জাবিতে মধ্যরাতে উচ্চশব্দে গান, বন্ধ করতে বলায় প্রক্টরকে হুমকি
জাবি সংবাদদাতা
ঢাকা
প্রকাশিত:০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:১৪ পিএম
ছবি- বাংলাপোষ্ট
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের আয়োজনে এক বিচার গানের আসরে মধ্যরাত পর্যন্ত উচ্চশব্দে গান বাজানোর অভিযোগ ওঠে। শব্দ কমানো ও অনুষ্ঠান দ্রুত শেষ করার অনুরোধে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ও হুমকির ঘটনা ঘটেছে এবং জাকসু নেতাকে গালিও দেওয়া হয়েছে।
রবিবার (৩০ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্ত্বর এলাকায় বিকেল ৫টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত "বাউলের দ্রোহ" নামে এক বিচার গানের আসর বসানো হয়।
জানা যায়, বাউল সাধক আবুল সরকার বয়াতিকে গ্রেফতার ও দেশব্যাপী বাউল সম্প্রদায়ের উপর হামলার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে রাতভর এই বাউল গানের আসর বসানো হয়। এতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত বাউল শিল্পীরা গান পরিবেশন করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকাল থেকেই পরিবহন চত্ত্বরে গান শুরু হয় এবং সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শব্দের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। আশেপাশের আবাসিক হলে থাকা শিক্ষার্থী ও চূড়ান্ত পরীক্ষা চলছিল এমন শিক্ষার্থীরা অতিষ্ঠ হয়ে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ জানান।
অভিযোগের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসানের নির্দেশে প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম রাশিদুল আলমসহ প্রক্টরিয়াল বডি, জাকসু নেতৃবৃন্দ ও কিছু শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে যান।
রাত দেড়টার দিকে প্রক্টর শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি বিবেচনা করে আয়োজকদের গান কমিয়ে আনতে ও অনুষ্ঠান দ্রুত শেষ করার অনুরোধ করেন। তবে আয়োজকরা প্রক্টরের সঙ্গে অশালীনভাবে আচরণ করেন এবং জাকসুর কার্যকরী সদস্য মোহাম্মদ আলী চিশতিকে অশালীন ভাষায় গালি দেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কিছু গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ক্ষুণ্ন এবং ধর্মীয় উত্তেজনা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এবং সরাসরি ভিসির বাসভবনে গিয়ে প্রতিবাদ জানান।
জাকসুর কার্যকরী সদস্য মোহাম্মদ আলী চিশতি বলেন, অনুষ্ঠানটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও শান্তি বিবেচনায় রাখতে তারা শব্দ কমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।
অন্যদিকে, আয়োজক কমিটির সদস্য সজিব আহমেদ জেনিচ জানান, অনুষ্ঠানটি শান্তিপূর্ণভাবে আয়োজন করা হয়েছিল এবং অভিযোগগুলো উদ্দেশ্যমূলক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও ক্যাম্পাসের শান্তি বজায় রাখা প্রশাসনের দায়িত্ব।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান নষ্ট করার অধিকার কারো নেই। তিনি দ্রুত নির্দেশনা জারি করে শব্দের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার এবং অনুষ্ঠান নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনার কথা জানান।
