ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে বন্দি বিনিময় শুরু হচ্ছে


ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে সোমবার (১৩ অক্টোবর) বন্দি বিনিময় চুক্তি শুরু হচ্ছে। আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে গাজায় আটক প্রায় ২০ জন ইসরায়েলি বন্দির বিনিময়ে দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দি বিনিময় হবে। খবর আল জাজিরার।
এদিকে গাজায় যুদ্ধের ইতি টানতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার জন্য একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন সোমবার মিশরে অনুষ্ঠিত হবে। শার্ম আল-শেখে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে যৌথভাবে সভাপতিত্ব করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি। মিশরের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। এই বৈঠকে ২০টিরও বেশি দেশের নেতা অংশ নেবেন।
এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই সম্মেলনের লক্ষ্য হলো, গাজা যুদ্ধের অবসান, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা জোরদার করা এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার নতুন যুগের সূচনা।
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, স্পেনের পেদ্রো সানচেজ এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছেন। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বা ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়।
এমন এক সময় এই ঘোষণা এসেছে যখন গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র-নেতৃত্বাধীন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি উপকূল ধরে উত্তর গাজায় ফিরে যাচ্ছেন। তারা পায়ে হেঁটে, গাড়িতে করে বা গাড়ি টেনে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে ঘরে ফিরছেন। কিন্তু খাদ্য, ওষুধ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সরবরাহ অত্যন্ত ঘাটতি রয়েছে।
গাজার মানুষ এখনো উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, আতঙ্ক আর অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। ইসরায়েলের স্থল অভিযানের কারণে যারা জোরপূর্বক গাজা শহর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছিল, তাদের মধ্যে লাখো মানুষ আবার ফিরে আসছে। দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি আগ্রাসনে পুরো গাজা এক ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
গাজায় ফিরে আসা লোকজন জানাচ্ছেন, তারা জানে যে তারা ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি ভূখণ্ডে ফিরছেন যেখানে কোনো মানবিক সহায়তা নেই, তবুও তারা তাদের নিজস্ব সম্প্রদায়ের সান্নিধ্যে থাকতে চান। তারা বলছেন, সবকিছুর অভাব থাকা সত্ত্বেও তারা টিকে থাকার চেষ্টা করবেন।
এক ধরনের ভয় ও সন্দেহ এখনো বিরাজ করছে এবং তারা যুদ্ধবিরতির সফলতা নিয়ে এখনো পুরোপুরি আস্থাশীল নয়। তবে সহায়তা আসতে শুরু করায় কিছুটা স্বস্তি মিলেছে। যদিও এই সহায়তার পরিমাণ গাজার বিপুল জনগোষ্ঠীর চাহিদা পূরণের জন্য যথেষ্ট নয়।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৬৭ হাজার ৮০৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজার ৬৬ জন আহত হয়েছে। অপরদিকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত এবং প্রায় ২০০ জনকে জিম্মি হিসেবে অপহরণ করা হয়।