কেন বাড়ছে বিএনপি-জামায়াতের দ্বন্দ্ব?
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:০৫ পিএম
তারেক রহমান ও ডা. শফিকুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ও দলটির এক সময়ের মিত্র জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে বাকযুদ্ধ ও তিক্ততা বেড়েই চলেছে। দুই দলই একে অন্যের বিরুদ্ধে 'আওয়ামী লীগের ভাষায়' কথা বলার অভিযোগ করছে, যা রাজনৈতিক মহলে কৌতূহল তৈরি করেছে।
সাম্প্রতিক কালে দল দুটির কেন্দ্রীয় নেতারা সভা–সমাবেশে পরস্পরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি নানা ধরনের বক্তব্য দিয়ে সংবাদ মাধ্যমে আলোচনায় আসছিলেন। তবে এটি ব্যাপকভাবে আলোচনায় এসেছে দুই দলের দুই শীর্ষ নেতাও সেই ধারায় বক্তব্য রাখার পর।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সিলেটে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বিএনপিকে ইঙ্গিত করে বক্তব্য দেওয়ার পর রবিবার (৭ ডিসেম্বর) ভার্চুয়াল এক বক্তব্যে তার পাল্টা জবাব দিয়েছেন রাজনৈতিক আশ্রয়ে লন্ডনে অবস্থান করা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
শনিবার সিলেটে জামায়াতে ইসলামীসহ আট দলের বিভাগীয় সমাবেশে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, এক দল চাঁদাবাজির কারণে জনগণের ঘৃণা কুড়িয়েছে, আরেক দল আবার তার চেয়ে বেশি শক্তি নিয়ে চাঁদাবাজিতে নেমে পড়েছে। এক দল দখলদার বনে গিয়ে জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে, আরেক দল বেপরোয়া দখলদার হয়ে উঠেছে। এক দল জনগণের জানমাল নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে, আরেক দল একই পথ ধরেছে, এমনকি নিজেদের মধ্যে মারামারিতে নিজেদের শেষ করে দিচ্ছে।
ধারণা করা হচ্ছে, জামায়াতের আমির আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে ইঙ্গিত করে এই বক্তব্য দিয়েছেন। ফলে এটি বিএনপির মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে, যা অনেকটাই স্পষ্ট হয়েছে রবিবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্যে।
ঢাকায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের এক অনুষ্ঠানে দেওয়া ভার্চুয়াল বক্তব্যে তারেক রহমান জামায়াতের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, তাদেরকে তো দেশের মানুষ ১৯৭১ সালেই দেখেছে। ১৯৭১ সালে তারা তাদের নিজেদের স্বার্থ রক্ষার্থে কীভাবে লক্ষ লক্ষ মানুষ হত্যা করেছে ঠিক যেভাবে পতিত স্বৈরাচার পালিয়ে যাবার আগে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করেছিল ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য।
পাশাপাশি সাম্প্রতিককালে বিএনপিকে লক্ষ্য করে জামায়াত নেতারা বিভিন্ন সভা–সমাবেশে দুর্নীতির বিষয়ে যেসব অভিযোগ করেছেন তারও জবাব দিয়েছেন তারেক রহমান।
তিনি বলেন, কেউ কেউ বলে থাকে, পলাতক স্বৈরাচার বিএনপির সম্পর্কে যেভাবে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াতো, আমরা ইদানীং লক্ষ্য করছি কিছু কিছু ব্যক্তি বা দল ঠিক একই সুরে গান গাইছে বা একই সুরে কথা বলার চেষ্টা করছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তাদেরও তো দু’জন ব্যক্তি আমাদের সাথে সেই সময় সরকারে ছিল।
সোমবারও (৮ ডিসেম্বর) এক অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তারেক রহমান বলেছিলেন, এখন দেশে এক ধরনের প্রচারণা চলছে— একজন বিশেষ কেউ ভালো, আর বাকি সবাই খারাপ। এটা গণতন্ত্রের জন্য ডেঞ্জারাস ব্যাপার।
এর আগে দলটি দুটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারাও একে অপরের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় এসেছেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত ১১ই নভেম্বর ঠাকুরগাঁওয়ে এক বক্তব্যে বলেছিলেন, জামায়াতের টিকিট কাটলেই কি কেউ বেহেশতে যেতে পারবে? যারা এসব মুনাফেকি করে, তাদের কাছ থেকে আমাদের সাবধান থাকতে হবে।
