সচিবালয়ে ভবনের পরিত্যক্ত মালপত্র অপসারণের নির্দেশ


দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে সম্প্রতি একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি কমাতে সচিবালয়ের প্রতিটি ভবনে অবস্থিত মন্ত্রণালয় ও দপ্তরকে সচেতন থাকার নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গত সোমবার এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা চিঠি সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে সচিবালয়ের ভবনগুলোর বিভিন্ন ফ্লোরের করিডোরসহ অন্যান্য স্থানে ফেলে রাখা আসবাবপত্র ও পরিত্যক্ত মালামাল দ্রুত অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়।
ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে গত শনিবার। এর আগে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম ইপিজেডের কারখানার ছয়তলা ভবন আগুনে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। এ ছাড়া গত ১৪ অক্টোবর মিরপুরে রাসায়নিক গুদাম ও একটি পোশাক কারখানায় আগুনে ১৬ জন প্রাণ হারান।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, সাম্প্রতিক বড় অগ্নিকাণ্ড দেশে নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই এসব ঘটনাকে ‘নিছক দুর্ঘটনা’ বলে মেনে নিতে রাজি নন। সরকারের বিবৃতিতেও ‘নাশকতা’ কিনা, খতিয়ে দেখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। তা ছাড়া গত বছর ডিসেম্বরে সচিবালয়েও ভয়াবহ আগুন লাগে। তাই প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্রে যাতে এ ধরনের অগ্নিকাণ্ড না ঘটে সে বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, গত বছর ২৬ ডিসেম্বর সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের প্রেক্ষিতে দেশের প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ের অভ্যন্তরে প্রতিটি ভবনের নিরাপত্তার বিষয় সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন। প্রতিটি ভবনে অবস্থিত মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দপ্তরে আগুনের ব্যাপারে সচেতন হওয়াসহ সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
চিঠিতে দেওয়া নির্দেশনাগুলো হলো– মন্ত্রণালয় বা দপ্তরে বৈদ্যুতিক সংযোগ নিয়মিত ইঞ্জিনিয়ার বা ইলেকট্রিশিয়ান দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। জরুরি ভিত্তিতে সার্ভার কক্ষগুলোতে বৈদ্যুতিক ত্রুটি আছে কিনা, নিশ্চিত হতে হবে। কোনো ত্রুটি পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক সারিয়ে নিতে হবে। প্রতিদিন অফিস ছুটির পর বৈদ্যুতিক সব সুইচ বন্ধ নিশ্চিত করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশ দিতে হবে।
এ ছাড়া সাপ্তাহিক ছুটি কিংবা অন্য কোনো ছুটির দিনে সচিবালয়ের অভ্যন্তরে দাপ্তরিক প্রয়োজনে অবস্থান করতে হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে। অফিস ত্যাগের আগে সব বৈদ্যুতিক সুইচ বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে আগুন নেভানোর প্রস্তুতি হিসেবে পর্যাপ্ত পানি মজুত রাখার পাশাপাশি পানির লাইন সক্রিয় রেখে সচিবালয়ের ভেতরে সার্বক্ষণিক পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। এসব নির্দেশনা অবশ্যই পালনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়।
পরিত্যক্ত মালপত্র অপসারণের নির্দেশ
একই দিন সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ চিঠি দিয়ে ভবনগুলোর বিভিন্ন ফ্লোরের করিডোর, লিফট লবি, সিঁড়ি, ছাদ, জেনারেল টয়লেটসহ অন্যান্য স্থানে ফেলে রাখা আসবাব ও পরিত্যক্ত মালপত্র অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়। আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন করতে হবে।