এসএসসি: মেয়ের ভালো ফলেও মুখে হাসি নেই রিকশাচালক বাবার


বাবা পেশায় রিকশাচালক, নাম আবদুল কাদের। আর তার মেয়ে কোহিনুর আক্তার—এবার এসএসসি পরীক্ষায় কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার উত্তরদা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
তবুও মেয়ের এই অসাধারণ সাফল্যে আনন্দ নেই বাবার চোখে-মুখে। কারণ, মেয়েকে আর লেখা পড়া করাতে পারবেন কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তিনি। এ অবস্থায় বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন বাবা আবদুল কাদের।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, লাকসাম উপজেলার গ্রামের একটি স্কুল উত্তরদা উচ্চ বিদ্যালয়। তার থেকে দুই কিলোমিটার দূরে খিলপাড়া গ্রাম। সেই গ্রামের আবদুল কাদের ও রেহানা বেগম দম্পতির ২ মেয়ে ১ ছেলের মধ্যে কোহিনুর মেজ। সে পঞ্চম শ্রেণিতে বৃত্তি পেয়েছে। ৭ম থেকে তার ক্লাস রোল এক।
কোহিনুর আক্তার বলেন, ‘বাবার তেমন সামর্থ্য নেই। দুপুরে খাবারের জন্য কিছু টাকা পেতাম। তা দুই মাস না খেয়ে জমিয়েছি। সেই টাকা দিয়ে এক মাস প্রাইভেট পড়েছি। পরে টাকা না থাকায় আর প্রাইভেটে যাইনি। এদিকে কতদিন দুপুরে কিছু না খেয়ে থাকা যায়? পরে প্রাইভেটে না যাওয়ায় স্যাররা কারণ জানতে চান। টাকা না থাকার কথা বলায় তারা বিনামূল্যে পড়িয়েছেন। আল্লাহর রহমত,বাবার মা‘র দোয়া আর স্যারদের সহযোগিতা এ রেজাল্ট পেয়েছি। ভবিষ্যতে চিকিৎসত হতে চাই। কারণ আমার গ্রামে একটি মাত্র ফার্মেসি আছে। কেউ অসুস্থ হলে দূরে লাকসাম নিতে হয়। চিকিৎসক হয়ে গ্রামের মানুষের সেবা করতে চাই।’
আবদুল কাদের বলেন, ‘আমার যে আয় তা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন, সেখানে কিভাবে মেয়েকে আরও পড়ালেখা করাবো তা নিয়ে টেনশনে রয়েছি। সহযোগিতা পেলে মেয়েটিকে আরও পড়াতে পারবো।’
উত্তরদা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. মাসুদুল হক বলেন, ‘কোহিনুর মেধাবী শিক্ষার্থী। সে মোট ১১৯৩ নম্বর পেয়ে এসএসসি পাশ করেছে। তার বাবার পক্ষে মেয়ের লেখাপড়ায় যোগান দেওয়া দুষ্কর। সে সহযোগিতা পেলে দেশের গৌরব বৃদ্ধি করবে।’