চার ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ ফেরত দিয়েছে হামাস


মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির পাশাপাশি এখন পর্যন্ত চারজনের মরদেহ ফেরত দিয়েছে হামাস। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এবং হামাস বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
খবরে বলা হয়েছে, গাজা থেকে হামাসের কাছে থাকা চার নিহত জিম্মির মরদেহ সংবলিত কফিন ইসরায়েল গ্রহণ করেছে। ইসরায়েল অভিযোগ করেছে, হামাস অস্ত্রবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করেছে। কারণ, তারা প্রতিশ্রুত সব মরদেহ ফেরত দেয়নি। হামাস বাকি ২৪ জন নিহত বন্দীর ভাগ্য সম্পর্কে কিছু জানায়নি।
হামাস জানিয়েছে, গতকাল সোমবার তারা গাই ইলোজ, ইয়োসি শারাবি, বিপিন জোশি ও ড্যানিয়েল পেরেজের মরদেহ ফেরত দিয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যায় গাজা উপত্যকায় তাদের সেনারা রেডক্রসের মাধ্যমে চারটি কফিন পেয়েছে, যাতে নিহত বন্দীদের মরদেহ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইসরায়েলি পুলিশ কফিনগুলো তেল আবিবের আবু কাবির ফরেনসিক ইনস্টিটিউটে নিয়ে গেছে, যেখানে মরদেহগুলো শনাক্ত করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
ইসরায়েলের অভিযোগ, হামাস অতীতেও কয়েকবার প্রকৃত বন্দীর বদলে অন্য ব্যক্তির মরদেহ ফেরত দিয়েছে। বিপিন জোশির মৃত্যু ইসরায়েল আগে নিশ্চিত করেনি, তবে তাঁর অবস্থা নিয়ে কর্তৃপক্ষ ‘গভীর উদ্বেগ’ জানিয়েছিল।
ইসরায়েলের চ্যানেল-১২-এর খবরে বলা হয়েছে, সোমবার দ্বিতীয় এক বন্দী তামির নিমরোদির পরিবারকে জানানো হয়, তিনিও মারা গেছেন। তবে এটি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত হয়নি। ‘হোস্টেজ ফ্যামিলিস ফোরাম’ জানিয়েছে, তারা এ বিষয়ে কোনো তথ্য পায়নি। কয়েক দিন ধরে ধারণা করা হচ্ছিল যে নিমরোদি ইতিমধ্যে নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি কর্মকর্তারাও জানিয়েছেন, তাঁরা ২০ জীবিত ও ২৮ নিহত বন্দীর মরদেহ ফেরত পাওয়ার আশা করছেন।
সোমবার এর আগেই হামাস তাদের হাতে থাকা শেষ ২০ জীবিত বন্দীকে ফেরত দেয়। এটি গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা আংশিক প্রত্যাহারের পর এবং উপত্যকার ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ঘটেছে।
বিপিন জোশি নেপাল থেকে ইসরায়েলে যাওয়া কৃষি শিক্ষার্থী ছিলেন। মৃত্যু নিশ্চিত না হলেও ইসরায়েল তাঁর অবস্থা নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছিল। গাই ইলোজ নোভা সংগীত উৎসব থেকে অপহৃত হন এবং পরে গাজার এক হাসপাতালে মারা যান। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।
ড্যানিয়েল পেরেজ (২২) ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ৭৭তম ব্যাটালিয়নের প্লাটুন কমান্ডার ছিলেন। তিনি ইয়াদ বেনিয়ামিন শহরের বাসিন্দা এবং গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের সঙ্গে যুদ্ধে নিহত হন। ইয়োসি শারাবি (৫৩) মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দী এলি শারাবির ভাই। তিনি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর কিব্বুতজ বেইরি থেকে অপহৃত হন এবং পরে বন্দিদশায় নিহত হন।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মরদেহ শনাক্তকরণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে দুই দিন লাগতে পারে।