আলেম-ওলামাদের মেহনত ব্যর্থ হয়নি: ধর্ম উপদেষ্টা
আলেম-ওলামাদের মেহনত ব্যর্থ হয়নি বলে জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।
তিনি বলেন, ৫৪ বছর ধরে নিপীড়ন, বির্যাতন, নিগ্রহের পরেও ইসলামি শক্তি মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস পেয়েছে। পূর্ব দিগন্তে নতুন সূর্য উঁকি দিচ্ছে, ওঠা বাকি মাত্র। এখন আমাদের ঐক্য ধরে রাখতে হবে।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় যাদুঘরে প্রধান মিলনায়তনে 'মুসলিম পারিবারিক আইন: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ' শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ মসজিদ মিশন এ সেমিনারের আয়োজন করে।
এ সময় ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন সম্পর্কে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, এ আইনের অনেক ধারা সরাসরি ইসলামি শরীয়তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সে সময় যারা ওলামায়ে কেরাম ছিলেন তারা এ আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম করেছেন কিন্তু তারা পারেননি। তৎকালীন সামরিক শাসক আইয়ুব খান অনেকটা গায়ের জোরে এ আইন পাস করেন।
হিল্লা বিয়ে শরিয়তে হারাম উল্লেখ করে ড. খালিদ বলেন, তালাকের যথেচ্ছ ব্যবহার হয়ে থাকে। স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পর বাচ্চারা কাঁদে, স্বামী কাঁদে। তালাক দেওয়া স্ত্রীকে আবার ফিরিয়ে আনতে চায়। এ সময় এক শ্রেণির মানুষ শরিয়তের অপব্যাখ্যা দিয়ে নারীদেরকে হিল্লা বিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা চালান। এটা নারীর প্রতি অবমাননাকর এবং এতে ইসলামের ওপর আঘাত আসে।
'আমরা কিভাবে দণ্ড আরোপ করি'-এরূপ প্রশ্ন রেখে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ইসলামি শরিয়তে দণ্ডবিধি আরোপের ক্ষমতা কোনো আলেম কিংবা মুফতির নেই। তারা কেবল ফতোয়া দেবেন, কুরআন-হাদীসের বর্ণনা তুলে ধরবেন। বিচার করবে আদালত। আর আদালতের রায় কার্যকর করবে প্রশাসন। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
শরিয়াহ আইন প্রচলনের দাবির বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, এ দাবি ৫৪ বছর ধরে করে আসছি। দাবি জানাতে কোনো আপত্তি নেই। তবে যতদিন পর্যন্ত সংসদের অধিকাংশ আসন শরিয়ত মেনে চলে এরূপ মানুষ দিয়ে ভর্তি না হবে, ততদিন দাবি জানিয়ে কোনো লাভ হবে না। এজন্য দীর্ঘ মেয়াদি প্রজেক্টের দিকে আমাদের এগোতে হবে। শুধু এক বা দু'জনকে দিয়ে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিবর্তন সম্ভব নয়।
বাংলাদেশ মসজিদ মিশনের সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা যাইনুল আবেদীনের সভাপতিত্বে সেমিনারে 'মুসলিম পারিবারিক আইন: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ' শিরোনামে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. এবিএম মাহবুবুল ইসলাম।
এতে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তৃতা করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. নকীব মোহাম্মদ নাসরুল্লাহ। অনুষ্ঠানে ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. শামছুল আলম ও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন।
সেমিনারে দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম-ওলামা, শিক্ষাবিদ, গণমাধ্যমকর্মী, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার লোকজন অংশ নেন।
