ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়ক দশ লেনে উন্নীত নয়, ট্রেন লাইনের ওপর গুরুত্ব বাড়ছে

Bangla Post Desk
ইউএনবি
প্রকাশিত:০৯ অক্টোবর ২০২৫, ১১:২৯ পিএম
ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়ক দশ লেনে উন্নীত নয়, ট্রেন লাইনের ওপর গুরুত্ব বাড়ছে

ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়ককে দশ লেনে সম্প্রসারণের পরিকল্পনা বাতিল করে রেল যোগাযোগ উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। জমি সংকট এবং টেকসই পরিবহন ব্যবস্থার কথা বিবেচনা করেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয় বিষয়ক বিশেষ সহকারী শেখ মঈনুদ্দিন।

ইউএনবিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডকে ৬ বা ১০ লেন করার বিষয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। তবে এখনো চূড়ান্ত কিছু নয়। সর্বোচ্চ ছয় লেন পর্যন্ত করা যেতে পারে। তবে এর বাইরে রোড সম্প্রসারণের পরিবর্তে ট্রেনে যাতায়াতের ওপর গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।’

তিনি বলেন, ‘ট্রেন দ্রুতগতির, নিরাপদ ও সময়নিষ্ঠ যোগাযোগ মাধ্যম। ট্রেন ব্যবস্থা উন্নত করতে পারলে অনেকেই গাড়ি চালানো থেকে সরে আসবেন। তাই আমরা রেললাইন আধুনিকীকরণের দিকে জোর দিচ্ছি। বর্তমানে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনটি সংস্কার ও উন্নয়নের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।’

তার ভাষ্যে, রাস্তাঘাট সম্প্রসারণ করলে ভূমি আরও কমে যাবে। দেশে ইতোমধ্যে ল্যান্ড (ভূমি) সংকট দেখা দিচ্ছে। অথচ ট্রেনে এখন মাত্র ২ শতাংশ পণ্য পরিবহন হয়, যা জিডিপির প্রায় ২ শতাংশের সমান।

শেখ মঈনুদ্দিন বলেন, ‘আমি ফোকাস করছি রেলওয়ে উন্নয়নের ওপর, যাতে সড়কের চাপ কমে আসে। কারণ ট্রেন নিরাপদ, সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব।’

তিনি জানান, বিদেশের অনেক দেশে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ পণ্য পরিবহন হয় রেলপথে, অথচ বাংলাদেশে তা মাত্র ২ শতাংশ। এই হার অন্তত ২৫ শতাংশে উন্নীত করতে চান তিনি। এতে ট্রেন পরিবহন লাভজনক হবে এবং রাস্তায় চাপও কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ সচল রাখতে বর্তমানে লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) ঘাটতি একটি বড় সমস্যা বলে উল্লেখ করেন শেখ মঈনুদ্দিন।

তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে নতুন লোকোমোটিভ ক্রয়ের জন্য টেন্ডার আহ্বান করেছি। এতে ট্রেনের গতি ও কার্যকারিতা দুটোই বাড়বে, নতুন লাইন করতে হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে কিছু নির্দিষ্ট ট্রেন শুধু পণ্য পরিবহনের কাজে ব্যবহার করার, যাতে সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছানো যায়। এতে সময় ও খরচ দুটোই কমবে।’

সরকারের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে সড়কের ওপর চাপ কমে যাবে এবং দেশের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন গতি আসবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন শেখ মঈনুদ্দিন।