কত শ্রমিকে করা যাবে ট্রেড ইউনিয়ন, গেজেট জারি

Bangla Post Desk
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত:১৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৪৯ পিএম
কত শ্রমিকে করা যাবে ট্রেড ইউনিয়ন, গেজেট জারি
ছবি- সংগৃহীত

২০২৫ সালের শ্রম আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশে ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের নিয়মে বড় পরিবর্তন এনেছে সরকার। এত দিন কোনো প্রতিষ্ঠান বা কারখানায় ইউনিয়ন গড়তে শ্রমিকদের ২০ শতাংশের সম্মতি দরকার হতো। নতুন বিধানে সেই শতকরা হিসাব বাতিল করে মোট শ্রমিকসংখ্যার ভিত্তিতে নির্দিষ্ট সংখ্যক শ্রমিকের সম্মতির নিয়ম করা হয়েছে। পাশাপাশি শ্রমিকদের কালোতালিকাভুক্ত নিষিদ্ধ ও ভবিষ্য তহবিল গঠন বাধ্যতামূলকসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংশোধন আনা হয়েছে।

শ্রম আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি করেছে সরকার।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) প্রকাশিত এই অধ্যাদেশে ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনের পূর্বশর্তে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। এত দিন ইউনিয়ন করতে শ্রমিকের ২০ শতাংশের সম্মতি প্রয়োজন হতো। তবে সংশোধিত আইনে শতকরা হিসাব বাদ দিয়ে শ্রমিকসংখ্যার ওপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট সংখ্যক শ্রমিকের সম্মতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

অধ্যাদেশ অনুযায়ী, কোনো প্রতিষ্ঠানে ২০ থেকে ৩০০ জন শ্রমিক থাকলে ইউনিয়ন গঠনে ২০ জনের সম্মতি প্রয়োজন হবে। ৩০১ থেকে ৫০০ শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৪০ জন, ৫০১ থেকে ১ হাজার ৫০০ শ্রমিকের কারখানায় ১০০ জন, ১ হাজার ৫০১ থেকে ৩ হাজার শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৩০০ জন এবং ৩ হাজার ১ বা তার বেশি শ্রমিক থাকলে ৪০০ জনের সম্মতি লাগবে। একটি প্রতিষ্ঠানে সর্বোচ্চ পাঁচটি ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনের সুযোগ রাখা হয়েছে—যা আগে ছিল তিনটি।

শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় সংশোধিত আইনে নতুন দিকনির্দেশনাও যুক্ত হয়েছে। শিল্পমালিকেরা আন্দোলনে জড়িত শ্রমিকদের চাকরিচ্যুত বা কালোতালিকাভুক্ত করে রাখার অভিযোগ থেকে রেহাই দিতে কালোতালিকাভুক্তির প্রথা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। 

অধ্যাদেশে স্পষ্ট বলা হয়েছে, কোনো শ্রমিক বা ইউনিয়ন নেতাকে চাকরিচ্যুতির পরে কালোতালিকাভুক্ত করে নোটিশ দেওয়া বা তথ্যভান্ডারে নাম অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না।

এ ছাড়া শ্রমিক সংগঠনকে নিয়ন্ত্রণ বা প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে মালিক বা মালিকপক্ষের সংগঠন কোনোভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। পক্ষপাতমূলকভাবে ইউনিয়নের নেতাদের বরখাস্ত বা নতুন ইউনিয়ন গঠনে প্রভাব বিস্তার করাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

শ্রমিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে ভবিষ্য তহবিল গঠনও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কোনো প্রতিষ্ঠানে ১০০ জন স্থায়ী শ্রমিক থাকলেই ভবিষ্য তহবিল গঠন করতে হবে। তবে বিকল্প ব্যবস্থার সুযোগ রাখা হয়েছে—যদি শ্রমিকেরা জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সর্বজনীন পেনশন স্কিম ‘প্রগতি’তে যুক্ত হতে চান। এই ক্ষেত্রে মালিক ৫০ শতাংশ ও শ্রমিক ৫০ শতাংশ চাঁদা দেবেন। কোনো শ্রমিক স্কিমে না থাকতে চাইলে লিখিতভাবে জানালে সেই শ্রমিকের জন্য মালিকের চাঁদা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকবে না।

২৩ অক্টোবর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদনের পর আজ অধ্যাদেশটি জারি করা হলো।