রুমিন ফারহানাকে ছাড়া অন্য কাউকে মনোনয়ন দিলে জামানত হারাবেন, হুঁশিয়ারি নেতাকর্মীদের

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:০৬ নভেম্বর ২০২৫, ০১:০৫ এএম
রুমিন ফারহানাকে ছাড়া অন্য কাউকে মনোনয়ন দিলে জামানত হারাবেন, হুঁশিয়ারি নেতাকর্মীদের

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষিতে বিএনপি ২৩৭টি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ-বিজয়নগর একাংশ) আসনের কোনো প্রার্থী এখনও ঘোষণা করা হয়নি, যা এ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার অনুসারীদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে।

বিএনপির জন্য ঐ আসনটি দীর্ঘদিনের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। ১৯৭৩ সালের পর, ২০২৩ সালের উপনির্বাচন ছাড়া, এখানে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হননি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে জোটের অংশ হিসেবে জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ায় সেখানে আওয়ামী লীগ নিজস্ব প্রার্থী দেয়নি।

সোমবার বিকালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৩৭টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনটি ফাঁকা রাখা হয়েছে, গুঞ্জন রয়েছে এটি জোটের শরিকদের দেওয়া হতে পারে।

তবে রুমিন ফারহানা ছাড়া অন্য কাউকে মনোনয়ন দিলে তার অনুসারীরা আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সরাইলের স্থানীয়রা মনোনয়ন না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন।

জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে থেকেই ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক হিসেবে মাঠে সক্রিয়। নিয়মিত গণসংযোগ এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীরা প্রায়ই জয়ী হয়েছেন।

২০০৮ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক দলের প্রার্থী মুফতি ফজলুল হক আমিনী আওয়ামী লীগের শরিক দলের প্রার্থী জাতীয় পার্টির কাছে পরাজিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে একই আসনে বিএনপি জোটের প্রার্থী হিসেবে মুফতি আমিনীকে নির্বাচনে দাঁড় করায়, যিনি পরে জোটের এমপি নির্বাচিত হন। এই কারণে অঞ্চলটি দীর্ঘ সময় উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

সরাইল উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা বলছেন, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার ব্যাপক জনপ্রিয়তা থাকায় জোটের অন্য কোনো প্রার্থীকে মনোনয়ন দিলে রুমিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে জোটের প্রার্থী জামানত হারাতে পারেন। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমনটাই ঘটেছিল। আসনের ৭০ শতাংশ নেতা-কর্মী রুমিনের পক্ষে থাকবেন বলে তারা আশ্বাস দিচ্ছেন।

রুমিন ফারহানা ২০১৭ সাল থেকে এলাকার মানুষের সঙ্গে যুক্ত থেকে তাদের পাশে থেকে আসছেন। ২০২৩ সালের উপনির্বাচনে তিনি দলের বিপরীতে নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থী আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে সমাবেশ করেছেন। এ কারণে তাকে নানা হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিষয়টি সম্পর্কে অবগত এবং সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবেন।

রুমিন ফারহানার অনুসারীরা আশঙ্কা করছেন, যদি তাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হয়, আসনটি হাতছাড়া হতে পারে। ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে তার বাবা, ভাষাসংগ্রামী অলি আহাদ, প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন; তবে বিতর্কিতভাবে প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের তাহের উদ্দিন ঠাকুরকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।