আগামী নির্বাচনের আগে কিছু মৌলিক সংস্কার ও অপরাধীদের বিচার দৃশ্যমান জামায়াতে ইসলামী আশা করে বলে জানিয়েছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী আশা করে আগামী বছরের প্রথমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে এর আগে কিছু মৌলিক সংস্কার ও অপরাধীদের বিচার দৃশ্যমান হতে হবে।’
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিকালে সিলেট নগরীর বালুচরে শিল্পকলা একাডেমিতে মহানগর জামায়াতের আয়োজনে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে এসব কথা বলেন তিনি।
জামায়াত আমির বলেন, ‘গত তিনটি নির্বাচনে মানুষ তার পছন্দের দল বা ব্যক্তিকে ভোট দিতে পারেননি। সেরকম নির্বাচন হলে তা জাতির জন্য দুঃখের ও বেদনার কারণ হবে। নির্বাচনের আগে অন্তত দুই-চারজন শীর্ষ অপরাধীদের শাস্তি দেখতে চাই।’
তিনি বলেন, আগামীতে যেই সরকারে আসুক তাকে অপরাধীদের শাস্তি বা বিচারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। তা না হলে যুবকরা আবার রাস্তায় নেমে আসবে। তারা এখন পথ চিনে ফেলেছে।
জামায়াতের আমির বলেন, একটা যুদ্ধ হয়েছে ফ্যাসিবাদের বিপক্ষে, দেশবাসীকে নিয়ে আরেকটা যুদ্ধ হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে এবং এই যুদ্ধেও বাংলাদেশের মানুষের জয় হবে।
তিনি বলেন, আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছি আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী। আহতদের পাশেও থাকার চেষ্টা করেছি সাধ্যমতো। ইনশাল্লাহ দেশ পরিচালনার দায়িত্ব আমরা পেলে অবশ্য শহীদ পরিবার এবং আহতদের যথাযত সম্মান দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ইতিহাস যাতে বিকৃত না হয় সেজন্য আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের তথ্য লিপিবদ্ধ করা শুরু করেছি।
তিনি দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলেন, যে দল তার কর্মীদের চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্ব থেকে মুক্ত করতে পারে না, তাদের কাছে দেশ নিরাপদ নয়। তিনি বলেন, সরকারি অব্যবস্থাপনা ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে চা শিল্প রুগ্ণ শিল্পে পরিণত হয়েছে। দেশের সব জায়গায় সিন্ডিকেট ও চাঁদাবাজি চলছে।
শফিকুর রহমান বলেন, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে। আমরা ক্ষমতায় গেলে প্রত্যেক তরুণ তরুণীকে দেশ গড়ার কাজে গড়ে তুলব।
কোনো দেশ আমাদের প্রভু নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিবেশীদের অধিকার রক্ষায় বৈরীতা নয় সমমর্যাদার ভিত্তিতে কাজ করব।
সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির মুহাম্মদ ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।
সভায় আরও বক্তব্য দেন, জামায়াতের সিলেট জেলা আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, হবিগঞ্জ জেলা আমির মখলিছুর রহমান, জয়নাল আবেদীন, মাওলানা আব্দুস সালাম আল মাদানী, মাওলানা লুৎফর রহমান হুমায়দী, জামিল আহমদ রাজু, শামীম আহমদ, আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ প্রমুখ।
সভা পরিচালনা করেন মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি শাহজাহান আলী ও নায়েবে আমির নুরুল ইসলাম বাবুল।
সভায় শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত যোদ্ধারা বক্তব্য রেখেছেন।