অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে আয়ারল্যান্ডকে হারাল বাংলাদেশ

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৭ এএম
অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে আয়ারল্যান্ডকে হারাল বাংলাদেশ
ছবি : সংগৃহীত

২৩৬ রান তাড়া করতে নেমে ২ রান তুলতেই ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। নিগার সুলতানা এবং শারমিন আক্তারের ব্যাটে শুরুর সেই ধাক্কা সামলে গেলেও ১৩৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে কঠিন বিপর্যয়ে পড়ে টাইগ্রেসরা। কঠিন বিপদে এরপর একাই বাংলাদেশ দলকে টেনে তুলেছেন রিতু মনি।

৬ নম্বরে ব্যাটিং করতে নামা রিতু একাই বোলারদের নিয়ে লিখলেন অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনের গল্প। নিজে তুলে নিলেন ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি। আর টেইলেন্ডারের বাকি ব্যাটারদের সহায়তা নিয়ে গড়লেন দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রান তাড়ার রেকর্ড।

শেষ বলে ছক্কা মেরে দলের জয় নিশ্চিত করেছেন রিতু। উইকেটে তখন তার সঙ্গে ছিলেন ১০ নম্বরে ব্যাটিং করতে নামা নাহিদা আক্তার। নবম উইকেটে তারা ৫৪ রানের জুটি গড়ে ২ উইকেটের অবিশ্বাস্য জয় নিশ্চিত করেন।
 
বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে এটিই সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড। এর আগে টাইগ্রেসদের সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ডটি ছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০১৯ সালে। এবার সেই রেকর্ড ভাঙলেন জ্যোতি-রিতুরা।
 
লাহোরে আজ (১৩ এপ্রিল) টস হেরে বোলিং করতে নেমে শুরুটা ভালো করেছিল বাংলাদেশ। চতুর্থ ওভারে দারুণ এক রান আউট করে আইরিশ ওপেনার সারাহ ফোর্বসকে ফেরান নাহিদা আক্তার। প্রথম ৫ ওভারে কেবল ৭ রান করে আয়ারল্যান্ড। 
 
তিনে নেমে অ্যামি হান্টার খেলার ধারা পরিবর্তন করেন। অধিনায়ক গ্যাবি লুইসকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে গড়েন ৫০ রানের জুটি। রানও তুলেছেন দ্রুত। প্রথম ৫ ওভারে ৭ রান করা দলটি পাওয়ারপ্লে শেষ করে ৪০ রানে।
 
১৪তম ওভারে জান্নাতুল ফেরদৌসের বলে কট অ্যান্ড বোল্ড হয়ে ২৪ রানে ফেরেন লুইস। হান্টার ফেরেন রান আউট হয়ে। ৩৮ বলে ৩৩ রান করেন এই ব্যাটার।
 
চতুর্থ উইকেটে আইরিশদের মাঝারি সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন ওরলা প্রেন্ডারগাস্ট এবং লরা ডিলানি। দুজনে মিলে এই উইকেটে গড়েন ৭২ রানের জুটি।
 
৬৪ বলে ৪১ রান করে দলীয় ১৪৯ আউট হন প্রেন্ডারগাস্ট। তবে লড়াই অব্যাহত রাখেন ডিলানি। ফিফটি করে ৬৩ রানে আউট হন তিনি। ১৮২ রানে তিনি যখন ফেরেন, তখন বড় সংগ্রহ চোখ রাঙাচ্ছিল বাংলাদেশকে।
 
তবে ডিলানির বিদায়ের পর খুব বড় সংগ্রহ আর দাঁড় করাতে পারেনি তারা। ৪২ ওভারে তিনি যখন আউট হন তখনও ৫১ বল বাকি ছিল ইনিংসের। ওই ৫১ বলে ৫৪ রান করে তার দল। ১৭ বলে ২৪ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন অরলেন কেলি।  
 
জবাব দিতে নেমে তৃতীয় বলেই ফারজানা হকের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। প্রেন্ডারগাস্টের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন রানের খাতা খোলার অপেক্ষায় থাকা ফারজানা।
 
উইকেট হারিয়ে খোলসে ঢুকে পড়েও রক্ষা হয়নি ইশমা তানজিমের। পঞ্চম ওভারে আউট হওয়ার আগে ১৫ বলে মাত্র ২ রান করেন ইশমা, প্রেন্ডারগাস্টের দ্বিতীয় শিকারে পরিনত হন।
  
২ রানে ২ উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান নিগার সুলতানা এবং শারমিন আক্তার। তৃতীয় উইকেটে দুজন মিলে গড়েন ৫২ রানের জুটি। দলীয় ৫৪ রানে আউট হন শারমিন। তবে লড়াই চালিয়ে যান জ্যোতি। চতুর্থ উইকেটে সোবাহানার সঙ্গে গড়েন ২৮ রানের জুটি।
 
দলীয় ৮২ রানে সোবাহানা আউট হওয়ার পর জ্যোতিও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৬৮ বলে ৫১ রান করে আউট হন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
 
৯৪ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর ষষ্ঠ উইকেটে হাল ধরেন রিতু এবং ফাহিমা খাতুন। তবে তাদের ৫৫ রানের জুটি ভাঙার পর আরও বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। ৩৮ বলে ২৮ রান করে আউট হন ফাহিমা।
 
এর পরের গল্প জুড়ে পুরোটাই রিতু মনি। সপ্তম উইকেটে জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে ৪০ রানের জুটি গড়ার পর নবম উইকেটে নাহিদাকে নিয়ে গড়েন ম্যাচজয়ী ৫৪ রানের জুটি।
 
৬১ বলে ৬৭ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন রিতু। ১০ নম্বরে নেমে ১৭ বলে ১৮ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেছেন নাহিদা।