‘প্রথম আলো বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার চেয়ে মতাদর্শিক রাজনীতিতে সক্রিয়’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ও যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মির্জা গালিব অভিযোগ করেছেন, দেশের শীর্ষ দৈনিক প্রথম আলো বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার চেয়ে মতাদর্শিক রাজনীতিতে বেশি সক্রিয়।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ভেরিফায়েড ফেসবুক পোষ্টে তিনি বলেন, প্রথম আলো দীর্ঘদিন ধরে এমন এক সম্পাদকীয় রাজনীতি করে আসছে, যা কার্যত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অবস্থানকে বৈধতা দিচ্ছে।
ড. গালিব উল্লেখ করেন, দেশের বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে প্রথম আলোর সংবাদ-ধারণা 'আমরা বনাম তারা' রাজনীতিকে উসকে দেয়।
তিনি বলেন, দ্য ডিসেন্ট-এর প্রতিবেদনে দেখা গেছে—জামায়াত বা হেফাজতের সহিংসতা বর্ণনা করতে প্রথম আলো খোলাখুলি ও আক্রমণাত্মক শব্দ ব্যবহার করে, যেমন ‘জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডব’, ‘হেফাজতের ধ্বংসযজ্ঞ’, ‘বর্বরতা’।
অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট সহিংসতার ঘটনায় প্রথম আলো সচেতনভাবে ভাববাচ্য ব্যবহার করে বলে অভিযোগ করেন তিনি। উদাহরণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন—‘হামলা হয়েছে’, ‘ঘুমন্ত ব্যক্তির মৃত্যু’, ‘বাসে আগুন’—ধরনের শব্দচয়ন, যেখানে সরাসরি রাজনৈতিক দায় এড়িয়ে যাওয়া হয়।
ড. গালিব বলেন, এ ধরনের সাংবাদিকতা দেশজুড়ে সিলেক্টিভ মোরালিটি তৈরি করছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, প্রথম আলোর অফিসে হামলা হলে তা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর বড় আঘাত হিসেবে দেখা হয়, কিন্তু অন্য গণমাধ্যমের অফিসে একই ধরনের ঘটনা হয়, তা ততটা গুরুত্ব পায় না।
তিনি আরও বলেন, কোনো মতাদর্শের বিরোধিতা করতে গিয়ে আইন নিজের হাতে নেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়। প্রথম আলোর সমালোচনা করা যায়, তবে তাদের সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের পূর্ণ অধিকার নিশ্চিত করা অপরিহার্য।
ড. মির্জা গালিব বলেন, বাংলাদেশে সেকুলার ও ধার্মিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে মতাদর্শিক পার্থক্য থাকলেও দেশটি সবার। এই ভিন্নমতকে স্বীকার করে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কমন গ্রাউন্ড তৈরি করা জরুরি।
তিনি সতর্ক করেন, এক পক্ষের গণমাধ্যমে হামলায় নীরব থাকা আর অন্য পক্ষের ঘটনায় উচ্চকণ্ঠ প্রতিবাদ—এই দ্বৈত মানদণ্ড থেকে বেরিয়ে আসার সময় এসেছে।
বিপি/ এএস