মায়ের কোল থেকে মেয়েকে ছিনিয়ে নিয়ে বিক্রির অভিযোগ বাবার বিরুদ্ধে

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:০৭ মে ২০২৫, ১০:৩১ এএম
মায়ের কোল থেকে মেয়েকে ছিনিয়ে নিয়ে বিক্রির অভিযোগ বাবার বিরুদ্ধে

ফরিদপুরে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে নির্যাতন করে মৌখিকভাবে তালাক দেওয়ার পর ৮ মাসের শিশু মেয়েকে ছিনিয়ে নিয়ে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে। 

এ ঘটনা ঘটেছে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ফুলসূতী ইউনিয়নের রামপাশা গ্রামে। মেয়েকে ফিরে পেতে থানা পুলিশ থেকে শুরু করে আদালতে দ্বারস্থ হয়েছেন মা পপি বেগম। আদালত পুলিশকে নির্দেশ দিলেও  শিশুটিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গত বছরের ৯ ডিসেম্বর শিশুটিকে ফিরে পেতে ফরিদপুরের এক নম্বর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন শিশুর মা পপি বেগম। 

ওই মামলায় স্বামী কাইয়ুম বিশ্বাস (৪০), তার তিন বোন মিতা আক্তার, বুলি বেগম, সাগরী আক্তারসহ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করেছেন শিশুটির মা।

মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত গত ১৯ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য প্রতিবেদনসহ নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বরাবর সার্চ ওয়ারেন্ট ইস্যু করেন।

মঙ্গলবার (৬ মে) নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ সফর আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, আদালত আমাদের কাছে প্রতিবেদন চেয়েছে, সে অনুযায়ী কাজ চলছে। কিন্তু অভিযোগে বাচ্চাটি বিক্রির যে ঠিকানা দেয়া হয়েছে, সেখানে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। শিশুটিকে খুঁজে পেলে আদালতে পাঠিয়ে দেয়া হবে। আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মা অথবা বাবার কাছে ওই শিশুটিকে পাঠিয়ে দেয়া হবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,  তিন বছর আগে মুকসুদপুর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের হান্নান সরদারের মেয়ে পপি বেগমের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী নগরকান্দা উপজেলার ফুলসুতি ইউনিয়নের রামপাশা গ্রামের মানিক বিশ্বাসের ছেলে কাইয়ুম বিশ্বাসের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো। এরইমধ্যে তাদের একটি মেয়ে শিশুর জন্ম হয়। পরবর্তীতে গত পাঁচ মাস আগে কলহের জের ধরে তাদের তালাক হয়।

ভুক্তভোগী পপি বেগম জানান, তালাকের সময় জোর করে তার শিশু তানহাকে কোল থেকে কেড়ে নিয়ে যান স্বামী। পরে তার স্বামী ওই শিশুকে একই উপজেলার শাখরাইল গ্রামের কুবাদ শেখের মেয়ে কহিনুর বেগমের কাছে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করেন। আর এই বিক্রির মধ্যস্থতা করেন নগরকান্দার দলিল লেখক আলমগীর তালুকদার।

পপি বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার বাচ্চাডারে দেখবার জন্য রাতে ঘুম হয় না, খাবার পারি না। আমার কলিজাডা শুকায় গেছে। যার কাছে মেয়েকে বিক্রি করা হয়েছে তার মায়ের পা পর্যন্ত জড়ায় ধরছি, তবুও দেখতে দেয় নাই।’

ঘটনাটি নিয়ে কাইয়ুম বিশ্বাসের বোন মিতা আক্তারের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলে অপর একজন রিসিভ করে মিতার স্বামী পরিচয় দেন এবং ব্যস্ত আছেন বলে কেটে দেন।

এ দিকে শিশুটির বাবা কাইয়ুম বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া সম্ভব হয়নি।