এরপর ২০শে নভেম্বর খুলনায় এক অনুষ্ঠানে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছিলেন, বিএনপি এখন আওয়ামী লীগের ভাষায় কথা বলছে। তারা বর্তমানে মাহফিলে বাধা দেয়, মা–বোনদের তালিম প্রোগ্রামে বাধা দেয়। এটি করে তারা জামায়াতকে নয়, মূলত ইসলামকে বাধাগ্রস্ত করছে।
এরপর বিএনপি নেতারা জামায়াতের বিরুদ্ধে ধর্ম ব্যবহারের অভিযোগ তুলে কড়া ভাষায় তার জবাব দিয়েছেন।
দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস গত বুধবার ঢাকার সিদ্ধেশ্বরীতে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, জামায়াতের জন্য আওয়ামী লীগই ভালো ছিল। যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের বিরুদ্ধে ছিল, তারা এখন ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছে।
এরপর শিবির নেতা ও ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েমের ঠাকুরগাঁওয়ে দেওয়া এক বক্তব্যেও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিএনপি নেতাদের অনেকেই। মি. কায়েম তার বক্তব্যে বলেছিলেন, লন্ডন, দিল্লি, পিন্ডিতে বসে আর কোনো রাজনীতি চলবে না। নতুন বাংলাদেশের রাজনীতি— দেশেই হবে সিদ্ধান্ত।
ধারাবাহিক এসব পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের মধ্যেই কয়েকটি জায়গায় সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে বিএনপি ও জামায়াতের কর্মী ও সমর্থকরা।
সাম্প্রতিক কালে দল দুটির কেন্দ্রীয় নেতারা সভা–সমাবেশে পরস্পরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি নানা ধরনের বক্তব্য দিয়ে সংবাদ মাধ্যমে আলোচনায় আসছিলেন। তবে এটি ব্যাপকভাবে আলোচনায় এসেছে দুই দলের দুই শীর্ষ নেতাও সেই ধারায় বক্তব্য রাখার পর।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সিলেটে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বিএনপিকে ইঙ্গিত করে বক্তব্য দেওয়ার পর রবিবার (৭ ডিসেম্বর) ভার্চুয়াল এক বক্তব্যে তার পাল্টা জবাব দিয়েছেন রাজনৈতিক আশ্রয়ে লন্ডনে অবস্থান করা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
শনিবার সিলেটে জামায়াতে ইসলামীসহ আট দলের বিভাগীয় সমাবেশে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, এক দল চাঁদাবাজির কারণে জনগণের ঘৃণা কুড়িয়েছে, আরেক দল আবার তার চেয়ে বেশি শক্তি নিয়ে চাঁদাবাজিতে নেমে পড়েছে। এক দল দখলদার বনে গিয়ে জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে, আরেক দল বেপরোয়া দখলদার হয়ে উঠেছে। এক দল জনগণের জানমাল নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে, আরেক দল একই পথ ধরেছে, এমনকি নিজেদের মধ্যে মারামারিতে নিজেদের শেষ করে দিচ্ছে।
ধারণা করা হচ্ছে, জামায়াতের আমির আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে ইঙ্গিত করে এই বক্তব্য দিয়েছেন। ফলে এটি বিএনপির মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে, যা অনেকটাই স্পষ্ট হয়েছে রবিবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্যে।
ঢাকায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের এক অনুষ্ঠানে দেওয়া ভার্চুয়াল বক্তব্যে তারেক রহমান জামায়াতের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, তাদেরকে তো দেশের মানুষ ১৯৭১ সালেই দেখেছে। ১৯৭১ সালে তারা তাদের নিজেদের স্বার্থ রক্ষার্থে কীভাবে লক্ষ লক্ষ মানুষ হত্যা করেছে ঠিক যেভাবে পতিত স্বৈরাচার পালিয়ে যাবার আগে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করেছিল ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য।
পাশাপাশি সাম্প্রতিককালে বিএনপিকে লক্ষ্য করে জামায়াত নেতারা বিভিন্ন সভা–সমাবেশে দুর্নীতির বিষয়ে যেসব অভিযোগ করেছেন তারও জবাব দিয়েছেন তারেক রহমান।
