স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ার জেরে ছেলেকে বাংলাদেশ সীমান্তে রেখে পালালেন বাবা
স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ার পর ক্ষোভে নিজের ১০ বছর বয়সী ছেলেকে বাড়ি থেকে দূরে বাংলাদেশ সীমান্তে ফেলে রেখে পালিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের এক বাবা। রাজ্যের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বসিরহাট সীমান্ত এলাকায় এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে বলে বুধবার জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মঙ্গলবার গভীর রাতে ওই ব্যক্তি বাড়ি থেকে অনেক দূরে সীমান্ত এলাকায় ছেলেকে রেখে পালিয়ে যান। পরে আতঙ্কে কান্নাকাটি শুরু করলে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে শিশুটিকে সান্ত্বনা দেন এবং বসিরহাট থানায় খবর দেন।
পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটিকে থানায় নিয়ে যায় এবং তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ১০ বছর বয়সী শিশুটির বাড়ি উত্তর চব্বিশ পরগনার আশোকনগর থানার কাঠপোল এলাকায়।
স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, শিশুটির বাবা পিন্টু ঘোষ ও মা মাধবী ঘোষের মধ্যে প্রায়ই পারিবারিক কলহ লেগে থাকত। সম্প্রতি তাদের মধ্যে তীব্র বিবাদের পর মাধবী ঘোষ বাবার বাড়িতে চলে যান এবং ছেলেকে শ্বশুরবাড়িতে রেখে যান। কয়েক দিন পর মঙ্গলবার রাতে পিন্টু ঘোষ ছেলেকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে যান—তার দাবি, ছেলেকে মায়ের কাছে পৌঁছে দিতেই সেখানে গিয়েছিলেন।
কিন্তু ছেলেকে নিতে অস্বীকৃতি জানান মা মাধবী ঘোষ। এ নিয়ে তাদের মাঝে ব্যাপক বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে ছেলেকে নিয়ে সীমান্ত এলাকার দিকে চলে যান পিন্টু ঘোষ। পরে বাড়ি থেকে দূরের এক সীমান্ত গ্রামের কাছে ছেলেকে একা রেখে পালিয়ে যান পিন্টু ঘোষ।
পুলিশ বলেছে, ছেলের পোশাকের ব্যাগ নিয়ে তিনি মোটরসাইকেলে করে বসিরহাট সীমান্তের দিকে রওনা দেন। সীমান্তের কাছাকাছি পৌঁছে ছেলেকে নামিয়ে দেন। তারপর অন্ধকারের মাঝে গাড়ি ঘুরিয়ে দ্রুত চলে যান তিনি।
বাবার এমন আচরণে হতভম্ব হয়ে পড়ে ছোট ছেলেটি। অচেনা জায়গায়, ঠাণ্ডায় রাতের অন্ধকারে ভয়ে কাঁপতে থাকে সে। তার কান্নার শব্দ শুনে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং তাকে সান্ত্বনা দেন। পাশাপাশি বসিরহাট থানায় খবর দেন স্থানীয়রা। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিশুটিকে খাবার দেয় ও বাড়ির ঠিকানা জানতে চায়।
শিশুটি নিজের বাড়ির ঠিকানা জানায়। পরে পুলিশ তাকে নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দেয় এবং তার বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে। বসিরহাট জেলা পুলিশের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বলেছেন, ছেলেটিকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তার বাবা-মাকে ডেকে দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
