সিডনির সৈকতে হামলাকারীরা ভারতীয় ‘উগ্রবাদী’!
অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে বন্ডাই সৈকতে হামলা চালানো দুই বন্দুকধারীর দেশের পরিচয় মিলেছে অবশেষে। পুলিশের গুলিতে নিহত হামলাকারী ভারতের নাগরিক বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্য পুলিশ এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছে।
নিহত হামলাকারী সাজিদ আকরামের (৫০) আদি নিবাস ভারতের হায়দরাবাদ শহরের তেলেঙ্গানা রাজ্যে।
সাজিদ হায়দরাবাদে বাণিজ্য নিয়ে পড়াশোনা করার পর ১৯৯৮ সালের নভেম্বরে কাজের সন্ধানে অস্ট্রেলিয়ায় যান। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয় ও মা-বাবার সঙ্গে দেখা করতে তিনি ছয়বার অস্ট্রেলিয়া থেকে ভারতে গিয়েছিলেন।
তেলেঙ্গানা রাজ্য পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সাজিদ আকরামের ভারতে থাকা পরিবার তাঁর ‘উগ্রপন্থী চিন্তাভাবনা’ সম্পর্কে অবগত ছিল না বলে মনে করা হচ্ছে।
পুলিশ আরও নিশ্চিত করেছে যে সাজিদ ও তাঁর ছেলে নাভিদের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ভারত বা তেলেঙ্গানার স্থানীয় পরিস্থিতির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। ১৯৯৮ সালে তিনি ভারত ছাড়ার আগে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ‘নেতিবাচক’ তথ্য পুলিশের কাছে ছিল না।
হামলাকারী নাভিদ আকরাম ২০১৯ সালের অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ান সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স অর্গানাইজেশনের (এএসআইও) নজরে এসেছিলেন। এএসআই সে সময় তাঁর মধ্যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের তাৎক্ষণিক কোনো হুমকি খুঁজে পায়নি।
এদিকে অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ জানিয়েছে, হামলার আগে সাজিদ ভারতীয় পাসপোর্ট এবং তাঁর ছেলে নাভিদ অস্ট্রেলিয়ান পাসপোর্ট ব্যবহার করে গত মাসে ফিলিপাইন সফর করেছিলেন। এই সফরের উদ্দেশ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তকারীরা যাচাই করছেন যে তারা কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কি না, অথবা ফিলিপাইনে কোনো প্রকার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছিলেন কি না।
বন্ডাই বিচে গত মঙ্গলবার দুজন হামলাকারীর ছয়টি বন্দুক নিয়ে করা সেই হামলায় ১৬ জন নিহত ও ৪০ জন আহত হয়েছেন।
হামলাকারীদের গুলিতে ১০ থেকে ৮৭ বছর বয়সী ১৫ জন নিহত হয়েছেন। আর পুলিশের গুলিতে নিহত হামলাকারীকে ধরে সেই সংখ্যাটা দাঁড়ায় ১৬ জনে। আহত ৪০ জনের মধ্যে চারটি শিশু ও দুজন পুলিশ অফিসার রয়েছেন।
এই হামলাকে অস্ট্রেলিয়ার গত প্রায় ৩০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী বন্দুক হামলা হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। ঘটনার পর পরই ইহুদি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিষয়টি মাথায় রেখে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।