এনা পরিবহনের সব বাস জব্দের দাবি
নিরাপদ সড়ক আন্দোলন (নিসআ) দাবি জানিয়েছে, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাবেক মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহর মালিকানাধীন এনা পরিবহনের সব বাস জব্দের।
বুধবার (৫ নভেম্বর) বেলা ১১টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ক্রাইম রিপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের (নিসআ) সাধারণ সম্পাদক তানজিদ মোহাম্মদ সোহরাব রেজা বলেন, বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমলে শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ সহায়তায় পরিবহন খাতে একচ্ছত্র রাজত্ব কায়েম করেছিল এনা পরিবহনের মালিক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ। তারই অনুগ্রহে তিনি পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতি পদবি দখল করেন। সে সময়েই দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির মামলায় এনায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে শেখ হাসিনার সরাসরি হস্তক্ষেপে বন্ধ হয়ে যায় তদন্ত কার্যক্রম।
পরে ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে পুনরায় এনায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে দুদক। এরই মধ্যে এনায়েত উল্লাহ বিদেশে পালিয়ে যান এবং তাড়াতাড়ি করে বিক্রি করতে থাকে এনা পরিবহনের অনেকগুলো বাস। এদিকে দুদকের তদন্তে বেরিয়ে আসে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, রুট পারমিট বাণিজ্য, মানি লন্ডারিংসহ একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
পরিবহন মালিক সমিতির ব্যানারে এনায়েত উল্লাহ সড়ক থেকে দিনে দেড় কোটি টাকার বেশি চাঁদা তুলতো জানিয়ে সোহরাব রেজা বলেন, পতিত স্বৈরাচারের মদদে এনায়েত উল্লাহ প্রায় ১১০০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পত্তি গড়ে তুলেছিলেন। ২০২৫ সালের ৫ মে আদালত এনা পরিবহন ও স্টার লাইন পরিবহনের ১৯০টি বাস জব্দ করার নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে এই বাসগুলো বিআরটিসিকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য আরও একটি নির্দেশ দেওয়া হয়। আদালতের এই নির্দেশের পর প্রায় ছয় মাস পার হয়ে গেলেও আদালতের রায় কার্যকর করার কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি দুদকের পক্ষ থেকে।
তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছি, বিপুল পরিমাণ অর্থ ও রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে দুদককে এ বিষয়ে নিষ্ক্রিয় করে রেখেছে স্বয়ং এনায়েত উল্লাহ। অভ্যুত্থানের পর প্রথম দিকে অন্য দলের রাজনৈতিক নেতাদের সামনে রেখে নিজের সাম্রাজ্য টিকিয়ে রেখেছেন তিনি। বর্তমানে তার মালিকানাধীন ১০০টির বেশি বাস বিভিন্ন রুটে চলাচল করছে। তাই আমরা স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, এখন থেকে আমরা আওয়ামী লীগের শীর্ষ মাফিয়া এনায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দিচ্ছি। যদি রাষ্ট্র আগামী দুই কার্যদিবসের মধ্যে এই বাসগুলো জব্দ করে বিআরটিসি থেকে বুঝিয়ে না দেয়, তবে এই আওয়ামী সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা করতে যা কিছু প্রয়োজনীয় হবে পদক্ষেপ নিতে আমরা পিছপা হবো না।
