ফেসবুকে ফ্রি ভেরিফিকেশন পেতে যা করবেন


বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিশ্বাসযোগ্যতা এবং পরিচিতি গড়ে তুলতে ফেসবুক ভেরিফিকেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। ব্লু ব্যাজ বা ভেরিফায়েড আইডি মানেই আপনি একজন সত্যিকারের ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান—যা আপনাকে অনলাইনে আলাদা পরিচিতি দিতে সাহায্য করে।
বিশেষ করে সাংবাদিক, রাজনীতিক, উদ্যোক্তা, সংগঠন কিংবা কনটেন্ট ক্রিয়েটর—যে কেউই এখন চান নিজের ফেসবুক প্রোফাইল বা পেজের পাশে সেই নীল টিক চিহ্নটি দেখতে। কিন্তু অনেকেই জানেন না যে, এই নীল ব্যাজ পেতে টাকা খরচ না করেও এখনো ফ্রি পাওয়ার কিছুটা সুযোগ আছে। যারা যোগ্য, তারা একদম ফ্রি-তে পেতে পারেন ফেসবুকের সেই কাঙ্ক্ষিত ভেরিফায়েড ব্যাজ।
বর্তমানে ফেসবুকে দুই ধরনের ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া চালু রয়েছে, একটি হলো ট্র্যাডিশনাল (ফ্রি) ভেরিফিকেশন, আর অন্যটি মেটা ভেরিফায়েড (পেইড সাবস্ক্রিপশন)।
কারা ফেসবুক ভেরিফিকেশন পেতে পারেন
আগে শুধু বড় ব্র্যান্ড, জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব বা উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠানের জন্যই ফেসবুক ভেরিফিকেশন ছিল। কিন্তু ২০২৩ সালে মেটা ভেরিফায়েড প্রোগ্রাম চালুর পর এখন প্রায় যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানই যাচাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মাসিক ফি দিয়ে ব্যাজ পেতে পারেন। তবে এখনো ফ্রি ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া চালু রয়েছে, যদিও অনুমোদন পাওয়া অনেক কঠিন। কারণ ফেসবুক এখন পেইড প্ল্যানকেই বেশি অগ্রাধিকার দেয়।
ফ্রি (ট্র্যাডিশনাল) ভেরিফিকেশনের যোগ্যতা
মেটার নির্দেশনা অনুযায়ী, আপনি যদি নিচের শর্তগুলো পূরণ করেন, তাহলে টাকা ছাড়াই ফেসবুক ভেরিফিকেশনের জন্য আবেদন করতে পারেন।
১. অ্যাকাউন্টটি আসল এবং সক্রিয় হতে হবে।
২. একই নামের একাধিক অ্যাকাউন্ট থাকা যাবে না (ভাষাভিত্তিক ব্যতিক্রম ছাড়া)।
৩. প্রোফাইল বা পেজে থাকতে হবে ‘About’ সেকশন, প্রোফাইল ছবি এবং অন্তত একটি সাম্প্রতিক পোস্ট।
৪. এমন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান হতে হবে, যাকে ফেসবুকে অনেকেই সার্চ করে।
৫. ফেসবুক ও মেটার নীতিমালা এবং কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করতে হবে।
প্রমাণপত্র
ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্ক্যান কপি প্রয়োজন। প্রতিষ্ঠানের জন্য লাগবে রেজিস্ট্রেশন সনদ, ট্যাক্স বা ব্যবসায়িক নথি। প্রয়োজনে ফোন বা বিদ্যুৎ বিলও ব্যবহার করা যায়।
ফ্রি ফেসবুক ভেরিফিকেশন করবেন যেভাবে
১️. [Facebook Verification Request Form](https://www.facebook.com/help/contact/342509036134712) এ যান। ২️. যেই পেজ বা প্রোফাইল ভেরিফাই করতে চান তা সিলেক্ট করুন, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড করুন। ৩️.‘Notability’ বা জনপ্রিয়তার প্রমাণ দিন। যেমন : সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত লিংক, অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ইত্যাদি। ৪️. ফর্ম পূরণ শেষে ‘Send’ ক্লিক করুন।
এরপর অপেক্ষা করুন। যদি সঙ্গে সঙ্গে ‘Rejected’ মেসেজ না আসে, তাহলে ফেসবুক আবেদন পর্যালোচনা করবে। ব্যর্থ হলে ৩০ দিন পর আবার আবেদন করা যাবে।
ভেরিফিকেশন পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়াতে করণীয়
১. অ্যাকাউন্টে ঘন ঘন পরিবর্তন করবেন না
নাম, প্রোফাইল ছবি বা ইউজারনেম বারবার বদলালে ফেসবুক সন্দেহ করে।
২. সম্পূর্ণ প্রোফাইল রাখুন
প্রোফাইল ছবি, কভার ফটো, বিভাগ (Category) এবং ‘About’ সেকশন পূর্ণ থাকতে হবে।
৩. পেজের নাম সঠিক রাখুন
অশালীন শব্দ, ‘official’ শব্দের অপব্যবহার, অপ্রয়োজনীয় চিহ্ন বা সব বড় অক্ষরে লেখা নাম ব্যবহার করবেন না।
৪. কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলুন
অবৈধ বা বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট, কপিরাইট ভঙ্গ বা হুমকিমূলক পোস্ট এড়িয়ে চলুন।