তিনি বলেন, কেউ কেউ বলে থাকে, পলাতক স্বৈরাচার বিএনপির সম্পর্কে যেভাবে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াতো, আমরা ইদানীং লক্ষ্য করছি কিছু কিছু ব্যক্তি বা দল ঠিক একই সুরে গান গাইছে বা একই সুরে কথা বলার চেষ্টা করছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তাদেরও তো দু’জন ব্যক্তি আমাদের সাথে সেই সময় সরকারে ছিল।
সোমবারও (৮ ডিসেম্বর) এক অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তারেক রহমান বলেছিলেন, এখন দেশে এক ধরনের প্রচারণা চলছে— একজন বিশেষ কেউ ভালো, আর বাকি সবাই খারাপ। এটা গণতন্ত্রের জন্য ডেঞ্জারাস ব্যাপার।
এর আগে দলটি দুটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারাও একে অপরের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় এসেছেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত ১১ই নভেম্বর ঠাকুরগাঁওয়ে এক বক্তব্যে বলেছিলেন, জামায়াতের টিকিট কাটলেই কি কেউ বেহেশতে যেতে পারবে? যারা এসব মুনাফেকি করে, তাদের কাছ থেকে আমাদের সাবধান থাকতে হবে।
এরপর ২০শে নভেম্বর খুলনায় এক অনুষ্ঠানে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছিলেন, বিএনপি এখন আওয়ামী লীগের ভাষায় কথা বলছে। তারা বর্তমানে মাহফিলে বাধা দেয়, মা–বোনদের তালিম প্রোগ্রামে বাধা দেয়। এটি করে তারা জামায়াতকে নয়, মূলত ইসলামকে বাধাগ্রস্ত করছে।
এরপর বিএনপি নেতারা জামায়াতের বিরুদ্ধে ধর্ম ব্যবহারের অভিযোগ তুলে কড়া ভাষায় তার জবাব দিয়েছেন।
দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস গত বুধবার ঢাকার সিদ্ধেশ্বরীতে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, জামায়াতের জন্য আওয়ামী লীগই ভালো ছিল। যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের বিরুদ্ধে ছিল, তারা এখন ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছে।
এরপর শিবির নেতা ও ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েমের ঠাকুরগাঁওয়ে দেওয়া এক বক্তব্যেও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিএনপি নেতাদের অনেকেই। মি. কায়েম তার বক্তব্যে বলেছিলেন, লন্ডন, দিল্লি, পিন্ডিতে বসে আর কোনো রাজনীতি চলবে না। নতুন বাংলাদেশের রাজনীতি— দেশেই হবে সিদ্ধান্ত।
ধারাবাহিক এসব পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের মধ্যেই কয়েকটি জায়গায় সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে বিএনপি ও জামায়াতের কর্মী ও সমর্থকরা।
কেন এই তিক্ততা?
বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যকার তিক্ততা ও বাদানুবাদের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আমরা যা বলছি তা ইতিহাসভিত্তিক ও সত্য তথ্যের ওপর ভিত্তি করে। কিন্তু অপর পক্ষ যা বলছে তার কোনো প্রমাণ বা সত্যতা নেই। তারা যা করছে সেটি ব্লেম গেম ও রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য। এটি রাজনৈতিক শিষ্টাচারের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে অনেক ধরনের রাজনৈতিক বক্তব্য অনেক সময় এসে যায়। এটি হয়তো তারই অংশ। তবে আমরা আশা করবো গণতন্ত্রের বিকাশে রাজনৈতিক সংস্কৃতির সৌন্দর্য বজায় রেখে আমরা সকলে রাজনৈতিক সমালোচনা করবো।
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জোবায়ের বলছেন, বিএনপির দিক থেকেই কিছু আক্রমণাত্মক বক্তব্য আসছে, যা তারা প্রত্যাশা করেননি। রাজনীতিতে স্ব স্ব দলের নীতি–আদর্শ আছে। আবার কিছু বিষয় দ্বিমত–ভিন্নমত আছে। দিন শেষে জনগণের জন্যই রাজনীতি।
আমাদের আমির বলেছেন, একটা দল নির্বাচনের জন্য প্রতিদিন কথা–বার্তা বলতো। এখন বলছে না। এগুলো তো দৃশ্যমান। গণমাধ্যমে আসছে। সেটিই তিনি বলেছেন।
