ইরানকে ইসরাইলের কড়া হুঁশিয়ারি
ইরানের উদ্দেশে কড়া এক হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরায়লের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান ডেভিড বার্নিয়া। তিনি বলেছেন, ইরান যেন তার পারমাণবিক কর্মসূচি পুনরায় চালু করতে না পারে, তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব ইসরাইলের।
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ১২ দিনের যুদ্ধে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) হামলার ছয় মাস পর এ হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি। খবর টাইমস অব ইসরাইলের।
জেরুজালেমে মোসাদের গোয়েন্দা সদস্যদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে বার্নিয়ে বলেন, ইরান এমন মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে, যার কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা নেই—সামরিক পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির লক্ষ্য ছাড়া। সুযোগ পেলেই তারা দ্রুত সেই পথে অগ্রসর হবে।
তিনি আরও বলেন, ইরানের পারমাণবিক প্রকল্পটি বর্তমানে গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় আমাদের দায়িত্ব হলো—এই প্রকল্প যেন আর কখনো সক্রিয় না হতে পারে, তা নিশ্চিত করা।
এ সময় মোসাদ প্রধান ইরানের বিরুদ্ধে পরিচালিত আকস্মিক সামরিক অভিযানের প্রশংসা করেন। তার মতে, এই অভিযানের মাধ্যমে ইরানের ভেতরে ইসরাইলি গোয়েন্দাদের বিস্তৃত অনুপ্রবেশ, তথ্য সংগ্রহ ও কার্যকর সক্ষমতা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
বার্নিয়ে বলেন, এক মুহূর্তেই আয়াতুল্লাহদের শাসন বুঝতে পেরেছে যে, ইরান পুরোপুরি উন্মুক্ত ও অনুপ্রবেশযোগ্য। তবে তা সত্ত্বেও তারা ইসরাইল ধ্বংসের লক্ষ্য থেকে সরে আসেনি।
ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সমাধান নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি। তার ভাষায়, ইরান আবারও বিশ্বকে বিভ্রান্ত করে একটি খারাপ পারমাণবিক চুক্তি বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। আমরা এমন কোনো চুক্তি হতে দেব না।
উল্লেখ্য, পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির অভিযোগ করে আসছে। যদিও ইরান বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে, তবে শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের সীমা ছাড়িয়ে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ, আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের কাজে বাধা এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি সম্প্রসারণের কারণে তেহরানের ওপর চাপ বাড়ছে।
যুদ্ধ শুরুর সময় ইসরাইল দাবি করে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্রায়নের দিকে বাস্তব পদক্ষেপ নিয়েছিল।
ইরানের দাবি অনুযায়ী, গত জুনে সংঘটিত যুদ্ধে ইসরাইলি হামলায় তাদের এক হাজারের বেশি নাগরিক নিহত হন। পাল্টা জবাবে ইরান ইসরাইলের দিকে ৫০০টির বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রায় ১ হাজার ১০০টি ড্রোন নিক্ষেপ করে।
অন্যদিকে, ইসরাইলি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, এসব হামলায় দেশটিতে ৩২ জন নিহত হন এবং তিন হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
বিপি/আইএইচ