ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি নিয়ে বিভ্রান্তি ও আইনি প্রক্রিয়া সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত


ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ (BOT) এবং প্রশাসন নিয়ে সম্প্রতি কিছু বিভ্রান্তিকর তথ্য ও অপপ্রচার ছড়ানো হয়েছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ও ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। আজ (৩ জুলাই) রাজধানীর গাবতলীতে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান আহমেদ ফরহাদ খান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার এস এম যুবায়ের এনামুল করিমের পরিচালনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সঠিক ও আইনসম্মত অবস্থানটি সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান আহমেদ ফরহাদ খান বলেন, আমার পিতা, মো. মকবুল আহমেদ পূর্ববর্তী বোর্ড অব ট্রাস্টিজ (BOT) থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। এরপর আমরা একটি নতুন বোর্ড অব ট্রাস্টিজ গঠন করি এবং সেটি যথাযথভাবে RJSC (Registrar of Joint Stock Companies and Firms)-তে দাখিল করি। RJSC থেকে আমরা রেকর্ডেড কপি পাই, পাশাপাশি এনএসআই ক্লিয়ারেন্সও গ্রহণ করি। উপরন্তু, আমরা এইসংশ্লিষ্ট কাগজপত্র ইউজিসিতে (University Grants Commission)-তেও জমা দিয়েছি। সুতরাং, বর্তমানে গঠিত বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এবংএর চেয়ারম্যান সম্পূর্ণ বৈধ ও আইনসম্মতভাবে অনুমোদিত।
অপপ্রচার ও মিথ্যা মামলা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় আহমেদ ফরহাদ খানের পিতা মো. মকবুল আহমেদের চারপাশে কিছুস্বার্থান্বেষী ব্যক্তি – যারা দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে বিভ্রান্ত করে নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেছে। এই প্রেক্ষাপটে, তিনি ঢাকার যুগ্ম জেলা জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন, যেখানে তিনি নিজের পূর্বের পদত্যাগকে অবৈধ ঘোষণা ও নতুন বোর্ড অব ট্রাস্টিজ গঠনের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। বর্তমানে মামলাটি আদালতে বিচারাধীন।
আইনি প্রক্রিয়ায় নিজেদের পক্ষে রায় নিয়ে আহমেদ ফরহাদ খান বলেন, তিনি আমাদের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ-এর বিরুদ্ধে একাধিক নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন প্রথমে যুগ্ম জেলা জজ আদালতে দায়ের করা তাঁর আবেদন খারিজ হয়। পরে জেলা জজ আদালতে আপিল করলেও সেখানেও তাঁর আবেদন খারিজ হয়। অত:পর হাইকোর্টে সিভিল রিভিশন দায়ের করলে, হাইকোর্ট শুধুমাত্র রুলজারি করে এবং স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেয়। আমরা এই আদেশ সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে চ্যালেঞ্জ করি এবং আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে। অর্থাৎ, এখন পর্যন্ত আদালতের প্রতিটি সিদ্ধান্তই আমাদের অনুকূলে এসেছে। বর্তমানে মামলাটি হাইকোর্টে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। তাই বোর্ড অব ট্রাস্টিজ গঠন ও চেয়ারম্যান নিয়োগ বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে বিচারাধীন, এবং এতে কারো হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই।
বিভিন্ন অভিযোগের ভিক্তিতে তিনি বলেন, আমরা বিগত ৮ মাস ধরে আইনানুগভাবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। অথচ আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে, তা প্রায় ১৫ বছর আগের ঘটনা, যখন আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সাথে কোনোভাবেই জড়িত ছিলামনা।
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, এই অভিযোগগুলো মূলত আহমেদ ফরহাদ খানের পিতা মো. মকবুল আহমেদের দ্বারা নিযুক্ত কিছু বহিরাগত লোকজনের দ্বারা পরিচালিত, যাদের একমাত্র উদ্দেশ্য হলো বিশ্ববিদ্যালয়ে অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা। বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান আহমেদ ফরহাদ খান ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সকল গণমাধ্যমকর্মীরা যেন সঠিক তথ্য যাচাই করে প্রচার করেন এবং বিভ্রান্তিকর অপপ্রচারে যুক্ত না হোন সেই আহ্বান জানান।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।