‘আমরা চেয়েছি ব্যালট বিপ্লব, কিছু দল প্রস্তুতি নিচ্ছে বুলেট বিপ্লবের’
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, আমরা চেয়েছিলাম একটি ব্যালট বিপ্লব, কিন্তু কিছু রাজনৈতিক দল এখন বুলেট বিপ্লবের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এজন্য সবাইকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে, ইনসাফের পক্ষে লড়ে যেতে হবে।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে শহরের কিং কমিউনিটি সেন্টারে গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট আয়োজিত বিপ্লবী ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে শোক ও সংহতি সমাবেশ বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আগামীর ভোট হোক সংস্কারের পক্ষে, আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে ও ন্যায়ের পক্ষে। কতিপয় রাজনৈতিক দল মিলে তাদের মার্কাগুলো বিলুপ্ত করে দিয়ে আবার একটি দলে একীভূত হচ্ছে। একটি আসনের জন্য যারা নিজের দলকে বিলুপ্ত করে দিচ্ছেন, আপনারা নিজেদের দলের প্রতি অন্যায় করছেন।
প্রশাসন ও পুলিশের সমালোচনা করে হাসনাত বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অধিকাংশই পরবর্তীতে কে বা কারা ক্ষমতায় আসতে পারে, সেই দলগুলোর পা চাটার জন্য আবার গুলশান-পল্টনে লাইন দেওয়া শুরু করেছে। দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষিত আগামীর নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ভারতে বসে ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করা হচ্ছে। নির্বাচনে একটি গুরুত্বপূর্ণ আম্পায়ারের ভূমিকা রাখে প্রশাসন ও পুলিশ। কিন্তু আমরা দেখেছি গত তিনটি নির্বাচনে প্রশাসন ও পুলিশ আম্পায়ার বা রেফারি না নিয়ে তারা নিজেরাই খেলোয়াড়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল। যেটির খেসারত জাতিকে দিতে হয়েছে এবং আগামীতেও দিতে হবে।
তিনি বলেন, দলের প্রতি বায়াস্ট পুলিশ দিয়ে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। যারা এ কাজ করবে তাদের পরিণতি বেনজির, ওসি প্রদীপের মতো হবে। আমরা গুলির মুখ থেকে ফিরে আসা, আমাদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আপনারা যারা নির্বাচন ম্যানিপুলেট করার চিন্তা করছেন, কোনো কারণে এমনটি হলে এ তরুণ প্রজন্ম বসে থাকবে না।
পুলিশ ও প্রশাসনের উদ্দেশ্যে হাসনাত বলেন, আপনারা বেনজির, হারুন হবেন না। রেফারি-আম্পায়ারের ভূমিকা রাখবেন, নিজেরা খেলোয়াড় হতে আসবেন না। অন্যথায় জুলাইয়ের জনগণের যে তীব্র ক্ষোভ-বিক্ষোভ ছিল সেটির আবার পুনরাবৃত্তি হবে। আমরা দেখেছি মধ্যরাতে একটি কন্ট্রোল লটারির মাধ্যমে ডিসি-এসপি নিয়োগ করা হয়েছে। এই মধ্যরাতে যারা ডিসি-এসপি নিয়োগ হয়েছে আমরা তাদের আচরণকে সন্দেহজনক মনে করি। এখনই তারা একটি দলের দলদাস হিসাবে মাঠে আবির্ভূত হতে চাচ্ছে। নির্বাচন কমিশনকে বলব, যেসব ডিসি, এসপি ও ইউএনওরা পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করা শুরু করেছে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
শহীদ ওসমান হাদিকে নিয়ে বিএনপি নেত্রী নিলুফার চৌধুরী মনির বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, যারা হাদি ভাইয়ের নাম, ইনকিলাব মঞ্চের নামটি পর্যন্ত উচ্চারণ করতে পারে না, যারা জানে না জেন-জির সঙ্গে হাদি ভাইয়ের সম্পর্ক কী, তাদের কাছে হাদি ভাইকে শুধু গিনিপিগই মনে হবে। জনগণ বিবর্জিত, জুলাই বিবর্জিত, দুর্নীতিগ্রস্ত ও চাঁদাবাজদের দলের নিলুফাদের মতো নেত্রীরা আমাদের জনআকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে সবসময় অবস্থান নিয়েছেন। এ বক্তব্যের জন্য তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান ও ফেনী-২ আসনে দলীয় প্রার্থী মজিবুর রহমান মঞ্জু। বিশেষ অতিথি ছিলেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, এবি পার্টির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী শাহ আলম বাদল, এনসিপির জেলা কমিটির আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলাম সৈকত। এবি পার্টি ফেনী জেলা কমিটির আহ্বায়ক মাস্টার আহছান উল্ল্যাহর সভাপতিত্বে সমাবেশে সঞ্চালনা করন এনসিপির জেলা কমিটির সদস্য সচিব শাহ ওয়ালী উল্লাহ মানিক ও এবি পার্টির সদস্য সচিব অধ্যাপক ফজলুল হক।
বিপি/আইএইচ