শাহজাহান চৌধুরীর বিতর্কিত মন্তব্যে প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের প্রতিবাদ
চট্টগ্রামে জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরীর প্রশাসনকে নিয়ে দেওয়া বক্তব্যকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ ও ‘অনভিপ্রেত’ আখ্যা দিয়ে কঠোর প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বিএএসএ)।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠনটি জানায়, নির্বাচনকে ঘিরে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা এবং পেশাদারিত্ব নিয়ে এমন মন্তব্য বিভ্রান্তি ছড়ায় এবং উদ্দেশ্যমূলক ভাবেই প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে।
বিএএসএ সভাপতি ও গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরীর সই করা বিবৃতিতে বলা হয়, নির্বাচন আয়োজনের সার্বিক প্রস্তুতি, দায়িত্বশীল ভূমিকা এবং সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতার সঙ্গে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করতে প্রশাসন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রীয় নীতি বাস্তবায়ন, আইনানুগ দায়িত্ব পালন এবং যে কোনো নির্বাচনে সমান সুযোগ, নিরাপত্তা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা প্রশাসনের দায়িত্ব। কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী রাজনৈতিক দল, মতাদর্শ বা গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত নন—এটাই প্রশাসনের পেশাগত নৈতিকতার মূল উপাদান।
বিএএসএ জানায়, কিছুদিন ধরে রাজনৈতিক বক্তৃতা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের আলোচনায় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিয়ে বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যমূলক মন্তব্য করা হচ্ছে, যা প্রশাসন ক্যাডারের পেশাদারিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত এক রাজনৈতিক জনসভায় শাহজাহান চৌধুরীর প্রশাসনকে দলীয়ভাবে ব্যবহারের ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে বলে জানায় সংগঠনটি। তারা এ ধরনের মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ভবিষ্যতে দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানায়।
একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিতে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন—বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। এতে আরও বলা হয়, জনগণের আস্থা অর্জন এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ রাখতে প্রশাসন দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
উল্লেখ্য, গত ২২ নভেম্বর চট্টগ্রাম নগরের জিইসি কনভেনশন হলে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ‘নির্বাচনী দায়িত্বশীল সম্মেলন’-এ শাহজাহান চৌধুরীর বক্তব্য সমালোচনার জন্ম দেয়। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন শুধু জনগণ দিয়ে নয়... যার যার নির্বাচনী এলাকায় প্রশাসনের যারা আছে, তাদের সবাইকে আমাদের আন্ডারে নিয়ে আসতে হবে। আমাদের কথায় উঠবে, আমাদের কথায় বসবে, আমাদের কথায় গ্রেপ্তার করবে, আমাদের কথায় মামলা করবে। পুলিশকে আপনার পিছনে পিছনে হাঁটতে হবে।’
