ইংল্যান্ডকে হারাতে পারলো না বাংলাদেশ

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:০৭ অক্টোবর ২০২৫, ১১:০৩ পিএম
ইংল্যান্ডকে হারাতে পারলো না বাংলাদেশ

নারী বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারানোর পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অঘটনের স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ। ১৭৮ রানের জবাবে ১০৩ রানে ইংলিশদের ৬ উইকেট তুলে জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করেছিল নিগার সুলতানারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অভিজ্ঞতার ছাপ রেখে অধিনায়ক হিদার নাইট সপ্তম উইকেটে গড়লেন অবিচ্ছিন্ন ৭৯ রানের জুটি। এটাই গড়ে দেয় পার্থক্য। বাংলাদেশকে ৪ উইকেটে হারিয়ে শেষ হাসি হেসেছে ইংলিশ দল। 

নাইট ১১১ বলে ৭৯ রানে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন। ম্যাচসেরাও তিনি। তাতে ছিল ৮টি চার ও ১টি ছয়ের মার। সঙ্গী চার্লি ডিন ৫৬ বলে খেলেন অপরাজিত ২৭ রানের ইনিংস। তাদের জুটিতে ৪৬.১ ওভারে ম্যাচ জিতে মাঠ ছাড়ে ইংল্যান্ড। 

বাংলাদেশের হয়ে এদিনও শুরুতে বল হাতে প্রতিপক্ষকে কাবু করে ছাড়েন পেসার মারুফা। ৫ ওভারে ২৮ রানে নেন ২ উইকেট। পরে বাংলাদেশ ম্যাচে ফেরার মতো পরিস্থিতি তৈরি করে লেগ স্পিনার ফাহিমা খাতুনের কল্যাণে। ১৬ রানে তিনটি উইকেট নেন তিনি। পরে অবশ্য তাদের কাছ থেকে ম্যাচ কেড়ে নেন নাইট ও ডিন। 

এর আগে গুয়াহাটিতে নারীদের ওয়ানডে বিশ্বকাপে শুরুতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে তাদের ১৭৮ রানে রুখে দেয় ইংল্যান্ড। ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়েছেন সোবহানা মোস্তারি ও রাবেয়া খান।

সোবহানা খেলেছেন ধৈর্যশীল ৬০ রানের ইনিংস, আর শেষ দিকে রাবেয়ার ঝড়ো ৪৩ রানে ভর করে বাংলাদেশ লড়াকু সংগ্রহ দাঁড় করাতে পারে। ৪৯.৪ ওভারে অলআউট হয় ১৭৮ রানে। 

মূলত ইংলিশ স্পিনারদের ঘূর্ণিজালে কাবু হয় বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ। সোফি একলস্টোন শিকার করেন তিনটি উইকেট। উদ্বোধনী ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১০ উইকেটের জয়ে দারুণ ভূমিকা রাখা লেফট আর্ম স্পিনার লিনসে স্মিথ ৩৩ রানে নেন ২ উইকেট।

অফস্পিনার চার্লি ডিন ও অ্যালিস ক্যাপসি উইকেট নিয়েছেন দুটি করে। সাথে ছিল কৃপণ বোলিং। ক্যাপসির স্পেলে ৪৭তম ওভারে ডাবল স্ট্রাইকে কাটা পড়েন মোস্তারি। ফেরার আগে ১০৮ বলে তুলে নেন নিজের প্রথম বিশ্বকাপ ফিফটি।

প্রথম ছয় ওভারেই ২৫ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। ওপেনিংয়ে সুযোগ পেয়েও ঝড় তুলে খেলতে পারেননি রুবাইয়া হায়দার। লরেন বেলের বলে মিডঅফে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মাত্র ৯ রানে। স্মিথের পরের ওভারেই মাত্র ২ বল খেলে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি।

প্রথমে শারমিন ও পরে মোস্তারির সঙ্গে মিলে ইনিংস গুছিয়ে তোলার চেষ্টা করছিলেন ব্যাটাররা। কিন্তু একলস্টোন সেই পরিকল্পনায় কাঁটা বিছিয়ে দেন। 

এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। নিগার সুলতানা মাঠে না থাকলেও ডাগআউটে থেকে দারুণ সরব ভূমিকা রাখছিলেন। 

রানখরার সেই সময়ে ন্যাট সিভার-ব্রান্টকে পরপর দুটি বাউন্ডারি মেরে চাপ কিছুটা কাটান মোস্তারি। এর মধ্যেই রিতু মনি ধীরগতির ৫ রান করে ডিনের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন।

মোস্তারির ফিফটি আসে ডিপ পয়েন্ট দিয়ে একটি চমৎকার শটে। বাংলাদেশের হয়ে মাত্র তৃতীয় নারী ব্যাটার হিসেবে বিশ্বকাপে অর্ধশতক হাঁকান তিনি। একবার অবশ্য জীবনও পেয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ড আবার রিভিউ নিয়ে মোস্তারিকে প্যাভিলিয়নে ফেরায়। তখন দলের স্কোর ৮ উইকেটে ১৫৬।  

শেষদিকে রাবেয়া খান ছিলেন একমাত্র আশার আলো। ২৭ বলে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৪৩ রানে অপরাজিত ছিলেন। শেষ ওভারে স্মিথকে ছয় মেরে ম্যাচের প্রথম ছক্কার স্বাদ নেন রাবেয়া। এরপর ফাইন লেগ দিয়ে মারেন চার। তবে সঙ্গী সানজিদা মেঘলা আর টিকতে পারেননি। সিভার ব্রান্টকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন।