সাত গোলের থ্রিলারে হংকংয়ের কাছে হেরেই গেলো বাংলাদেশ


একটি-দুটি নয়, পুরো ম্যাচে হলো সাতটি গোল। হামজা চৌধুরীর গোলে এগিয়ে যাওয়ার পরও টান-টান উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে হংকংয়ের কাছে ৪-৩ ব্যবধানে হেরে গেলো বাংলাদেশ ফুটবল দল। সে সঙ্গে এএফসি এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্ব ওঠার সম্ভাবনাও শেষ হয়ে গেলো হামজা চৌধুরী-জামাল ভূঁইয়াদের।
বাংলাদেশকে হারিয়ে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিতব্য এশিয়ান কাপে খেলার সম্ভাবনা উজ্জ্বল করলো হংকং।
ম্যাচটি বাঁচামরার লড়াই ছিল। এশিয়ান কাপের টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখতে হংকংয়ের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের। ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামের গ্যালারিভর্তি দর্শকে আনন্দে ভাসিয়ে ১৩ মিনিটেই গোল করেন দলের সবচেয়ে বড় তারকা হামজা দেওয়ান চৌধুরী। দুর্দান্ত শুরুর পর জেগে উঠেছিল স্টেডিয়াম। অথচ সেই ম্যাচ বাংলাদেশ হেরে গেলো ৪-৩ গোলে।
এগিয়ে যাওয়ার পর রক্ষণ এলোমেলো হয়ে যায় বাংলাদেশের। এক কথায় ভজঘট লেগে যায়। বিশেষ করে সাদ উদ্দিনের দিক দিয়ে বারবার আক্রমণ তৈরি করে হংকং। হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার লো ডিফেন্সের সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশকে চেপে ধরেন হংকংয়ের খেলোয়াড়রা। বিশেষ করে দলটির ব্রাজিলের বংশোদ্ভূত দুই খেলোয়াড় এভারটন ও রাফয়েলই বেশি ব্যস্ত রাখেন বাংলাদেশের রক্ষণভাগকে।
বিরতিতে যাওয়ার ঠিক আগে ম্যাচে ফেরে হংকং। সেই এভারটন গোল করে ম্যাচে সমতা আনেন। বিরতির পাঁচ মিনিট পর ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভূত আরেক ফুটবলার রাফেয়েলের গোলে প্রথমবার লিড নেয় হংকং। ৭৪ মিনিটে রাফায়েল দ্বিতীয় গোল করলে বলতে গেলে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ।
পিছিয়ে পড়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে ক্যাবরেরা মাঠে নামান শামিত সোম, জামাল ভূঁইয়া, জায়ান আহমেদ, তপু বর্মন, ফাহামিদুলদের। আক্রমণ বাড়ে লাল-সবুজ জার্সিধারীদের। ৩-১ গোলে পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশ ম্যাচে ফিরেছিল দুর্দান্ত দাপটে। ৮৪ মিনিটে মোরসালিনের গোলে ব্যবধান কমানো এবং ইনজুরি সময়ে শামিতের গোলে প্রাণ ফিরে পায় গ্যালারি। অবিশ্বাস্যভাবে ৩-৩ গোলে সমতায় ফেরে বাংলাদেশ।
শামিতের গোলের পর উল্লাস ছড়িয়ে পড়েছিল গ্যালারি ও মাঠে। বাংলাদেশ দলের সব খেলোয়াড় দৌড়ে চলে যান গ্যালারির সামনে। ম্যাচ তখন শেষ দিকে। এমন সময় সর্বনাশ হয় বাংলাদেশের। সর্বনাশ করে সেই রাফায়েল। নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করে বাংলাদেশের গ্যালারিকে স্তব্ধ করে দেন রাফায়েল।
শেষ মুহূর্তের গোলে ম্যাচ হারের পর দর্শক-সমর্থকদের অভিযোগের তীর কোচ ক্যাবরেরার দিকে। বিশেষ করে শেষ গোল খাওয়ায় যার চরম ব্যর্থতা সেই সাদ উদ্দিন কিভাবে পুরো ম্যাচ খেলেছেন তা বোধগম্য নয় কারো। শুরু থেকেই রক্ষণে তার ব্যর্থতা ছিল। তারপরও কোচ তাকে বদলি করেননি।
জায়ান, শামিতরা ভালো খেলেছেন। বদলি হিসেবে নেমে জামালও দ্বিতীয় গোলের যোগান দিয়েছিলেন। অথচ তাদের সবাইকেই বাইরে রেখে একাদশ সাজিয়েছিলেন কোচ। ফাহামিদুল বদলি হিসেবে নেমে আক্রমণ তৈরির জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন। তবে ভজঘট রক্ষণের কারণেই বাংলাদেশ হেরে গেছে সম্ভাবনা জাগিয়ে।
এই হারে বাংলাদেশের এশিয়ান কাপ বাছাই থেকে বিদায়ের পথটা তৈরি হলো। তিন ম্যাচে এক পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ এখন গ্রুপে সবার শেষে।