জানা গেল সাজিদের মৃত্যুর কারণ

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:২০ পিএম
জানা গেল সাজিদের মৃত্যুর কারণ
ছবি: সংগৃহীত
রাজশাহীর তানোর উপজেলায় টানা ৩২ ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর উদ্ধার অভিযান শেষে ৫০ ফুট গভীর গর্ত থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা শিশু সাজিদকে বাঁচানো যায়নি। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত ৯টা ৫০ মিনিটে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

চিকিৎসক ডা. বার্নাবাস হাসদা জানান, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। দীর্ঘসময় গর্তে আটকে থাকার কারণে অতিরিক্ত ঠাণ্ডা ও অক্সিজেনের অভাবেই তার মৃত্যু ঘটে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমরা রাত ৯টায় শিশুটিকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করেছি। দ্রুত হাসপাতালে পাঠানোর পর জানতে পারি তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা তার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, পাইপটির ব্যাস ছিল মাত্র ৬ থেকে ৮ ইঞ্চি। ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই স্থানীয় লোকজন আবেগের বশবর্তী হয়ে উদ্ধারের চেষ্টা করায় হিতে বিপরীত হয়েছে। তাদের চেষ্টার ফলে পাইপের ভেতরে প্রচুর মাটি ও খড়কুটো পড়ে যায়, যার কারণে শিশু সাজিদ মাটির নিচে চাপা পড়ে।

জানা গেছে, গর্ত খননকারীর নাম কছির। ঘটনার পর তিনি পালিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ শিশু সাজিদের মা রুনা খাতুনের।

এদিকে, মৃত্যুর ঘটনায় গর্ত খননকারীর শাস্তি চেয়েছেন শিশুটির মা রুনা খাতুন। ছেলের মৃত্যুর পর তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, তিন জায়গা খুঁড়েছিল। দুই বছর ধরে বন্ধ না করে গর্তগুলো এভাবে ফেলে রেখেছে। কেন ফেলে রেখেছে? আমি কছিরের শাস্তি চাই, তার বিচার চাই। ঘটনার পর কছির একবার দেখতে এসেছিলেন। তারপর আর আসেননি। তিনি পালিয়ে গেছেন।

এদিকে ছেলের গর্তে আটকে পড়ার ঘটনায় বাবা রাকিবুল ইসলাম উন্মাদপ্রায়। তিনি কখনো মৌন, কখনো বিলাপ করছেন। কারো সাহায্য ছাড়া দাঁড়াতে পারছেন না। 

তানোর থানার ওসি শাহীনুজ্জামান বলেন, ‘আমরা ডিপের খননকারী কছিরকে পাইনি। এ বিষয়ে তদন্ত চলমান।’
 
এদিকে,  শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই গ্রামে নিজ বাড়ির পাশে সাজিদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে এলাকার হাজারো মানুষ অংশ নেন। জানাজা পড়ান স্থানীয় মাওলানা কাজী মিজানুর রহমান। এ সময় তিনিসহ অনেকেই বক্তব্য দেন। তাঁরা অবহেলাজনিত এ ধরনের মৃত্যু যেন আর না হয়, সে জন্য সবাইকে সাবধান হতে পরামর্শ দেন।
 
বিপি/আইএইচ