এহসানুল জোবায়ের আরও বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে ভিন্ন বক্তব্য আসা অস্বাভাবিক না, তবে শিষ্টাচার বজায় রাখার দিকে সবাই গুরুত্ব দিবে বলে তিনিও আশা প্রকাশ করেছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও নয়াদিগন্তের সম্পাদক সালাহউদ্দিন মুহাম্মদ বাবর বলছেন, গত কিছুদিন ধরে বিএনপি ও জামায়াত নেতারা যেসব বক্তব্য দিচ্ছেন পরস্পরকে নিয়ে, তা দেখে মনে হচ্ছে যে তারা একে অপরকে ‘ঘায়েল’ করতে চাইছেন। এটি অনেকটা টিট ফর ট্যাট (ইট মারলে পাটকেল খেতে হবে) এর মতো। দুই দলকেই এর দায় নিতে হবে। এভাবে টাসল (বাহাস) চললে সেটি ভোটারদেরও নিরুৎসাহিত করবে এবং ভোটে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। মানুষ এতে বিরক্ত হচ্ছে।
কিন্তু কেন দুটি ইস্যুতে দুই দল গুরুত্ব দিচ্ছে— এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোবাইদা নাসরীন বলছেন, দুই দলই চাইছে প্রতিপক্ষের দুর্বলতা সামনে এনে ঘায়েল করতে এবং এর মূল লক্ষ্য হলো ভোটের মাঠে সুবিধা করা।
জোবাইদা নাসরীনের মতে, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়কালে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অবজ্ঞা, মুক্তিযুদ্ধের স্মারকচিহ্ন ভেঙে ফেলার মতো ঘটনাগুলো ঘটেছে, যা নিয়ে বহু মানুষই উদ্বিগ্ন ও বিরক্ত। আবার আওয়ামী লীগের সমর্থকদেরও একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ভোট আছে, যারা এ ইস্যুতে সবসময়ই স্পর্শকাতর।
সূত্র: বিবিসি
বিপি/আইএইচ
বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যকার তিক্ততা ও বাদানুবাদের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আমরা যা বলছি তা ইতিহাসভিত্তিক ও সত্য তথ্যের ওপর ভিত্তি করে। কিন্তু অপর পক্ষ যা বলছে তার কোনো প্রমাণ বা সত্যতা নেই। তারা যা করছে সেটি ব্লেম গেম ও রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য। এটি রাজনৈতিক শিষ্টাচারের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে অনেক ধরনের রাজনৈতিক বক্তব্য অনেক সময় এসে যায়। এটি হয়তো তারই অংশ। তবে আমরা আশা করবো গণতন্ত্রের বিকাশে রাজনৈতিক সংস্কৃতির সৌন্দর্য বজায় রেখে আমরা সকলে রাজনৈতিক সমালোচনা করবো।
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জোবায়ের বলছেন, বিএনপির দিক থেকেই কিছু আক্রমণাত্মক বক্তব্য আসছে, যা তারা প্রত্যাশা করেননি। রাজনীতিতে স্ব স্ব দলের নীতি–আদর্শ আছে। আবার কিছু বিষয় দ্বিমত–ভিন্নমত আছে। দিন শেষে জনগণের জন্যই রাজনীতি।
আমাদের আমির বলেছেন, একটা দল নির্বাচনের জন্য প্রতিদিন কথা–বার্তা বলতো। এখন বলছে না। এগুলো তো দৃশ্যমান। গণমাধ্যমে আসছে। সেটিই তিনি বলেছেন।
এহসানুল জোবায়ের আরও বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে ভিন্ন বক্তব্য আসা অস্বাভাবিক না, তবে শিষ্টাচার বজায় রাখার দিকে সবাই গুরুত্ব দিবে বলে তিনিও আশা প্রকাশ করেছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও নয়াদিগন্তের সম্পাদক সালাহউদ্দিন মুহাম্মদ বাবর বলছেন, গত কিছুদিন ধরে বিএনপি ও জামায়াত নেতারা যেসব বক্তব্য দিচ্ছেন পরস্পরকে নিয়ে, তা দেখে মনে হচ্ছে যে তারা একে অপরকে ‘ঘায়েল’ করতে চাইছেন। এটি অনেকটা টিট ফর ট্যাট (ইট মারলে পাটকেল খেতে হবে) এর মতো। দুই দলকেই এর দায় নিতে হবে। এভাবে টাসল (বাহাস) চললে সেটি ভোটারদেরও নিরুৎসাহিত করবে এবং ভোটে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। মানুষ এতে বিরক্ত হচ্ছে।
কিন্তু কেন দুটি ইস্যুতে দুই দল গুরুত্ব দিচ্ছে— এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোবাইদা নাসরীন বলছেন, দুই দলই চাইছে প্রতিপক্ষের দুর্বলতা সামনে এনে ঘায়েল করতে এবং এর মূল লক্ষ্য হলো ভোটের মাঠে সুবিধা করা।
জোবাইদা নাসরীনের মতে, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়কালে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অবজ্ঞা, মুক্তিযুদ্ধের স্মারকচিহ্ন ভেঙে ফেলার মতো ঘটনাগুলো ঘটেছে, যা নিয়ে বহু মানুষই উদ্বিগ্ন ও বিরক্ত। আবার আওয়ামী লীগের সমর্থকদেরও একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ভোট আছে, যারা এ ইস্যুতে সবসময়ই স্পর্শকাতর।
সূত্র: বিবিসি
বিপি/আইএইচ
