিকে দাফন করা হবে, পাশে চারুকলা ইনস্টিটিউট আছে। আমরা মুহূর্তের ভিতরে জানিয়ে দিয়েছি গোয়েন্দাদেরকে, রিপোর্ট আছে। আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করার কারণে ওখানে কোন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি।
বিদেশ থেকেও উস্কানি দেয়া হচ্ছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপদেষ্টা বলেন, এখন বাইরে থেকে যদি কেউ কোন মন্তব্য করে এটা তো বাংলাদেশ সরকারের নিয়ন্ত্রণ নাই। এটা তো মেটা এবং ইউটিউব কর্তৃপক্ষ আছে। এটা তো সরাসরি আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। বাংলাদেশের গভর্নমেন্টের ওপর নেই। এখন ওপেন প্ল্যাটফর্ম। মনে করেন বাংলাদেশ থেকেও তো অনেক আমারে প্রতিদিন গালি দেয়।
বিপি/ এএস